পয়লা বৈশাখে বর্ষবরণ: সরকারের সিদ্ধান্ত মানবেন না সংস্কৃতিকর্মীরা

পয়লা বৈশাখে বর্ষবরণের অনুষ্ঠান বিকেল ৫টার মধ্যে শেষ করার সরকারি সিদ্ধান্ত না মানার ঘোষণা দিয়েছেন সংস্কৃতিকর্মীরা।

মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বরাবর তনু হত্যার বিচার চেয়ে স্মারকলিপি জমা দেওয়া শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানিয়েছেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ।

এই সংস্কৃতিকর্মী বলেন, পয়লা বৈশাখের অনুষ্ঠান বাঙালির ইতিহাস-ঐতিহ্যের সঙ্গে জড়িত। অনুষ্ঠানকে সর্বজনীন ও নিরাপত্তা বিধান করা সরকারের দায়িত্ব। পয়লা বৈশাখের অনুষ্ঠান হয়ই মূলত বিকেল বেলায়। সময় বেঁধে দিয়ে এই প্রাণবন্ত অনুষ্ঠানের সর্বজনীনতা নষ্ট করা হচ্ছে। সংস্কৃতিকর্মীরা সরকারের এই সিদ্ধান্ত মানেন না বলেও জানান তিনি।

বেঁধে দেওয়া সময়সীমার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করতে সরকারের প্রতি অনুরোধ জানান গোলাম কুদ্দুছ। দেশের সংস্কৃতিকর্মীরা মুখোশ পরা ও বাঁশি বাজানো নিষিদ্ধ করার বিষয়েও আপত্তি তুলেছেন বলে জানান তিনি। জোট সভাপতি বলেন, পয়লা বৈশাখের অনুষ্ঠানের সবচেয়ে আকর্ষণীয় বিষয় হলো মঙ্গল শোভাযাত্রা। যেখানে রং-বেরঙের মুখোশের উপস্থিতি থাকে। তাই মুখোশ পরা যাবে না বলে সরকারের দেওয়া সিদ্ধান্ত দেশের ঐতিহ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।

পয়লা বৈশাখের অনুষ্ঠানে যথাযথ নিরাপত্তা দিয়ে সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠান পালন করতে গোলাম কুদ্দুছ নিরাপত্তার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

এর আগে কুমিল্লার ভিক্টোরিয়া কলেজের ছাত্রী সোহাগী জাহান তনুর হত্যাকারীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তা ও বিচারের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে সমাবেশ করে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট। সমাবেশ শেষে স্মারকলিপি নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কার্যালয়ে যাওয়ার জন্য মিছিল নিয়ে রওনা হলে দোয়েল চত্বরে পুলিশ তাঁদের ব্যারিকেড দিয়ে আটকে দেয়। পরে সাংস্কৃতিক জোটের আট সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে গিয়ে স্মারকলিপি দেয়। তবে মন্ত্রী তাঁর কার্যালয়ে না থাকার তাঁর পক্ষে ব্যক্তিগত কর্মকর্তা স্মারকলপিটি নেন।

প্রতিনিধিদলে ছিলেন সংস্কৃতিকর্মী ও পরিচালক নাসির উদ্দীন ইউসুফ বাচ্চু, হাসান আরেফসহ অন্যরা।

গত রোববার বর্ষবরণের অনুষ্ঠান বিকেল ৫টার মধ্যে শেষ করার নির্দেশ দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। ১৪ এপ্রিল সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অনুষ্ঠানের স্থলগুলো জনশূন্য করে ফেলবে। একই সঙ্গে মঙ্গল শোভাযাত্রা বা আনন্দ মিছিলে চেহারা লুকানো যায় এমন মুখোশ পরা নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জানান মন্ত্রী।

প্রতিবছর ১৪ এপ্রিল (পয়লা বৈশাখ) বাংলা নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে ঢাকাসহ সারা দেশে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়। এসব অনুষ্ঠানে বিভিন্ন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাও ঘটে। সর্বশেষ গত বছর পয়লা বৈশাখের অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় নারীদের যৌন হয়রানি করে দুর্বৃত্তরা।



মন্তব্য চালু নেই