পানামাকে উড়িয়ে কোয়ার্টারে আর্জেন্টিনা

আগের ম্যাচে মেসি ছিলেন না। চিলির বিপক্ষে ওই ম্যাচে ২-১ গোলে জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছিল মেসিহীন আর্জেন্টিনা। ১ ম্যাচ হাতে রেখেই কোয়ার্টারে যেতে হলে পানামার বিপক্ষে জয় ছিল প্রয়োজনীয়। শিকাগোর সোলজার ফিল্ড স্টেডিয়ামে মেসিকে প্রথমার্ধে মাঠে নামাননি কোচ জেরার্ডো মার্টিনো।

দ্বিতীয়ার্ধের ১৬ মিনিট চলে যাওয়ার পর মাঠে নামানো হয় তাকে। খেলেন মাত্র ২৯ মিনিট। এরই মধ্যে করে ফেললেন দুর্দান্ত এক হ্যাটট্রিক। তাতেই পানামাকে ৫-০ গোলে উড়িয়ে দিয়ে কোপা আমেরিকার শতবর্ষের উৎসবে কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করে ফেলেছে আর্জেন্টিনা। ২ ম্যাচে ২ জয়ে তাদের পয়েন্ট ৬। ৩ পয়েন্ট করে নিয়ে দ্বিতীয় এবং তৃতীয় স্থানে রয়েছে চিলি এবং পানামা।

পিঠের ব্যাথার কারণে প্রথম একাদশে মেসিকে দলে রাখা হয়নি। আর্জেন্টিনাও সেভাবে জ্বলে উঠতে পারছিল না যেন। শুধু খেলার শুরুতে (৭ মিনিটে) নিকোলাস ওতামেন্দির গোলে এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা। ফ্রি কিক নিয়েছিলেন অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া। ওই কিক থেকে ভেসে আসা বলে দুর্দান্ত এক হেড নেন ওতামেন্দি। সেটিই জড়িয়ে যায় পানামার জালে।

এরপর প্রতিপক্ষের জাল আর খুঁজে পায়নি আগুয়েরো, হিগুয়াইনদের নিয়ে গড়া আর্জেন্টাইন আক্রমণভাগ। যদিও প্রথম গোলের পরের মিনিটেই গঞ্জালো হিগুয়াইনের একটি দুর্দান্ত শট ঠেকিয়ে দেন পানামার গোলরক্ষক জেমি পেনেডো। ১৮ মিনিটে গোলের হুমকিতে পড়েছিল আর্জেন্টিনাও। রোডিরিক মিলারের দারুন একটি হেড একেবারে বার ঘেঁষে বাইরে চলে যায়।

খেলার ৩১তম মিনিটেই ১০ জনের দলে পরিণত হয় পানামা। বাজে ফাউলের জন্য ম্যাচে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে ফেলেন আনিবাল গুডোয়। দুটি হলুদ কার্ড সমান লাল কার্ড দেখে মাঠ থেকেই বহিস্কার হয়ে গেলেন তিনি। আর্জেন্টিনার প্রবল আক্রমনের মুখে ১০ জনের দলে পরিণত হয়ে পানামা বলতে গেলে খেই হারিয়ে ফেলেন। তবুও প্রথমার্ধের পরবর্তী সময়, কিংবা দ্বিতীয়ার্ধে মেসি মাঠে নামার আগ পর্যন্ত আর্জেন্টাইনদের ঠেকিয়ে রেখেছিল পানামা।

তবে সব বাধ ভেঙে যায় মেসি মাঠে নামার পরই। মাত্র ২৯ মিনিট খেললেন মেসি। তাতেই হ্যাটট্রিক করে ফেললেন। মেসি মাঠে নামেন ৬১ মিনিটে। মাঠে নামার পরই গোল উৎসবে মাতেন গ্রহের সেরা ফুটবলার। মাঠে নামার ৭ মিনিট পরই তার পা থেকে আসে প্রথম গোল। গঞ্জালো হিগুয়াইনের কাছ থেকে বল পেয়ে বক্সের বাম পাশ থেকে বাম পয়ের দুর্দান্ত এক শটে প্রতিপক্ষের জাল কাঁপিয়ে দেন তিনি।

দ্বিতীয় গোল করতে আরও ১০ মিনিট সময় নেন বার্সেলোনা তারকা। এবার নিলেন এক ট্রেডমার্ক সেট পিচ কিক। ডি বক্সের সামনে ফ্রি কিক পেয়ে যায় আর্জেন্টিনা। বাম পায়ে সেই শটটি নেন মেসি। পোস্টের একেবারে ডান কোন ঘেঁষে বলটি জড়িয়ে যায় পানামার জালে।

এর আরও ৯ মিনিট পর, অর্থ্যাৎ খেলা শেষ হওয়ার তিন মিনিট আগে হ্যাটট্রিকের আনন্দে ভাসেন মেসি। মার্কোস রোহোর পাস থেকে বল পেয়ে বাম পায়ের আরও একটি শট নেন মেসি। এবারও সোজা গিয়ে পানামার জাল কাঁপিয়ে দেয় সেটি।

মেসির হ্যাটট্রিকে পানামা এমনিতেই কাঁপছিল। তার ওপর তাদের পরাজয়ের কফিনে শেষ পেরেক ঠোকা যেন বাকি রয়ে গিয়েছিল। খেলার শেষ বাঁশি বাজার কয়েক মুহূর্ত আগে গোল করে বসলেন সার্জিও আগুয়েরো। হেড করে পাস দেন মার্কোস রোহো। তার হেড পাস থেকে আবারও হেড করেন আগুয়েরো। সেটি গিয়ে জড়িয়ে যায় পানামার জালে। ৫ গোল পূর্ণ করেই তবে মাঠ ছাড়ে আর্জেন্টিনা।

আর্জেন্টিনা জাতীয় দলের হয়ে চতুর্থবারের মতো হ্যাটট্রিক করলেন মেসি। এছাড়া এই নিয়ে আর্জেন্টিনার হয়ে তার গোল সংখ্যা দাঁড়ালো ৫৩টিতে। আর মাত্র ৩ গোল হলেই তিনি গ্যাব্রিয়েল বাতিস্তুতাকে ছুঁয়ে ফেলবেন। চারটি করতে পারলে হয়ে যাবেন আর্জেন্টিনার হয়ে সর্বোচ্চ গোলদাতা।



মন্তব্য চালু নেই