পড়া যাবে ১২ মাইল দূরের লেখা

আমাদের বাস এখন প্রযুক্তির দুনিয়ায়। প্রতিদিনই কোনো না কোনো প্রযুক্তি আমাদের জীবনে প্রবেশ করছে তার অপরিহার্যতা নিয়ে। একবিংশ শতাব্দীর শুরু থেকে প্রযুক্তি দ্বিগুন গতিতে আধিপত্য বিস্তার করছে সামাজিক প্রতিটি ক্ষেত্রে। আর এই প্রভাব বিস্তারকারী উপাদানগুলোর মধ্যে এখন অন্যতম হলো ড্রোন বিমান ও ক্যামেরা। এই দুয়ের কল্যাণে এখন মানুষের জীবনে কোনো ব্যক্তিগত গোপনীয়তা বলে থাকছে না। ঘরের ভেতর থেকে শুরু করে বাহির, সবখানেই নজরদারি চলছেই।

এই নজরদারি আরও শক্তিশালী করতে সম্প্রতি বিখ্যাত ক্যামেরা প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান ক্যানন তৈরি করেছে নতুন এক ক্যামেরা। ২৫০ মেগাপিক্সেলের এই ক্যামেরায় থাকছে এপিএস-এইচ-সিএমওএস সেন্সর। আর এই বিশেষ সেন্সরের বিশেষত্ব হলো, এই ক্যামেরাটি অন্তত ১৮ কিলোমিটার কোনো বস্তু বা ব্যক্তির শরীরে থাকা কোনো ছোটো লেখাও পড়তে পারবে। বিশেষজ্ঞরা ধারনা করছেন, ক্যানন তার এই ক্যামেরা মূলত গুপ্তচরবৃত্তির জন্যই তৈরি করেছে।

সিএমওএস সেন্সরগুলোর একটা সাধারণ সমস্যা রয়েছে। সেটা হলো, এই সেন্সরগুলোতে যখন পিক্সেল সংখ্যা বাড়ানো হয় তখন ডাটা সিগন্যাল পড়তে অনেকটা সময় লেগে যায় ক্যামেরার। কিন্তু এই এপিএস-এইচ সেন্সরটি এই সমস্যা থেকে মুক্ত। কারণ এই সেন্সরটি যাতে সেকেন্ডে সোয়া এক বিলিয়ন ডাটা প্রসেস করতে পারে সেই অনুযায়ীই তৈরি করা হয়েছে। অর্থ্যাৎ, প্রায় একটি রাইফেলের গুলির সমপরিমান দ্রুততায় এই ক্যামেরার শাটার ফেলতে সক্ষম হবে।

ক্যামেরাটির উল্লেখযোগ্য ফিচারগুলোর মধ্যে আছে এর নিখুত ও ঝকঝকে শার্প ছবির কোয়ালিটি। ক্যাননের গবেষকদের মতে, এই ক্যামেরার ফুটেজ ফোরকে’র তুলনায় ৩০ গুন বেশি শার্প এবং এইচডি’র তুলনায় ১২৫গুন বেশি শার্প। অর্থাৎ, স্বল্প আলোতে ছবি নাড়া খাওয়ার যে সমস্যার মুখোমুখি আমাদের হতে হয়, এই ক্যামেরায় অন্তত সেই সমস্যা থাকছে না। খুব সহজেই ভিডিও থেকে ফ্রেম এডিট করে কাঙ্খিত ফ্রেমটি পাওয়া সম্ভব, আর এতে ফ্রেমের পিক্সেলেরও কোনো সমস্যা হবে না।

অবশ্য ক্যানন এই ক্যামেরার এখন পর্যন্ত কোনো নাম দেয়নি। তারা এক বিবৃতিতে জানিয়েছে যে, এই ক্যামেরা সাধারণের ব্যবহারের জন্য বাজারজাত করা হবে না। রাষ্ট্রীয় বা প্রাতিষ্ঠানিক কাজে ব্যবহারের জন্যই কেবল এর বিক্রি হবে। সেই হিসেবে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা ও নজরদারি করে এমন প্রতিষ্ঠানগুলোই হবে এই ক্যামেরার আসল খদ্দের।



মন্তব্য চালু নেই