পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নদীবন্দর আধুনিকায়নে ২৯৪ কোটি টাকার প্রকল্প

রাজধানী ঢাকার সঙ্গে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন ও বাণিজ্য বাড়াতে আধুনিকায়ন করা হচ্ছে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নদীবন্দর। এ জন্য ২৯৩ কোটি ৮৮ লাখ টাকার একটি প্রকল্প হতে নিচ্ছে সরকার।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে ঘাটটিতে যাত্রীসেবা এবং পরিবহন ব্যবস্থা উন্নত হবে। এছাড়া নৌ-কেন্দ্রিক পর্যটন সুবিধা বৃদ্ধির মাধ্যমে আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন এবং আঞ্চলিক উপ-আঞ্চলিক ব্যবসা বাণিজ্যের সম্প্রসারণ ও সমৃদ্ধ করা সম্ভব হবে। পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে এসব তথ্য জানান গেছে।

সম্প্রতি এ সংক্রান্ত এক প্রকল্প প্রস্তাব নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের আওতায় বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) পরিকল্পনা কমিশনে পাঠিয়েছে। গত ২৬ জানুয়ারি প্রকল্পটির ওপর প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়। এখন অনুমোদনের প্রক্রিয়া চলছে।

প্রক্রিয়াকরণ শেষে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে অনুমোদন পেলে চলতি বছর থেকে ২০১৯ সালের জুনের মধ্যে বাস্তবায়নের কাজ শেষ করবে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের আওতায় বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)।

এ প্রসঙ্গে পরিকল্পনা কমিশনের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা জানান, পাটুরিয়া ও দৌলতদিয়ায় আনুষাঙ্গিক সুবিধাদিসহ নদীবন্দর আধুনিকায়ন শীর্ষক প্রকল্প প্রস্তাব পরিকল্পনা কমিশনে এসেছে। প্রকল্পটি মানিকগঞ্জ জেলার শিবালয় উপজেলার পাটুরিয়া ফেরিঘাট এবং রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলততিয়া ফেরিঘাটে বাস্তবায়ন করা হবে বলে বলা হয়েছে। তিনি বলেন, এখন কাজ চলছে। প্রক্রিয়া শেষ করে প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের জন্য উপস্থাপনের সুপারিশ করা হবে।

নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌ-পথ ঢাকার সঙ্গে সড়ক পথে দেশের পুরো দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে যোগাযোগর অন্যতম মাধ্যম। এই নৌ-পথ দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার যাত্রীবাহী ও মালবাহী যানবাহন পারাপার হয়ে থাকে। এ রুটে প্রতিদিন ১৮টি ফেরি চলাচল করে। নির্বিঘ্নে ফেরি চলাচল ও যানবাহন পারাপারের জন্য পাটুরিয়া এবং দৌলতদিয়া প্রান্তে যানবাহন ও যাত্রীদের সব ধরনের নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। এ লক্ষ্যে একটি সমীক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়।

পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানায়, প্রকল্পটির আওতায় ১২৭ একর জমি অধিগ্রহণের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে পরিকল্পনা কমিশন। এজন্য আলোচনা করতে প্রকল্প প্রকিয়াকরণ সংক্রান্ত পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের পরিপত্র অনুযায়ী অধিগ্রহণযোগ্য ভূমির তফসিল, এলকার বর্ণনা ও গুরুত্ব, সমকালীন বাজার দর ইত্যাদি বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ভূমি অফিস বা রেজিস্ট্রারের অফিস বা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় হতে সংগ্রহ করে ডিপিপিতে অন্তর্ভুক্ত করার তাগিদ দেয়া হয়েছে।

এছাড়া প্রকল্পের উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবে (ডিপিপি) জনবলের সরাসরি কোনো কর্মসংস্থান না থাকলেও অ্যালাউন্স বাবদ ১৫ লাখ টাকা রাখার প্রস্তাব, প্রকল্পের আওতায় ফার্নিচার বাবদ ১ কোটি ৫০ লাখ টাকার সংস্থান এবং প্রকল্পের বিভিন্ন অঙ্গের বিবরণ, একক নির্ধারণ ও ব্যয় নির্ধারণের ভিত্তি সম্পর্কে আলোচনা করার পক্ষে মত দিয়েছে পরিকল্পনা কমিশন।

প্রকল্পের আওতায় প্রধান কার্যক্রমগুলো হচ্ছে, জমি অধিগ্রহণ, ভূমি উন্নয়ন, আধুনিক সুবিধাদি সম্বলিত মাল্টিস্টোরেড টার্মিনাল বিল্ডিংসহ অন্যান্য স্থাপনাদি নির্মাণ, ফেরিঘাট তৈরি, আরসিসি পার্কিং ইয়ার্ড, অভ্যন্তরীণ রোড এবং ফেরিঘাট এপ্রাচ, ড্রেনেজ সিস্টেম, বাউন্ডারি ওয়াল ও ফেন্সিংওয়াল, ফেরি ঘাট সংলগ্ন নদীর তীর রক্ষা, স্টিল জেটি, ফেরি ঘাট কানেকটিং রোড এবং ইকো-পার্ক ও পে-গ্রাউন্ডসহ অন্যান্য সুবিধাদি তৈরি করা হবে।



মন্তব্য চালু নেই