পানির ১২টি উৎসের সৃষ্টি আল্লাহর অনুগ্রহ

তীহ প্রান্তরে বনি ইসরাইল জাতি প্রচণ্ড তৃষ্ণার্ত হয়ে মুসা আলাইহি সালামের নিকট পিপাসার কষ্টের কথা প্রকাশ করেন। তখন তিনি আল্লাহ তাআলার নিকট তাঁর জাতির পানির তৃষ্ণা মেটাতে পানির জন্য আবেদন করেন। আল্লাহ তাআলা পানির উৎসের ব্যাপারে হজরত মুসা আলাইহিস সালামকে যে নির্দেশ দিয়েছিলেন, তা কুরআনে উল্লেখ করা হয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন- এবং (সে সময়কে স্মরণ কর) যখন (হজরত) মুসা (আলাইহিস সালাম) তাঁর জাতির জন্য পানির আবেদন পেশ করলেন, তখন আমি বলেছিলাম, তুমি স্বীয় লাঠি দ্বারা পাথরকে আঘাত কর। তখনই পানি প্রবাহিত হলো বারটি প্রসবণ, প্রতিটি সম্প্রদায় চিনে নিল তাদের নিজ নিজ পান করার স্থান। (তখন আমি উপদেশ দিলাম) তোমরা আল্লাহর দান থেকে আহার কর এবং পান কর, আর পৃথিবীতে অশান্তি সৃষ্টি করো না। (সুরা বাক্বারা : আয়াত ৬০)

এ আয়াতে আল্লাহ তাআলা মুসা আলাইহিস সালামের জাতিকে প্রচণ্ড তাপ ও কষ্টের সময় পানি দিয়ে তৃষ্ণার কষ্ট থেকে হিফাজত করেছেন তা উল্লেখ করেন। মুসা আলাইহিস সালাম যখন পানির জন্য আবেদন করেন, তখন আল্লাহ তাআলা তাঁকে নির্দেশ দেন যে, লাঠি দ্বারা পাথরে আঘাত করার জন্য। আল্লাহর হুকুম অনুযায়ী মুসা আলাইহিস সালাম যখন তাঁর লাঠি দ্বারা একটি বিশেষ পাথরে আঘাত করলেন, তখন আল্লাহ তাআলা মুসা আলাইহিস সালামের জন্য মুযিজা স্বরূপ বনি ইসরাইলের ১২টি গোত্রের জন্য ১২টি নির্ঝর প্রবাহিত করে দিলেন। যা ছিল আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে বনি ইসরাইল জাতির জন্য এক মহা অনুগ্রহ।

বনি ইসরাইলদের ১২টি গোত্র হওয়ার কারণ হলো- হজরত ইয়াকুব আলাইহিস সালামের সন্তান সংখ্যা ছিল ১২ জন। আর প্রত্যেক সন্তানেরই বংশধরগণ সামাজিক ব্যবস্থায় বিভিন্ন গোত্রে বিভিক্ত ছিল এবং প্রত্যেক গোত্রের দলপতি নির্দিষ্ট ছিল। আল্লাহ তাআলার বিশেষ দান স্বরূপ পানির প্রসবণের স্থান সমূহ তারা চিনে নেয়। এবং তাদেরকে পৃথিবীতে কোনো রকম অশান্তি-বিশৃংখলা সৃষ্টি কতে নিষেধ করেন। পরিশেষে… এ আয়াত উম্মাতে মুহাম্মাদির জন্য দৃষ্টান্ত। আল্লাহ তাআলা কত মহান যে, মানুষের জন্য সমগ্র দুনিয়াকেই ফুল-ফল, নদ-নদী, আলো-বাতাস সব কিছুতেই একটি ভারসাম্য তৈরি করে দিয়েছেন। সুতরাং বান্দার জন্য শিক্ষা হচ্ছে- অবনত মস্তকে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করা, কোনো বিশৃংখলা ও অশান্তি সৃষ্টি না করা। আল্লাহ তাআলা যেন মুসলিম উম্মাহকে শুকরিয়া স্বরূপ তাঁর হুকুম-আহকাম পালন করার তাওফিক দান করেন।



মন্তব্য চালু নেই