পাত্র সৌদি আরবের, পাত্রী রাশিয়ার আর বিয়ে হিন্দু রীতিতে

হিন্দু প্রথায় বিয়ে তাঁদের এতটাই ভালো লেগেছে যে নিজেদেরটা সারতে আর দেরি করলেন না। ধর্ম আর সংস্কৃতির বাধা ভেঙে চিরাচরিত হিন্দু প্রথায় বিয়ে করলেন সৌদি আরবের এক যুবক ও তাঁর রুশ প্রেমিকা।

বৃহস্পতিবার গুজরাটের সুরাটে এ বিয়ে সম্পন্ন হয়। বর ও কনে দুজনেরই বন্ধু স্থানীয় বাসিন্দা কিষাণ ঢোলিয়া বিয়ের আয়োজন করেন।

সংবাদমাধ্যম ডেকান ক্রনিকল জানায়, কৃষাণ ঢোলিয়ার বিয়ের অনুষ্ঠানে অংশ নিতে কিছুদিন আগে গুজরাটে আসেন হামিদ আল হামাদ এবং জুলিয়ানা স্মিরনফ। এ সময় ভারতের হিন্দু বিয়ের বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতা ভীষণ ভালো লেগে যায় তাঁদের। এরপর তাঁরা সিদ্ধান্ত নেন এই রীতি আর প্রথা মেনেই নিজেরা বিয়ে করবেন।

যেই ভাবা সেই কাজ। ভারতীয় হিন্দু বিয়ের নানা আচার-অনুষ্ঠান পালন করেই বিয়ে সেরেছেন এই মুসলিম যুবক ও তাঁর রুশ প্রেমিকা। এ বিষয়ে কিষাণের আত্মীয় মনসুখ দেশাই বলেন, ‘তাঁরা এখানে শুধু কিষাণের বিয়েতে অতিথি হয়ে এসেছিলেন। যেহেতু এটাই ছিল তাঁদের প্রথম ভারত সফর তাই তাঁরা বিয়ের বিভিন্ন রীতি-নীতি সম্পর্কে জানতে বেশ আগ্রহী ছিলেন। আমরা তাঁদের প্রতিটি আচারের কারণ ও গুরুত্ব বুঝিয়ে বলেছিলাম।’

কিষাণের বিয়েতে পুরোহিতের উচ্চারণ করা মন্ত্রের অর্থও তাদের বুঝিয়ে বলা হয় বলে জানান মনসুখ। এসব আচার-রীতি এবং মন্ত্রপাঠ দীর্ঘ দাম্পত্তের জন্য কতটুকু গুরুত্বপূর্ণ সেটিও জানানো হয় হামিদ-জুলিয়ানাকে। রীতি-নীতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানার পরই তাঁরা দুজন সিদ্ধান্ত নেন বিয়ে করলে ভারতীয় হিন্দু বিয়ের রীতি অনুযায়ীই করবেন।

পেশায় হামিদ একজন সফটওয়্যার প্রকৌশলী এবং জুলিয়ানার টেক্সটাইলের ব্যবসা করেন। গত কয়েকবছর ধর পেশাগত কারণেই চীনে বাস করেন তাঁরা। সেখানেই পরিচয় হয় ভারত থেকে উচ্চশিক্ষার্থে যাওয়া কিষাণের সঙ্গে।

কিষাণের বিয়েতে আতন্ত্রিত হয়ে প্রথমবারের মতো ভারতে আসে হামিদ-জুলিয়ানা জুটি। এরপর ভারতের সংস্কৃতির প্রেমে পড়ে যান দুজনেই।

হামিদ বলেন, ‘ভারতের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। শত বছর ধরে চলে আসা এমন সব মূল্যবোধকে অস্বীকার করা যায় না। আমি আর জুলিয়ানা খুব দ্রুত সিদ্ধান্ত নিই যে এসব নিয়ম মেনেই বিয়ে করব।’

ঐতিহ্যবাহী ভারতীয় পোশাক পরা তাঁর অনেকদিনের স্বপ্ন ছিল বলে জানান জুলিয়ানা। তিনি বলেন, ‘যদিও এসব পোশাক কিছুটা ভারী কিন্তু এগুলো ভীষণ সুন্দর। এখানে বিয়ে করতে পেরে আমি খুবই খুশি।’

বিয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর হামিদ-জুলিয়ানা জুটি তা জানায় কিষাণকে। এরপর কিষাণ ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা মিলেই সব আয়োজন করে। সুরাটে কিষাণের আত্মীয়স্বজনদের উপস্থিতিতেই সম্পন্ন হয় হামিদ-জুলিয়ানার বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা।

বিয়ের দিন জুলিয়ানা যেমন পরেছিলেন ভারতের ঐতিহ্যবাহী বিয়ের পোশাক শাড়ি তেমনি হামিদের পরনেও ছিল শেরওয়ানি।



মন্তব্য চালু নেই