প্রস্তুত জল্লাদ ও ফাঁসির মঞ্চ : শুধু গ্রিন সিগন্যালের অপেক্ষা

জীপুরের কাশিমপুর কারাগারের আশপাশে নিরাপত্তার কড়াকড়ি আরও বাড়ানো হয়েছে। কারাগারের ভেতর ফাঁসির মহড়া দেয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছেন ভেতরের একাধিক কর্মকর্তা। ফাঁসি কার্যকরের জন্য জল্লাদ নির্বাচন হয়েছে বলেও জানিয়েছে অসমর্থিত একটি সূত্র। তবে কারা কর্তৃপক্ষ আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য এখনও দেয়নি।

একজন শীর্ষ দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, মীর কাসেম আলীকে ফাঁসিতে ঝোলানোর লক্ষ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। ইতোমধ্যেই দুই দফা ফাঁসির মহড়াও হয়ে গেছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের গ্রিন সিগন্যাল পেলে যেকোনো সময় ফাঁসির কাষ্ঠে ঝোলানো হতে পারে মহান একাত্তরের যুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত ও ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলীর।

ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার-২ হিসেবেই পরিচিত গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার। এখানে মোট চারটি কারাগার আছে। এগুলো হলো পার্ট ওয়ান, পার্ট টু, হাই সিকিউরিটি ও মহিলা কারাগার।

জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলীর পরিবারকে ‘শেষ দেখার জন্য’ ডেকে পাঠানোর পর থেকে এই চারটি কারাগারেই দর্শণার্থীদের প্রবেশ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

মীর কাসেম আলী এই কারাগারের পার্ট টুতে বন্দি আছেন। এই কারাগারের সামনে সকাল থেকেই তিন স্তরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। কারাগারের মূল ফটকের ৪০০ গজ দূরেই নিরাপত্তা চৌকি থেকে দর্শনার্থীদের ফিরিয়ে দেয়া হচ্ছে।

কারাগারের অসমর্থিত একাধিক সূত্র বলছে, এই কারাগারে ফাঁসির মঞ্চ ও মৃত্যুকূপ পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে সকালে। ফাঁসির রশির শক্তি পরীক্ষা করা হয়েছে বালুর বস্তা বেঁধে। জল্লাদদের তালিমও দেয়া হয়েছে।

ফাঁসি কার্যকর করবে এমন জল্লাদদেরও নির্বাচন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে একাধিক সূত্র। এর মধ্যে দুই জনের নাম জানা যাচ্ছে। এরা হলেন শাহজাহান ও রাজু। মানবতাবিরোধী অপরাধে এখন পর্যন্ত কার্যকর করা পাঁচটি ফাঁসিই দুই জনের কারও না কারও হাত দিয়ে হয়েছে। তবে ফাঁসি কার্যকরে এদের সঙ্গে আরও কয়েকজন থাকবেন। তবে তাদের পরিচয় এখনও নিশ্চিত করা যায়নি।

বিষয়ে জানতে চাইলে কাশিমপুর কারাগারের জেলসুপার প্রশান্ত কুমার বণিক বলেন, ‘আমাদের সব প্রস্তুতিই আছে। নির্বাহী আদেশ পেলেই দণ্ড কার্যকরের পদক্ষেপ নেবো। তবে এখনও কোনো কাগজ আসেনি।’

কারা কর্তৃপক্ষ বলছে, দণ্ড কার্যকরে তারা এখন শুধু স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের গ্রিন সিগন্যালের অপেক্ষায় রয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কারা অধিদফতরের দায়িত্বশীল একাধিক শীর্ষ কর্মকর্তা দুপুর পৌনে ১২টায় জানান, মীর কাসেম আলীর ফাঁসি আজ হতেও পারে আবার নাও হতে পারে। তাদের ভাষায় ‘ফিফটি ফিফটি চান্স’ রয়েছে।

একজন শীর্ষ দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, মীর কাসেম আলীকে ফাঁসিতে ঝোলানোর লক্ষ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। ইতোমধ্যেই দুই দফা ফাঁসির মহড়াও হয়ে গেছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের গ্রিন সিগন্যাল পেলে যেকোনো সময় ফাঁসির কাষ্ঠে ঝোলানো হতে পারে মহান একাত্তরের যুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত ও ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলীর।

আইনি সব লড়াই চালিয়ে পরাজিত হওয়ার পর কাসেম আলীর সঙ্গে খোলা ছিল কেবল রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চাওয়ার সুযোগ। তবে শুক্রবার তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, প্রাণভিক্ষার আবেদন করবেন না। এরফলে কাসেম আলীর ফাঁসি কার্যকর এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র।

শুক্রবার দুপুরে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাওয়ার আবেদন করবেন না জানিয়ে দেয়ার পর থেকে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার ও আশেপাশের এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়। মূল কারাফটকে অতিরিক্ত কারারক্ষী মোতায়েন করা হয়।

কারাবিধি অনুযায়ী যেকোনো আসামির ফাঁসি কার্যকরের আগে তাকে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে শেষ দেখা করতে দেয়ার রেওয়াজ রয়েছে। এরআগে যুদ্ধাপরাধের অপরাধে দণ্ডিত বাকিরাও একই সুযোগ পেয়েছেন। আজ বিকেলে পরিবারের সদস্যদের ডেকে পাঠানোর কারণে ফাঁসি আজই হচ্ছে বলে জোর গুঞ্জন রয়েছে।



মন্তব্য চালু নেই