ফেরৎ হাজিদের বর্ণনা

পানির জন্যই বেশি হাজি মারা গেছেন

মিনায় পদদলিত হয়ে হাজির মৃত্যুর ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন প্রথম ফ্লাইটে ফিরে আসা হাজিরা। তাদের ধারণা বেশিরভাগ মানুষ মারা গেছেন পানির জন্য হাহাকার করে। সেইসেঙ্গে তারা সৌদি নিরাপত্তা কর্মীদেরও কঠোর সমালোচনা করেছেন।

ফেরত আসা হাজিদের মধ্যে এক নারী হাজি জানান, আমাদের একটু পানির জন্য কী যে কষ্ট হয়েছে। আমাদের একটু পানি দেয়া হয়নি। মানুষ যারা মারা গেছেন বেশিরভাগই পানির জন্য।

অন্য আরেক হাজি বলেন, ‘সৌদি নিরাপত্তাকর্মীরা হাজিদের সঙ্গে যে আচরণ করছে তা গ্রহণেযোগ্য নয়। আমাদের সামনেই নিহত হাজিদের পা-দিয়ে দেখছে মরে গেছে নাকি বেঁচে আছে।’

৭ ঘণ্টা ১০ মিনিট বিলম্বে অবতরণ করলো প্রথম ফিরতি হজ ফ্লাইট। জেদ্দায় কিছু জটিলতার কারণে নির্দিষ্ট সময়ে প্রথম ফ্লাইটটি ঢাকায় অবতরণ করতে পারেনি। বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ছাড়াও সৌদি এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটও ৪শ হাজি নিয়ে ঢাকায় পৌঁছেছে।

জানা গেছে, ৩ শতাধিক হাজি নিয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট বিকেল সাড়ে ৪টায় শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে অবতরণ করে। সৌদি আরব থেকে হাজিদের নিয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের প্রথম ফ্লাইটটি আজ সোমবার সকাল ৯টা ২০ মিনিটে অবতরণ করার কথা ছিল।

এদিকে বিলম্বের কারণে আজ সবগুলো ফ্লাইটের শিডিউল পরিবর্তন করতে হয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে হাজিদের স্বজনদের। অনেকে সকাল থেকে গাড়ি নিয়ে অপেক্ষা করছেন স্বজনদের নিয়ে যাওয়ার জন্য। হাজিদের নিয়ে যেতে বিমানবন্দরের বাইরে বেশ কয়েকটি গাড়ি অপেক্ষা করছে সকাল থেকে।

তবে মক্কা ও মিনায় দুর্ঘটনার পর হাজিরা যে জীবন নিয়ে ফিরে আসতে পেরেছেন তাতেই খুশি তাদের স্বজনেরা। হাজিদের নিয়ে বিমানের ফ্লাইট আগামী ২৮ আক্টোবর পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে।

১ লাখ ৭ হাজার ২৯০ হজযাত্রীর মধ্যে জাতীয় পতাকাবাহী বাংলাদেশ বিমান ঢাকা- জেদ্দার মধ্যে ১৪০টি ফিরতি ফ্লাইট পরিচালনা করে ৫৪ হাজার ৮৪৫ হজযাত্রী বহন করবে। এরমধ্যে নির্ধারিত ৩১টি ফ্লাইটসহ ১০৯টি বিশেষ ফ্লাইট রয়েছে। বাকি হজযাত্রীরা সৌদি এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটে দেশে ফিরবেন বলে জানা গেছে।

বিমান বাংলাদেশ এয়ালাইন্স ১৬ আগস্ট থেকে ১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ঢাকা- জেদ্দার মধ্যে সরাসরি ১৫২টি ফ্লাইট পরিচালনার মাধ্যমে ৫৪ হাজার ৮৪৫ হজযাত্রী বহন করে।

মক্কায় হজ পালন করছেন সারাবিশ্বের ২০ লাখের বেশি মুসলিম। বাংলাদেশসহ ১৫০টির বেশি দেশ থেকে এবার প্রায় ২০ লাখ মানুষ হজ পালন করছেন। এর মধ্যে বাংলাদেশ থেকে এসেছেন ১ লাখ ৬ হাজারের বেশি। এবার হজ মৌসুমের শুরুর দিকেই মক্কার কাবা শরিফ ঘিরে থামা মসজিদ আল-হারামে একটি ক্রেইন উল্টে পড়ে ১১৭ জনের মৃত্যু হয়, যাদের মধ্যে একজন বাংলাদেশি আছেন। এরপর দ্বিতীয় দফায় গত ২৫ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় দুর্ঘটনাটি ঘটে। মিনায় ‘শয়তানের স্তম্ভে’ পাথর ছুড়তে যাওয়ার পথে পদদলনে মৃত্যু হয় ৭৬৯ জনের। আহত হন আরো ৯৩৪ জন।

রোববার পর্যন্ত নিহতদের মধ্যে ৬৫০ জনের ছবি সৌদি সরকার প্রকাশ করেছে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশি ১০ জনের খবর নিশ্চিত বলে নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বাংলাদেশি হাজিদের ফিরিয়ে আনতে আগামী ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত বিমান হজ ফ্লাইট পরিচালনা করবে।



মন্তব্য চালু নেই