পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করো : জাফর ইকবাল

পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্ন করার দাবি জানিয়েছেন বিশিষ্ট লেখক ও অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল।

মঙ্গলবার শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাব আয়োজিত তিন দিনব্যাপী ‘সংবাদপত্রে মুক্তিযুদ্ধ’ শীর্ষক আলোকচিত্র প্রদর্শনীর দ্বিতীয় দিনে পরিদর্শন শেষে এক সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভায় তিনি এ দাবি জানান।

অধ্যাপক জাফর ইকবাল বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় দেশে ৩০ লাখ মানুষ মারা গেছে, দুই থেকে চার লাখ নারী নির্যাতনের শিকার হয়েছে।

এ ছাড়া প্রায় এক কোটি মানুষকে দেশ ছেড়ে চলে যেতে হয়েছে। তা পৃথিবীর অনেক দেশই বিশ্বাস করতে চায় না। ওই সময়ে স্বাধীনতার বিরোধীতাকারীদের অনুসারীরা এখনো সক্রিয়। তারা মুক্তিযুদ্ধের বিকৃত ইতিহাস তোমাদের সামনে তুলে ধরে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। সাবধান, তাদের ফাঁদে পা দেবে না। তোমরা তোমাদের সময় এবং শক্তি ব্যয় করবে তোমাদের জন্য এবং পরবর্তী প্রজন্মের জন্য।

জাফর ইকবাল বলেন, তোমরা যদি এই প্রদর্শনীর একদিক দিয়ে প্রবেশ করে অন্যদিক দিয়ে বের হও তাহলে তোমাদের মধ্যে একটি অন্য রকম অনুভূতির সৃষ্টি হবে এবং ওই সময়ের কবে কি হয়েছে তা জানতে পারবে।

এখন থেকে আমাদের একটা আন্দোলন করতে হবে- সেটা হবে প্রথমত পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক রাখবো না আমরা। আর দ্বিতীয় দাবি হবে ১৯৫ জন যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করা।

পাকিস্তান এখন অপরাধ স্বীকার করে না। পাকিস্তান এখনও বলে যাচ্ছে যে একাত্তরে এখানে কোনো কিছু করেনি, এটা এক ধরনের নির্বুদ্ধিতা। ওরা মিথ্যাবাদী। যদি আমরা এ বিষয়টি নিয়ে আন্দেলন শুরু করি, কথা বলতে শুরু করি, তাহলে এদেরও বিচার করা সম্ভব।

তোমরা কত সৌভাগ্যবান তোমাদের পাকিস্তানে জন্ম হয়নি, স্বাধীন বাংলাদেশে জন্ম হয়েছে। তোমাদের পরাধীনতা ভোগ করতে হয়নি।

আলোচনা সভায় অধ্যাপক জাফর ইকবালের স্ত্রী ড. ইয়াসমিন হক বলেন, যতবার বঙ্গবন্ধুর ছবি দেখি এবং ভাষণগুলো শুনি তখনই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আমাদের মাঝে নতুন করে জেগে ওঠে।

মুক্তিযুদ্ধের সময়কার সংবাদগুলো নিয়ে এই আয়োজনকে যুগান্তকারী উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমার ইচ্ছে করছে সময় নিয়ে পুরোটা পড়ি। তোমরা যারা তরুণ, দেশকে ভালবাসো তোমার অবশ্যই এই প্রদর্শনী থেকে আরো বেশি অনুপ্রাণিত হবে।

এসময় উপস্থিত ছিলেন মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ শিক্ষকবৃন্দ ফোরামের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. সামসুল আলম, শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আবদুল গণি, শিক্ষক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ফারুক উদ্দিন প্রমুখ।

উল্লেখ্য, গতকাল সোমবার থেকে তিন দিনব্যাপী এ আলোকচিত্র প্রদর্শনী শুরু হয়। প্রদর্শনী চলবে বুধবার রাত ৮টা পর্যন্ত।

প্রদর্শনীতে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় দেশী-বিদেশী বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ এবং সাংবাদিকদের ভূমিকা সম্বলিত ৩৩টি আলোকচিত্র স্থান পেয়েছে।



মন্তব্য চালু নেই