প্রধানমন্ত্রীর মঞ্চে হঠাৎ ঢুকে পড়লেন এক নারী

জনসভার ভাষণ শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মঞ্চের সিঁড়ি দিয়ে নামার সময় তাকে লাফ দিয়ে জড়িয়ে ধরেন এক নারী। তার নাম ফারহানা হায়দার মল্লিক (৩৫)।

বগুড়ার সান্তাহারে আগমন উপলক্ষে বাইরে নজিরবিহীন নিরাপত্তা থাকলেও প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় বক্তব্য শেষে মঞ্চ থেকে নামার সময় নিরাপত্তা বেষ্টনি ভেদ করে ওই নারী ভেতরে প্রবেশ করেন।

রোববার বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহারে স্থানীয় স্টেডিয়াম মাঠে উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে দেন প্রধানমন্ত্রী। বক্তব্য শেষে সিঁড়ি বেয়ে নামার সময় এ ঘটনা ঘটে। পরে প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তাকর্মীরা (এসএসএফ) তাকে আটক করে থানায় সোপর্দ করে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সান্তাহার স্টেডিয়ামে প্রধানমন্ত্রী বক্তব্য দিয়ে বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে মঞ্চ থেকে নেমে আসেন। এ সময় হঠাৎ করে ফারহানা নামের ওই নারী লাফ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পা ধরেন।

মুহূর্তের মধ্যে নিরাপত্তাকর্মীরা তাকে বাধা দেয় এবং আটক করে। প্রধানমন্ত্রী সেখান থেকে গাড়িতে ওঠার পর ওই নারীকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।

আদমদীঘি থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শওকত কবীর জানান, ওই নারীকে আদমদীঘি থানায় রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ফারহানা পুলিশকে জানিয়েছেন, তিনি ঢাকার ১৮ নং ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ কর্মী।

তার স্বামীর বাড়ি বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলার সাহারপুকুর এলাকায়। স্বামী হায়দার মল্লিক ঢাকা ও দুপচাঁচিয়া থাকেন। বাবার বাড়ি রংপুরের পীরগঞ্জ এলাকায়। তবে ওই নারী অনুষ্ঠানস্থলে সাধারণ গ্যালারিতে ছিলেন। তার কোনো নিরাপত্তা পাস ছিল না।

ওসি আরও জানান, বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল জলিল থানায় উপস্থিত হয়ে ওই নারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন।

বগুড়ার পুলিশ সুপার আসাদুজ্জামান জানিয়েছেন, ওই নারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে এবং তার বিষয়ে খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে।

স্থানীয় সাংবাদিকরা জানান, ওই নারীর কোনো ছবি তুলতে দিচ্ছে না পুলিশ। তারা বলছে, ওই নারী আবেগে এমন কাজটি করেছেন। কিন্তু তিনি আসলে আবেগে এমনটি করেছেন কিনা এবং তার বিষয়ে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ খবর নিচ্ছে পুলিশ।

স্থানীয় সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে সান্তাহারে দুদিন আগে থেকে সিএনজি অটোরিকশা ও ব্যাটারিচালিত যানবাহন চলাচল বন্ধ রাখা হয়। সেই সঙ্গে জনসভার দুই কিলোমিটার এলাকায় গাড়ি রাখা বন্ধ করা হয়।

এছাড়া সভাস্থল ঘিরে চার স্তরবিশিষ্ট নিরাপত্তার জন্য তল্লাশি চকি বসানো হয়। পাশাপাশি সাংবাদিকদেরও প্রবেশের সময় বিশেষ কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে।

এমনকি নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মজিবর রহমান মজনুকেও দাঁড় করে রাখা হয়।

দুপুর ১২টার মধ্যে যারা সভাস্থলে প্রবেশ করেছে তাদের খাবারসহ অন্যান্য কাজে সভাস্থল থেকে আর বাইরে আসতে দেয়া হয়নি। নিরাপত্তাকর্মীদের অধিক কড়াকড়ির কারণে অনেক সাংবাদিক বাইরে মাইকের সামনে দাঁড়িয়ে বক্তব্য শুনেছেন।



মন্তব্য চালু নেই