প্রতিশ্রুতির পরও চলছে পাটকল শ্রমিকদের অবরোধ

শ্রমিকদের বকেয়াসহ পাটশিল্পের উন্নয়নে সরকারের ১ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের ঘোষণা এবং জেলা প্রশাসকের অনুরোধ উপেক্ষা করেই খুলনা অঞ্চলে রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল শ্রমিকরা অবরোধ কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছেন।

মঙ্গলবার সকাল থেকে রাজপথ-রেলপথ অবরোধ কর্মসূচি শুরু করেছেন শ্রমিকরা। অন্যান্য দিনের মতো তারা খুলনার নতুন রাস্তা মোড়সহ খুলনা-যশোর মহাসড়কের তিনটি স্থান এবং রেলপথে অবস্থান নিয়ে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন।

এদিকে, রাষ্ট্রায়ত্ত সাত পাটকলের সিবিএ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া রাষ্ট্রায়ত্ত জুট মিল সিবিএ-ননসিবিএ ঐক্য পরিষদের নেতারা মঙ্গলবার সকালে ঢাকায় রওনা হয়েছেন। বিকেলে পাটমন্ত্রীর সঙ্গে তারা বৈঠকে বসবেন। বৈঠক ফলপ্রসূ হলেই কেবল আন্দোলন প্রত্যাহার করা হবে বলে নেতারা জানিয়েছেন।

এদিকে, টানা অবরোধের কারণে খুলনা-যশোর মহাসড়কে যানজট দেখা দিয়েছে। বন্ধ রয়েছে রেল যোগাযোগ। ফলে এ সড়কে চলাচলরত মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছেন।

শ্রমিকরা নতুন রাস্তার মোড়ে রাজপথ-রেলপথ এবং আটরা গিলাতলা শিল্পাঞ্চল ও যশোরের রাজঘাট এলাকায় খুলনা-যশোর মহাসড়কের ওপর অবস্থান নিয়েছেন। তারা সড়কের ওপর অবস্থান নিয়ে স্লোগান, বক্তৃতা এবং বিভিন্ন ধরনের প্রতিবাদী সংগীত পরিবেশন করছেন। হাঁড়ি ও থালা-বাসন নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করছেন তারা। খুলনার খালিশপুরের প্লাটিনাম, ক্রিসেন্ট, দিঘলিয়ার স্টার, আটরা শিল্প এলাকার আলীম, ইস্টার্ন, নওয়াপাড়া শিল্প এলাকার জেজেআই ও কার্পেটিং জুট মিলের প্রায় ৩৫ হাজার শ্রমিক অবরোধে যোগ দিয়েছেন।

শ্রমিকদের পাঁচ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে পাটশিল্পকে বাঁচিয়ে রাখার স্বার্থে মিলগুলোকে পূর্ণাঙ্গ উৎপাদনমুখী করতে পাট খাতে প্রয়োজনীয় অর্থ ছাড়, পে-কমিশনের ন্যায় অবিলম্বে শিল্পশ্রমিকদের জন্য মজুরি কমিশন বোর্ড গঠন, ২০১৩ সালের ১ জুলাই ঘোষিত ২০ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা প্রদান এবং খালিশপুর, দৌলতপুর, কর্ণফুলী জুট মিলের শ্রমিকদের চাকরি স্থায়ীকরণসহ সব পাওনা পরিশোধ।

এর আগে সোমবার শ্রমিকদের বকেয়াসহ পাটশিল্পের উন্নয়নে সরকার ১ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের ঘোষণা দিলে খুলনার জেলা প্রশাসক মো. নাজমুল আহসান শ্রমিকদের অবরোধ তুলে নেওয়ার আহ্বান জানান। কিন্তু তারা পাটমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে বিষয়টি চূড়ান্ত না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণায় অটল থাকেন।



মন্তব্য চালু নেই