প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ উপেক্ষা করলেন সুরঞ্জিত!

বিএনপি-জামায়াতের থেকে কেউ যেন আওয়ামী লীগে না আসতে পারে স্পষ্ট ভাষায় সে নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সম্প্রতি দলীয় সভায় এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সমাবেশে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া সেই নির্দেশ মানলেন না দলটির উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, প্রবীণ নেতা সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। দলীয় প্রধানের নির্দেশনা উপেক্ষা করেই নিজের নির্বাচনী এলাকা সুনামগঞ্জের দিরাইয়ের বিএনপির ৪২ নেতাকর্মীকে ঢাকায় এনে দলে বরণ করে নিলেন সুরঞ্জিত।

শনিবার দুপুরে জাতীয় সংসদ ভবনে আইন, বিচার ও সংসদ সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতির কার্যালয়ে সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের হাতে ফুল দিয়ে আওয়ামী লীগে যোগ দেন দিরাই বিএনপির ওই নেতারা। সন্ধ্যায় সুরঞ্জিতের ব্যক্তিগত সহকারী কামরুল হক স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

গত ৮ নভেম্বর গণভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি-জামায়াত থেকে যারা আমার দলে আসতে চায়, তাদের আমরা নেব না।

ভিন্ন দল থেকে ভেড়ানোর জন্য নিজের দলের নেতাদেরই দায়ী করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, গ্রুপিংয়ে দল ভারী করতে অনেকে নিয়ে নেয়। তারা (যোগদানকারী) আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে অন্তর্দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করে এবং পরবর্তী সময়ে দলের নেতা-কর্মীদের হত্যা করে।

এসময় তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের লোক মারা গেলেই শুধু কোনো অসুবিধা নেই। তারা ভালো সেজে ঢুকেই হত্যা করে।

এর আগে জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী স্পষ্ট ভাষায় বলেন, আওয়ামী লীগ এতটা দৈন্য হয়ে যায়নি যে, বিএনপি-জামায়াতের লোকজনকে দলে টানতে হবে। এ সময় তিনি সুযোগসন্ধানী কেউ যেন দলে ঢুকতে না পারে সে ব্যাপারে দলীয় নেতাকর্মীদের সজাগ থাকার নির্দেশ দেন।

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার কয়েক দিনের মাথায় তা ‘লঙ্ঘন’ করলেন দলের প্রবীণ নেতা সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। দিরাই উপজেলার বিএনপির সাবেক সভাপতিসহ ৪২ নেতাকর্মী শনিবার দুপুরে ঢাকায় এসে সুরঞ্জিতের হাতে ফুলের তোড়া দিয়ে আওয়ামী লীগে যোগ দেন।

এ সময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শে গড়া শক্তিশালী ও গণতান্ত্রিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগের নীতি আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে দিরাই উপজেলা বিএনপির শীর্ষস্থানীয় নেতাসহ শতাধিক নেতাকর্মী দলে যোগদান করায় আমি তাদের স্বাগত জানাই। এ সময় তিনি যোগদানকারী নেতাদেরকে “ঘরের মানুষ ঘরে ফিরে এসেছে” আখ্যায়িত করে আনন্দ প্রকাশ করেন।

যোগদান অনুষ্ঠানে দিরাই উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আরিফুজ্জামান চৌধুরী এহিয়া বলেন, আমি জেলা বিএনপির আহ্বায়ক নাছির উদ্দিন চৌধুরীর ভাগিনা। কিন্তু দিরাই বিএনপি বলতে নাছির উদ্দিন ও তার ভাই মাসুকের একনায়কতন্ত্রের কারণে দিরাই উপজেলা বিএনপি এখন নেতাকর্মীশূন্য। আমিসহ কয়েক শত নেতাকর্মী আওয়ামী লীগে যোগদান করলাম।

রশিদ আহমদ চৌধুরী বাচ্চু বলেন, দীর্ঘ ২৫ বছর বিএনপি রাজনীতি করেছি। এখানে গনতন্ত্র নেই, চলে এক নায়কতন্ত্র। গণতান্ত্রিক রাজনীতির স্বার্থে দাদা সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের হাত ধরে আওয়ামী লীগে যোগদান করলাম।

এবিষয়ে জানতে চাইলে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা শুধু জামায়াতের ব্যাপারে। বিএনপির ব্যাপারে নয়। তাই আমি প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ উপেক্ষা করিনি।

প্রধানমন্ত্রী বিএনপির কথা বলেছেন বলে তাকে স্মরণ করিয়ে দিতে চাইলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান।ঢাকাটাইমস



মন্তব্য চালু নেই