পৃথিবীর যত বুদ্ধিমান জীবজন্তু

এই পৃথিবীর অধিপতি হচ্ছে মানুষ, কারণ মানুষই পৃথিবীর সবচেয়ে বুদ্ধিমান প্রাণী। অন্য প্রাণীরা বিজ্ঞানী হওয়ার মত বুদ্ধিমান না ঠিকই কিন্তু তাই বলে তাঁরা প্রতিভাশূন্য নয়। প্রতিটা প্রাণীরই নিজস্ব কিছু বৈশিষ্ট্য থাকে, যেমন- ভেড়া জানে কিভাবে নিজেকে নিরাময় করতে হয়, মৃত ব্যক্তির আচার অনুষ্ঠানের জন্য হাতিকে আনা হয়। এই পৃথিবী গোপন প্রতিভাধর রত্নে পরিপূর্ণ। আমাদের চারপাশের এমনই কিছু বিস্ময় জাগানিয়া বুদ্ধিমান প্রাণীদের কথা জানবো আমরা।

১। অক্টোপাস

সমুদ্রের অমেরুদণ্ডী প্রাণীদের মধ্যে সবচেয়ে বুদ্ধিমান হচ্ছে অক্টোপাস। কারণ, তারা এক সেকেন্ডেরও কম সময়ের মধ্যে তাদের দেহের বর্ণ পরিবর্তন করে ফেলতে পারে। তারা তাদের টেন্টাকল দিয়ে যেকোনো জিনিস আঁকড়ে ধরতে পারে। জন্মগতভাবে এরা দক্ষ শিকারী এবং খাদ্য অনুসন্ধানের জন্য এরা পরিকল্পিত নীতিমালা অনুসরণ করে। অক্টোপাসের কৌতূহল আছে, বিষণ্ণতা আছে এবং শেখার ক্ষমতা আছে। খাদ্য গ্রহণের জন্য ভালোভাবে মাংসপেশির নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।

২। কাঠবিড়ালি

কাঠবিড়ালি দেখতে ছোট হলেও তাদের বুদ্ধিমত্তা অনেক বেশি। কাঠবিড়ালির মনে রাখার সহজাত ক্ষমতা আছে যার কারণে এরা গাছ, ফুল, ঝোপঝাড়, এলাকা চিহ্নিত করে এদের বাসা খুঁজে বের করতে পারে। প্রতি শরৎকালে এরা একহাজারের মত বাদাম বিভিন্ন জায়গায় লুকিয়ে রাখে এবং শীতকালে ঠিকই সেগুলো খুঁজে বের করতে পারে। তাদের এই বুদ্ধিমত্তা খাদ্য মজুদকরণের ক্ষেত্রেই বেশি ব্যবহৃত হয়।

৩। ডলফিন

ডলফিন একটি বুদ্ধিমান প্রাণী এটা প্রমাণিত। Discovery News এর প্রতিবেদনে জানা যায় যে, ডলফিনের ব্রেইনের গঠনেই সচেতনতা ও আবেগ আছে। এমনকি গঠনের দিক দিয়ে মানুষের ব্রেইনের চেয়েও বেশি জটিল ডলফিনের ব্রেইন। Emory University এর Dolphin expert Lori Marino ডিসকভারি নিউজকে বলেন, ‘মানুষের বুদ্ধিমত্তার সাথে যদি অন্য কোনো প্রাণীর তুলনা করা হয় তাহলে ডলফিনের নাম সবার আগে আসবে’।

৪। দাঁড়কাক

দাঁড়কাক কেবল লেখক এডগার অ্যালান পো’র হরর গল্পের উপাদানই নয় বরং তারচেয়েও বেশি কিছু। দাঁড়কাক অনেক করিৎকর্মা। কানাডা ও স্কটল্যান্ডের গবেষকেরা দেখিয়েছেন যে, দাঁড়কাক তার চারপাশের পরিবেশ বুঝতে যুক্তি কাজে লাগায় যা বনমানুষ এর ক্ষমতা থেকেও বেশি। দাঁড়কাকের সমগোত্রীয় কাকও অত্যন্ত স্মার্ট।

৬। মৌমাছি

নিউরো সাইকিয়াট্রিস্ট Jon Lieff বলেন, ‘মৌমাছির প্রতীকীবাদ এবং বিমূর্ততার ধারণা ডিমেনসিয়াশিয়ায় আক্রান্তদের সমস্যা সমাধানে কাজে লাগতে পারে’। মৌমাছির কেলিডোস্কপিক মেমোরি থাকে যারফলে তারা এক মাইলের মধ্যে প্রতিটা ফুলকে চিনতে পারে এবং কিভাবে সবচেয়ে ভালো ফুলটা চেনা যায় তা তারা তাঁদের জ্ঞানী বয়োজ্যেষ্ঠদের কাছ থেকে শিখে। তিনি আরো বলেন, ‘মৌমাছি বাসার মধ্যেই নিজের নিরাময়ের জন্য নিজেই ঔষধ তৈরি করতে পারে এবং মৌমাছি দক্ষ একজন ইঞ্জিনিয়ারের মতোই তাদের মধু সংরক্ষণের জন্য বাসা তৈরি করে।

এমনই আরো কিছু বুদ্ধিমান প্রাণী হল- হাতি, পিঁপড়া, ইঁদুর, কাকাতুয়া, কুকুর, তিমি, শূকর, ভেড়া, টিয়া, গরিলা ও শিপ্পাঞ্জি ইত্যাদি।



মন্তব্য চালু নেই