প্রেমিকের সামনে প্রেমিকাকে গণধর্ষন মামলার প্রধান আসামী গ্রেফতার

রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি থানা পুলিশ মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে গড়াই নদীর বেড়িবাঁধের উপর থেকে প্রেমিকের সামনে প্রেমিকাকে গণধর্ষন মামলার প্রধান আসামী সবুজ বিশ্বাস (২২) কে গ্রেফতার করেছে। তার পিতার নাম আঃ মজিদ বিশ্বাস। বাড়ী উপজেলার জঙ্গল ইউনিয়নের অলংকারপুর গ্রামে।

জানাগেছে, মোবাইলের মিসড কলে পরিচয়। তারপর প্রেমের সম্পর্ক। ৭মাসের এ সম্পর্কের জের ধরে বান্ধবী বাড়ীতে দু,জনের বেড়ানোর প্রগ্রাম। ভ্যান যোগে যাওয়ার পথে ৪ বখাটে ধরে নিয়ে যায় গড়াই নদীর ঘাটে । সেখানে প্রেমিক-প্রেমিকাকে মারধোর করে কাছে থাকা ২টি মোবাইল ফোন ও ৫শত টাকা কেড়ে রেখে ছেড়ে দেয়। আত্বীয় বাড়ীতে না গিয়ে ফেরার পথে বখাটেদের নজরে পড়ে। তারা প্রেমিক-প্রেমিকাকে জোড়পুর্বক মাঠে মধ্যে নিয়ে ৯জনের মধ্যে ৬জন প্রেমিককে আটকে রেখে মারধোর করে সামনেই পালাক্রমে ধর্ষন করে। এ লোমহর্ষক ঘটনাটি ঘটে গত ১০ এপ্রিল রাতে রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার শালমারা গ্রামে।

রাজবাড়ী সদর উপজেলার বসন্তপুর ইউনিয়নের বাজিতপুর গ্রামের শাহজাহান শিকদারের ছেলে গোয়ালন্দ মোড়ের হোটেল কর্মচারী শাহ আলম শিকদার জানান, তার সাথে একই ইউনিয়নের উদয়পুর গ্রামের (২০) কন্যার সাথে মোবাইল ফোনে মিসড কলে পরিচয় ঘটে। ৭ মাস ধরে তাদের সম্পর্ক জড়িয়ে পড়ে। তারই সুত্রধরে ওই মেয়ের বান্ধবীর স্বামী বালিয়াকান্দি উপজেলার জঙ্গল ইউনিয়নের অলংকারপুর গ্রামের মজিদ বিশ্বাসের ছেলে সবুজ বিশ্বাসের বাড়ীতে ১০ এপ্রিল সন্ধ্যায় যাওয়ার জন্য ভ্যান যোগে বালিয়াকান্দি বাজার হতে রওনা হয়।

শালমারা-অলংকারপুর মাঠের মধ্যে গেলে ৪ যুবক তাদেরকে ধরে বিভিন্ন প্রশ্ন করতে থাকে। একপর্যায়ে ওই ৪ যুবক তাদেরকে গড়াই নদীর চরে নিয়ে যায়। সেখানে তাদেরকে মারপিট করে কাছে থাকা ৫শত টাকা ও ২টি মোবাইল সেট ছিনিয়ে নিয়ে ছেড়ে দেয়। মোবাইল ফোন হারিয়ে ওই আত্বীয় সাথে যোগাযোগ করতে ব্যর্থ হয়ে ফিরে আসে। শালমারা মাদ্রাসার সামনে পৌছালে সেখানে থাকা কয়েক যুবক তাদেরকে ধরে টানা হেচরাসহ বিভিন্ন ধরনের প্রশ্ন করে।

একপর্যায়ে একটি বাড়ীর ঘরে নিয়ে তাদেরকে আটকে রাখে। রাত গভীর হলে ফাঁকা মাঠের মধ্যে নিয়ে তাকে মারপিট করে ও ওই মেয়েকে ৯জনের মধ্যে ৬জন পালাক্রমে ধর্ষন করে। ধর্ষনের শিকার হয়ে ও লোকলজ্জার ভয়ে শালমারা গ্রামের শাহজাহানের বাড়ীতে আশ্রয় নেয়। ধর্ষন ও মারপিটের সময় একে অপরকে রতন, অন্তর, সোহাগ , মাহি বলে ডাকাডাকি করে।

ওই মেয়ে জানায়, সে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া করে বাদ দিয়েছে। এখন ঝিনাইদহের বোনের বাড়ীতে থাকে। প্রেমের সম্পর্কের জের ধরে তার প্রেমিক শাহ আলমের সাথে তার বান্ধবী বাড়ীতে শুক্রবার বেড়াতে আসে। সে বাড়ীতে পৌছার পুর্বেই ৪ বখাটে তাদেরকে ধরে গড়াই নদীর চরে নিয়ে মারপিট করে ২টি মোবাইল ফোন ও ৫শত টাকা ছিনিয়ে নিয়ে ছেড়ে দেয়। তারা আর ওই বাড়ীতে না গিয়ে রওনা হয়ে শালমারা মাদ্রাসার নিকট আসলে কয়েকজন যুবক ধরে নিয়ে একবাড়ীতে আটকে রাখার পর ৯জন মিলে মাঠের মধ্যে নিয়ে ৬জনে পালাক্রমে ধর্ষন করে ফেলে পালিয়ে যায়। এসময় তারা একে অপরকে রতন, অন্তর, সোহাগ , মাহি বলে ডাকাডাকি করে। আমি এঘটনার বিচার চাই।

বালিয়াকান্দি থানার এস,আই মোশারফ হোসেন জানান, এব্যাপারে ওই ধর্ষিতা বাদী হয়ে বালিয়াকান্দি থানায় মামলা দায়ের করে। থানার মামলা নং-২, তারিখ-১১/৪/২০১৫ইং, ধারা- নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০(সংশোধনী/০৩) এর ৯(৩) তৎসহ ৩৭৯দ.বি.। ইতিপুবে মামলার আসামী তসলিমকে গ্রেফতার করা হয়। সে রাজবাড়ী আদালতে স্বীকারোক্তি মুলক জবানবন্ধি প্রদান করে।

মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে উপজেলার অলংকারপুর গ্রামের গড়াই নদীর বেড়িবাধের উপর থেকে প্রধান আসামী সবুজ বিশ্বাসকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকে বুধবার ৪দিনের রিমান্ড চেয়ে রাজবাড়ী আদালতে পাঠানো হয়েছে।



মন্তব্য চালু নেই