অবশেষে প্যানেলভুক্তদের সবাই নিয়োগ পাচ্ছেন : প্রতারণা ঠেকাতে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ

প্যানেল শিক্ষক নিয়োগে প্রতারণা ঠেকাতে গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।

বৃহস্পতিবার অধিদপ্তরের পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সদ্য জাতীয়করণকৃত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কেবল শূন্য পদে নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন হবে। এক্ষেত্রে তদবির করে, অর্থের বিনিময়ে বা অন্য কোন উপায়ে প্রকাশিত মেধাক্রম পরিবর্তন পূর্বক নিয়োগ পাওয়ার সামান্যতম সুযোগ নেই। উক্ত মেধাক্রম তালিকা হতেই সদ্য জাতীয়করণকৃত সরকারি প্রথমিক বিদ্যালয়ে নিয়োগ সম্পন্ন করা হবে। এ প্রেক্ষিতে সকলের উদ্দেশ্যে জানানো যাচ্ছে যে, কোন ধরনের লেনদেন করে প্রতারিত হবেন না।

প্রসঙ্গত, আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী সরকার সম্প্রতি সদ্য জাতীয়করণকৃত সরকারি প্রথামিক বিদ্যালয়ে কেবল প্যানেলভুক্ত শিক্ষক নিয়োগ কার্যক্রম সংশ্লিষ্ট জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের মাধ্যমে সম্পন্ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

২০১০ সালের ২১ এপ্রিলের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির আলোকে ২০১২ সালের ৯ এপ্রিলে প্রকাশিত উপজেলা ভিত্তিক মেধাক্রম অনুসারেই সদ্য জাতীয়করণকৃত সরকারি প্রথমিক বিদ্যালয়ের কেবল শূন্য পদে নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন হবে।

প্যানেলভুক্তদের সবাই নিয়োগ পাচ্ছেন

সাবেক রেজিস্টার্ড বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জন্য প্যানেলভুক্ত প্রার্থীদের সবাই শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পাচ্ছেন। সদ্য জাতীয়করণ করা রেজিস্টার্ড বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নতুন সৃষ্ট পদসহ (পঞ্চম পদ) সব শূন্যপদে প্যানেল শিক্ষকদের নিয়োগের জন্য নতুন নির্দেশনা জারি করেছে সরকার।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর থেকে বৃহস্পতিবার (৯ জুন) নতুন নির্দেশনা দিয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে। নিয়োগের আগের নির্দেশনা অনুযায়ী সব প্যানেলভুক্ত প্রার্থীদের নিয়োগ পাওয়া নিয়ে আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের পরিচালক (পলিসি ও অপারেশন) মো. আনোয়ারুল হক স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ২০১৩ সালের আদেশ অনুযায়ী জাতীয়করণ করা ২২ হাজার ৯২৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রতিটিতে একটি করে প্রধান শিক্ষক ও চারটি সহকারী শিক্ষকের পদ রাজস্বখাতে সৃজন করা হয়েছে। এ বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও অর্থ বিভাগের সম্মতি রয়েছে। সৃজিত পদে প্যানেলভুক্ত শিক্ষকদের নিয়োগ দেওয়া যাবে।

এর আগে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর থেকে গত ৬ জুন জাতীয়করণ করা বিদ্যালয়ের শূন্য পদে প্যানেলভুক্ত প্রার্থীদের মেধাক্রম অনুযায়ী সাতদিনের মধ্যে নিয়োগ দিতে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে। তবে ওই চিঠিতে নতুন সৃষ্টি হওয়ার শূন্য পদের বিষয়ে কিছু বলা না থাকায়, মাঠ পর্যায়ের শিক্ষা অফিস এ পদে প্যানেলভুক্তদের নিয়োগ দিচ্ছিল না।

নতুন সৃষ্ট পঞ্চম পদে আপাতত প্যানেলভুক্তদের নিয়োগ করা হচ্ছে না জানিয়ে বুধবার প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. আলমগীর জানিয়েছিলেন, উপজেলা বা থানায় জাতীয়করণ করা বিদ্যালয়ের শূন্য পদে প্যানেলভুক্ত প্রার্থীদের মেধাক্রম অনুযায়ী নিয়োগ দেওয়া হবে। মেধার ভিত্তিতে শূন্যপদে নিয়োগ হলেও প্যানেলভুক্ত সবাই নিয়োগ পাবেন না।

২০১৩ সালের আগের হিসাব অনুযায়ী প্যানেলভুক্ত প্রার্থীর সংখ্যা সাড়ে ২৮ হাজারের মতো। প্যানেলভুক্ত প্রার্থীদের ঐক্যজোটের একজন নেতা জানিয়েছিলেন, সারাদেশে প্যানেলভুক্ত শিক্ষকের সংখ্যা বর্তমানে প্রায় ২৫ হাজারের মতো।

নতুন সৃষ্ট পদ ছাড়া জাতীয়করণ করা বিদ্যালয়গুলোতে শূন্য পদের সংখ্যা ৫ হাজারের বেশি হবে না বলেও জানিয়েছিলেন ওই নেতা।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান বুধবার বলেছিলেন, ‘আদালত বলেছে যারা মামলা করেছে প্রত্যেককে নিয়োগ দিতে। ৭০০ রিটে ১০ হাজার জন জিতেছে। এর আগে রিট করেছিলেন ১০ জন, এইতো ১০ হাজার ১০ জন। আমরা তো চাচ্ছিলাম সবাইকে নিয়োগ দেব।’

সব কিছু মিলিয়ে প্যানেলভুক্ত শিক্ষক নিয়োগে একটি ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়। নতুন নির্দেশনার কারণে এখন এ বিষয়ে অস্পষ্টতা দূর হল বলে জানিয়েছেন প্যানেলভুক্ত প্রার্থীরা।



মন্তব্য চালু নেই