পোরশায় ঈদকে ঘিরে পশুর হাটে ব্যাপক ভীড়

সালাউদ্দীন আহম্মেদ, পোরশা (নওগাঁ) প্রতিনিধিঃ নওগাঁর পোশায় আসন্ন ঈদুল আযহাকে ঘিরে ব্যাপক ভীড় জমেছে স্থানীয় পশুর হাট গুলোতে। এবার ভারতীয় গরুর আমদানী না থাকায় দাম বেড়েছে স্থানীয় খামারের পালিত গরুর। ঈদ আসতে আর মাত্র দু‘সপ্তাহ বাকি।

তাই ক্রেতারা তাদের পছন্দ মতো কুরবানী কিনতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। অন্যান্য বছরের চেয়ে এবার গরুর দাম ভালো পাওয়ায় খুশি ছোট বড় সব ব্যবসায়ীরা। পোরশা উপজেলার বড় পশুর হাটের মধ্যে শনিবারের মর্শিদপুর, মঙ্গলবারের গাঙ্গুরিয়া অন্যতম।

এছাড়াও এই এলাকার বৃহত্তম হাটগুলোর মধ্যে নিয়ামাতপুর উপজেলার সোমবারের ছাতড়া, সাপাহার উপজেলার বৃহস্পতিবারের দিঘিরহাট এবং চাঁপাই নবাবগঞ্জ জেলার বুধবারের সোনাইচন্ডি হাট অন্যতম।

এসব হাটের সাথে যুক্ত সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, হাটগুলোতে অন্যান্য বছরের মতো এবারোও কুরবানীর পশু নিয়ে আসছেন ব্যবসায়ীরা। কুরবানীর দিন ঘনিয়ে আসায় বেচা-কেনাও ভালো হচ্ছে তাদের। এবার ভারতীয় সিমান্ত দিয়ে গরু না আসায় প্রভাব পড়েছে দেশী গরুর উপর। ফলে আশানুরূপ দাম পাচ্ছেন পশু বিক্রেতারা।

গতকাল শনিবার উপজেলার মর্শিদপুর হাটে গিয়ে দেখা গেছে কুরবানীর পশু উঠেছে ব্যাপক। কিন্তু বিক্রেতারা দাম বেশি চাওয়ায় দ্বিধা দ্বন্দ্বের মধ্যে রয়েছেন ক্রেতারা। তারা বলছেন, এবারে পশুর দাম যেভাবে চাওয়া হচ্ছে তাতে পশু কিনায় মুশকিল। তাদের মতে, ঈদের আর মাত্র কয়েক দিন বাকি থাকাই গরু বিক্রেতারা এভাবে আকাশ ছুঁয়া দাম হাকাচ্ছেন।

এছাড়াও গত বৃহস্পতিবার সাপাহার উপজেলার দিঘির হাট গিয়ে দেখা গেছে,- অনেক দূর দুরান্ত থেকে পশু নিয়ে উপস্থিত হয়েছিলেন বিক্রেতারা। তেমনি ভাবে ক্রেতারও সমাগম ছিল প্রচুর। যে কোন মূল্যে পছন্দ মতো কুরবানীর পশু কিনতে আগ্রহী ক্রেতারা। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে ব্যাপক লাভবান হচ্ছেন ছোট বড় স্থানীয় খামারী ও দূর দূরান্ত থেকে আসা গরু ব্যবসায়ীরা।

এদিকে পশু হাটের ইজারাদাররা বলেছেন, হাটে এখন পর্যন্ত ভারতীয় গুরু কিংবা মহিষের আমদানি লক্ষ্য করা যাচ্ছেনা। সিমান্ত দিয়ে এখন আর ভারতীয় গরু আসছেনা। তাই এবারের কুরবানিতে দেশীয় গুরুর কদর বেড়েছে প্রচুর পরিমানে।

তারা আরোও বলেন, বিগত দিনে যে গরু ১ লাখ টাকায় বিক্রি হয়েছে ভারতীয় গরু না থাকায় এবারে ঐ গরুর দাম দেড় লাখে গিয়ে পৌঁছেছে। কিছুদিন আগে যে গরুর দাম ছিলো ৫০হাজার সে গরু আজ ৭৫হাজার টাকাতেও পাওয়া যায়না।

উপজেলার চকবিষ্ণপুর গ্রামের গৃহস্ত আব্দুল হাকিম জানান,- এবছর গরু বাছুরের দাম উর্দ্ধমুখি থাকায় তিন জোড়া গরু দু‘মাস পালন করে প্রায় ৮০হাজার টাকা লাভ করেছি। অপরদিকে আরেক ব্যবসায়ী বাবুল হোসেন জানান,- আমরা এক হাটে গরু কিনে অন্য হাটে বিক্রি করি।

বর্তমানে বাজার ভালো থাকায় জোড়া প্রতি ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়ে যায়। এদিকে উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অন্যান্য বছরের মতো এবার স্থানীয় ভাবে গড়ে উঠা খামারের সংখ্যা আগের মতো থাকলেও গরু পালনে আগ্রহ বেড়েছে সাধারণ গৃহস্থের মধ্যে।

এখন প্রায় বাড়িতেই দু‘চারটি করে পশু পালন করছেন তারা। বিগত বছর গুলোতে ভারতীয় গরুর প্রভাব থাকায় লোকশান গুনতে হয়েছে স্থানীয় খামারীদের। এতে আর্থিক ভাবে অনেকই ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিলেন তারা। এবার ভারতীয় গরু পারাপার বন্ধ হওয়ার কারণে পুরোনো ক্ষতি পোষিয়ে নিতে পারবেন বলেও আতœবিশ্বাসী স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।



মন্তব্য চালু নেই