পাবনার ঈশ্বরদীতে ৪৪ বছরেও মুক্তিযোদ্ধার নাম তালিকাভুক্ত হয়নি

দেশ স্বাধীনের ৪৪ বছরেও পাবনার ঈশ্বরদীর শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ডা. রফিউদ্দিনের নাম শহীদ মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়নি। ফলে তাঁর বৃদ্ধ স্ত্রী টুনা বেগম (৮০) ছেলে-মেয়েদের নিয়ে নানা কষ্টে দিন যাপন করলেও সরকারি সুযোগ সুবিধা প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত রয়েছেন। মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী বরাবর স্ত্রী টুনা বেগমের লেখা আবেদন পত্র সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সূত্র মতে, ৪৪ বছর পূর্বে দেশ স্বাধীনের জন্য মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে ঈশ্বরদী পিয়ারাখালীর মৃত মজিম উদ্দিনের ছেলে ডা. রফিউদ্দিন সক্রিয় ভাবে পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে মুজিব বাহিনীর অধীনে ৭ নম্বর সেক্টরে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। ১৯৭১ সালের ১২ এপ্রিল পাকবাহিনীর আক্রমন প্রতিরোধ করতে গিয়ে সম্মুখ যুদ্ধে পাকবাহিনীর গুলিতে শহীদ হন। এর পর থেকেই শহীদ ডা. রফিউদ্দিনের পরিবারে নেমে আসে আর্থিক অনটন।

পরিবারের এক মাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তির মৃত্যুর ফলে স্ত্রী টুনা বেগম পাঁচ ছেলে মেয়েকে নিয়ে পড়েন অভাবের অথৈই সাগরে। এভাবে পার হয়ে গেছে স্বাধীনতার ৪৪ বছর। বৃদ্ধ টুনা বেগম দ্বারে দ্বারে ঘুরেও তার স্বামী শহীদ ডা. রফিউদ্দিনের নাম শহীদ মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন নি।

যদিও নিয়ম অনুযায়ি স্থানীয় এমপি ও বর্তমান ভূমি মন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ, স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা সংসদের বর্তমান ও সাবেক কমান্ডারদের মধ্যে আব্দুর রাজ্জাক, আতিয়ার রহমান, আনিসুর রহমান এবং ঈশ্বরদী পৌর মেয়র মকলেছুর রহমান বাবলু টুনা বেগমকে তার স্বামী ডা. রফিউদ্দিন মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে পাকবাহিনীর সাথে সম্মুখ যুদ্ধে অংশ গ্রহন কালে পাকবাহিনীর গুলিতে শহীদ হয়েছেন মর্মে পৃথক প্রত্যায়ন পত্র দিয়েছেন।

শহীদ মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্তির জন্য পৃথক অনলাইন ডাটাবেজ পূরন করেও আবেদন করা হয়েছে। যার সিরিয়াল নং-(ফম১০০০৫২)। এরপরও শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ডা. রফিউদ্দিনের নাম শহীদ মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়নি।

শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ডা. রফিউদ্দিনের স্ত্রী টুনা বেগম সাংবাদিকদের জানান, দেশ মাতৃকা রক্ষায় আমার স্বামী শহীদ হয়েছেন।

এরপর থেকেই আমি ছেলে মেয়েদের নিয়ে অনেক কষ্টে দিন যাপন করে যাচ্ছি। আমি চাই মৃত্যুর পূর্ব মূহূর্তে আমার স্বামীকে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে সরকারি ভাবে স্বীকৃতি প্রদান করা হোক। এটি আমার মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী একজন নারী হিসেবে এই স্বীকৃতি পেলে আমি মৃত্যুর পরও আত্বতৃপ্তি পাবো।

প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিদের সহায়তা কামনা করে তিনি আরও জানান, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী আওয়ামীলীগ সরকার প্রধান ও বঙ্গবন্ধু কণ্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতায় থাকায় তার স্বামী ডা. রফিউদ্দিনের নাম শহীদ মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় অর্ন্তভুক্ত হবে বলেও তিনি বিশ্বাস করেন।



মন্তব্য চালু নেই