পাকিস্তানিদের জন্য ভারতের দুয়ার ‘বন্ধ’

ভারতের সাবেক নৌ-কর্মকর্তা কূলভূষণ জাদবকে কেন্দ্র করে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের পারদ ক্রমশ চড়ছে। সম্প্রতি পাকিস্তানে ভিসা আবেদনের ক্ষেত্রে ‘ধীরে চল’ নীতি গ্রহণ করেছে ভারত। কিন্তু এবার পাকিস্তানিদেরকে আর ভিসা না দেয়ার মতো কঠোর নীতি নিয়েছে ভারত। কেবল মানবিক কারণে জরুরি চিকিৎসার প্রয়োজন হলেই অনুমতি মিলবে ভারত আসার।

নয়াদিল্লির সচিবালয় সূত্রের বরাত দিয়ে পাকিস্তানভিত্তিক ডন নিউজ জানায়, পাকিস্তানিদের ভিসার আবেদন বিচারের প্রক্রিয়া ধীর গতিতে করবে ভারত৷ আজ সোমবার থেকে শুধুমাত্র স্বাস্থ্যগত কারণ ছাড়া আর কোন পাকিস্তানিকে ভিসা দেয়া হবে না।

এ ব্যাপারে ইসলামাবাদের ভারতীয় হাইকমিশনকে কোনও আনুষ্ঠানিক নির্দেশ দেওয়া হয়নি। তবে প্রক্রিয়া ধীর গতিতে করার পরোক্ষ বার্তা দেওয়া হয়েছে৷

ভারতের এই সিদ্ধান্তে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন ক্রীড়াবিদ, অভিনেতা, শিল্পী, গায়ক ও পর্যটকরা। এক্ষেত্রে গুলাম আলি, রাহাত ফতেহ আলি খান, ফাওয়াদ খানদের মতো শিল্পীদের ভারতে আসাও বন্ধ হয়ে যাবে।

এদিকে কূলভূষণের বিরুদ্ধে তৈরি করা চার্জশিট ও রায়ের কপি বেশ কিছুদিন ধরেই চাইছে ভারত৷ সে ব্যাপারে কর্ণপাতও করেনি ইসলামাবাদ৷ বরং জাতিসংঘের মতো আন্তর্জাতিক মঞ্চে কুলভূষণের জঙ্গি কার্যকলাপের তথ্য পেশ করতে চলেছে পাকিস্তান৷

কুলভূষণ নিয়ে চাপানউতোরের জেরে দুইদেশের উপকূলীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত বৈঠক আগেই বাতিল করেছে ভারত৷

নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক নয়াদিল্লির সচিবালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কোনও পন্থাই আমরা বাদ রাখছি না৷দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের অবনতির মধ্যেও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্র, সাহিত্য, খেলার ক্ষেত্রে দুই দেশের সম্পর্ক জারি থাকে৷ এ বার যদি ভিসা সত্যিই প্রায় বন্ধ করা হয়, তা হলে সেসব ক্ষেত্রও প্রভাবিত হতে বাধ্য৷’

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র গোপাল বাগলে জানান, ভারত কূলভূষণের গ্রেপ্তারির বিষয়ে তথ্য চাইছে, তার সঙ্গে দেখা করার জন্য কনস্যুলার অ্যাকসেস চাইছে। এ ব্যাপারে পাকিস্তানের পক্ষ থেকে কোনও জবাব আসেনি৷ সে জন্যই কূটনৈতিক চাপ বাড়াচ্ছে নয়াদিল্লি।

অন্যদিকে পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যমগুলোর দাবি, আন্তর্জাতিক মঞ্চে কূলভূষণের ব্যাপারে নতুন ডসিয়ার পেশের সব প্রস্তুতি শুরু করেছে তারা৷ করাচি ও বালুচিস্তানে গুপ্তচরবৃত্তি ও অন্তর্ঘাতমূলক কাজকর্মের যে সব স্বীকারোক্তি ও বিবৃতি কূলভূষণ ফিল্ড জেনারেল কোর্ট মার্শালে দিয়েছিলেন। নতুন ডসিয়ারে সব উল্লেখ থাকবে৷ কোর্ট মার্শাল জেনারেলের স্বাক্ষরিত প্রতিবেদনও থাকবে৷ সেই সঙ্গে থাকবে আদালতের প্রতিদিনের শুনানির বিবরণ৷ কূলভূষণের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে তল্লাশি চালিয়ে যা যা উদ্ধার হয়েছে এবং যাদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়েছে, তাদের বিবরণও থাকবে।

রাষ্ট্রদূতদের মাধ্যমে ডসিয়ারের প্রতিলিপি ছড়িয়ে দেওয়ার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক মঞ্চেও তা তুলে ধরা হবে৷



মন্তব্য চালু নেই