প্রধানমন্ত্রীকে স্কুলছাত্রের চিঠি: অবশেষে নির্মিত হতে যাচ্ছে সেই সেতু

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হাতে লেখা চিঠিতে খরাস্রোতা পায়রা নদীতে একটি সেতু নির্মাণ করে দেওয়ার আকুতি জানিয়েছিল পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র শীর্ষেন্দু বিশ্বাস। শেখ হাসিনাও চিঠির জবাবে সেতু নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। অবশেষে নির্মিত হতে যাচ্ছে শীর্ষেন্দুর আকুতির সেই সেতু।

ইতোমধ্যেই সেতুর স্থান সমীক্ষা সম্পন্ন করেছে সেতু বিভাগ। জানা গেছে, চীনের সহযোগিতায় নির্মিত হচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুত পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জের স্কুল শিক্ষার্থী শীর্ষেন্দুর সেই সেতু। সম্প্রতি চীন আরও তিনটি সেতু বাংলাদেশে নির্মাণের আগ্রহ প্রকাশ করেছে। সেতু বিভাগ চাইছে চীনের অর্থায়নেই প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুত পটুয়াখালীর পায়রা নদীতে সেতুটি নির্মিত হউক। এ বিষয় উল্লেখ করে গতমাসে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে চিঠি দিয়েছে সেতু বিভাগ।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সেতু বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী কবির আহমেদ জানান, ‘আমরা সেতুর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। প্রস্তুতিও নিচ্ছি। তবে চীন যেহেতু আমাদের আরও তিনটি সেতু নির্মাণ করে দিতে চায়, তাই আমরাও চাচ্ছি চীনের সহযোগিতায় ওই সেতুটি হউক। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে আমরা প্রস্তাব পাঠিয়েছি। এটি এখন প্রক্রিয়ার মধ্যে আছে। ’

গত ৩ নভেম্বর প্রধান প্রকৌশলীর নেতৃত্বে পটুয়াখালী সদর উপজেলা ও মির্জাগঞ্জ উপজেলার মধ্যবর্তী বয়ে যাওয়া পায়রা নদীর উভয় তীরে স্থান পরিদর্শন করেছে সেতু বিভাগের প্রতিনিধি দল।

প্রতিনিধি দল তাদের প্রস্তাব প্রস্তুত করেছে। তারা গতমাসে প্রধানমন্ত্রীর কাছে এ সংক্রান্ত প্রস্তাব পাঠিয়েছে। সেই প্রস্তাব অনুমোদন হলে এরপর শুরু হবে আনুষ্ঠানিকভাবে সেতু নির্মাণের বাকি কার্যক্রম।

বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ওয়াহিদুজ্জামান জানান, ‘চীনের সহযোগিতায় সেতু নির্মাণের বিষয়ে আমরা প্রস্তাব প্রস্তত করেছি। তারা যে তিনটি সেতু আমাদের জন্য করতে চায়, তার মধ্যে পায়রার ওই সেতুটি থাকতে পারে। সে বিষয়ে আমরা আমাদের মতামত দিয়েছি।’

সড়ক বিভাগ ও সেতু কর্তৃপক্ষের প্রধান প্রকৌশলী মো. কবির হোসেন জানান, সেতুটি হবে দুই লেনের। যার দৈর্ঘ্য – মূল সেতু ১ হাজার ৩৭৫ মিটার (বক্স গার্ডার) এবং প্রস্থ ফুটপাতসহ ১০ দশমিক ৭৬ মিটার। ভার্টিক্যাল ক্লিয়ারেন্স (নির্বিঘ্নে নৌ চলাচলের জন্য প্রয়োজনীয় উচ্চতা) ১৮ দশমিক ৩০ মিটার এবং হরায়জন্টাল ক্লিয়ারেন্স (দুই স্প্যানের মধ্যবর্তী স্থান) ৯০ মিটার।

তিনি আরও জানান, প্রধানমন্ত্রী প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তাই ব্রিজটি নির্মাণের জন্য তাদের পক্ষ থেকে যা যা করণীয় তা তারা করে যাচ্ছেন। এখন অর্থায়নের জন্য চীনের সঙ্গে যোগাযোগ হচ্ছে।

এ সম্পর্কে জানতে চাইলে পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক এ কে এম শামিমুল হক সিদ্দিকী জানান, ‘সেতুটির বাস্তব পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে সেতু বিভাগের প্রতিনিধি দল ঘটনাস্থলে এসেছিল। এটি নিয়ে কাজ করছে সেতু বিভাগ। তারাই এর অগ্রগতি জানাবে।’

পটুয়াখালী সরকারি জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র শীর্ষেন্দু বিশ্বাস পায়রা নদীতে ব্রিজ চেয়ে গত ১৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর কাছে একটি হাত এ লেখা চিঠি পাঠায়। এরপর ২০ সেপ্টেম্বর ব্রিজ নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়ে শীর্ষেন্দুকে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে একটি চিঠি পাঠানো হয়। এরই ধারাবাহিকতায় পটুয়াখালীর পায়রা নদীতে ব্রিজের স্থান পরিদর্শনে আসে ৭ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল। ৩ নভেম্বর সেতু বিভাগের প্রতিনিধি দল সেতু নির্মাণের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।খবর ঢাকাটাইমসের।



মন্তব্য চালু নেই