‘পিপিপি বিল শিগগিরই আইনে রূপ নেবে’

সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব-পিপিপির প্রকল্প বাস্তবায়নে তেমন উল্লেখযোগ্য উদাহরণ নেই মন্তব্য করে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত জানিয়েছেন, ইতিমধ্যে সংসদে উত্থাপিত পিপিপি বিল শিগগিরই আইনে রূপ নেবে।

এর ফলে পিপিপি কার্যক্রমের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা দূর হবে এবং বেসরকারি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহও বাড়বে বলে মনে করেন তিনি।

বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদ ভবনে ২০১৫-১৬ অর্থবছরের বাজেট উপাস্থাপনের সময়ে তিনি এ কথা জানান।

অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘গত ছয়টি বছরই আমি অনেক বক্তব্য রেখেছি। কিন্তু এই ক্ষেত্রে প্রকল্প বাস্তবায়নে তেমন উল্লেখযোগ্য উদাহরণ নেই। স্বীকার করতেই হবে যে, পদ্ধতিগত প্রস্তুতি আমাদের দুর্বল ছিল। তবে আশার বিষয় হলো যে, বিনিয়োগকৃত সম্পদ হতে প্রাপ্তি নিশ্চিত করা এবং প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর সক্ষমতা বাড়াতে আমরা ইতোমধ্যে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব বিল ২০১৫ জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করেছি। আশা করছি, এটি শীঘ্রই আইনে রূপ নেবে।’

তিনি বলেন, ‘এসব উদ্যোগ ছাড়াও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় নানা সংস্কার পিপিপি কার্যক্রমের ক্ষেত্রে গতিশীলতা আনবে বলে আমি মনে করি। আশার কথা হলো, পিপিপি’র আওতায় ইতোমধ্যে ৪২টি পকল্প নীতিগতভাবে অনুমোদিত হয়েছে। এর মধ্যে ৩টি প্রকল্পের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। অন্য দুটি প্রকল্পের চুক্তি শিগগিরই স্বাক্ষরিত হবে। অনুমোদিত ২৪টি প্রকল্পে পরামর্শক নিয়োগ করা হয়েছে।’

প্রসঙ্গত, পিপিপি হচ্ছে দীর্ঘমেয়াদি অংশীদারি ব্যবস্থা, যেখানে জনগণকে সেবা দেওয়ার উদ্দেশ্যে বেসরকারি খাত বিনিয়োগ করে। এতে সরকারের সঙ্গে বেসরকারি খাতের চুক্তি হয়। নির্মাণ, মালিকানা, পরিচালনা ও হস্তান্তর (বিওওটি); নির্মাণ, পরিচালনা ও হস্তান্তর (বিওটি) এবং নির্মাণ, মালিকানা ও পরিচালনা এই তিনটি পিপিপি পদ্ধতি বেশি প্রচলিত।

ব্যক্তিখাতে বিনিয়োগের প্রতিবন্ধকতা অপসারণ: অর্থমন্ত্রী তার বক্তব্যে বলেন, ব্যক্তিখাতে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বিনিয়োগকারীগণ নানা ধরনের সমস্যার কথা বলে থাকেন, যার মধ্যে রয়েছে উপযোগ সেবাসমূহ যেমন বিদ্যুৎ, গ্যাস প্রাপ্তিতে বিলম্ব, বিনিয়োগ প্রক্রিয়াকরণে প্রাতিষ্ঠানিক জটিলতা, নিষ্কণ্টক জমির অভাব, ঋণের উচ্চ সুদের হার ইত্যাদি।

এসব বাধা অপসারণে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমার বিশ্বাস, পরিকল্পনা অনুযায়ী বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ও সরবরাহে যে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে তাতে বিদ্যুৎ সমস্যা আর থাকছে না। গ্যাসের সমস্যা নিরসনে সমুদ্র অঞ্চলে ২৬টি ব্লকে অনুসন্ধান শুরুর লক্ষ্যে উৎপাদন-বণ্টন-চুক্তি স্বাক্ষরের প্রক্রিয়া চলছে।’

অর্থমন্ত্রী বলেন, এর পাশাপাশি, আমরা এলএনজি আমদানির উদ্যোগ নিয়েছি। প্রাতিষ্ঠানিক উন্নয়নের লক্ষ্যে বিনিয়োগ বোর্ড ও প্রাইভেটাজেশন কমিশন একীভূতকরণের কাজ দ্রুত শেষ করার আশা রাখি। নতুন এই প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোকে সত্যিকার অর্থেই ‘ওয়ান স্টপ’ সেবা প্রদানের উপযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলা হবে এবং দক্ষ ও মেধাবী কর্মকর্তাদের পদায়নেরও ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বিনিয়োগের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্প প্রতিষ্ঠানের অতিরিক্ত জমি লিজ/বিক্রি/পিপিপিভিত্তিক ব্যবহার বিষয়েও চিন্তা-ভাবনা করছেন উল্লেখ করে মুহিত বলেন, ভূমি ব্যবস্থাপনা, রেকর্ড ও রেজিস্ট্রেশন পদ্ধতি আধুনিকায়নের কার্যক্রম দ্রুততর করা হবে। আর্থিক খাতে সংস্কার কার্যক্রম গ্রহণের ফলে ইতোমধ্যেই ঋণের সুদের হার কমতে শুরু করেছে। বিদেশ হতে স্বল্পসুদে ঋণগ্রহণের সুযোগও থাকছে।

এসব উদ্যোগ বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে বিনিয়োগের পরিবেশ উন্নততর হবে এবং ব্যক্তিখাতে বিনিয়োগের লক্ষ্য অর্জনও সম্ভব হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন অর্থমন্ত্রী।



মন্তব্য চালু নেই