ফখরুল মহাসচিব, রিজভী সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব

বিএনপির মহাসচিব হয়েছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ‘পরিচ্ছন্ন, ভদ্র, বিনয়ী ও দৃঢ় মনোবলসম্পন্ন’ রাজনীতিক হিসেবে পরিচিত এই রাজনীতিক ৫ বছর পর ভারপ্রাপ্ত থেকে পূর্ণাঙ্গ মহাসচিব পদ পেলেন। একইসঙ্গে অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আহমেদকে সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব এবং কোষাধ্যক্ষ পদে মিজানুর রহমান সিনহার নাম ঘোষণা করা হয়েছে।

গত ১৯ মার্চ রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে অনুষ্ঠিত বিএনপির ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিলে মহাসচিবসহ কমিটি গঠনে সর্বময় ক্ষমতা চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ওপর ন্যস্ত করেন কাউন্সিলররা। সেই ক্ষমতাবলে খালেদা জিয়া এই তিনজনকে মনোনীত করেছেন।

বুধবার (৩০ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আহমেদ নিজে এ তথ্য জানান।

প্রসঙ্গত, ২০১১ সালের ১৬ মার্চ সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান বিএনপির মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন। এরপর ২০ মার্চ চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া সৌদি আরবে যাওয়ার আগে বিমানবন্দরে মির্জা ফখরুলকে ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দিয়ে যান। তখন থেকেই দায়িত্ব পালন করে আসছেন তিনি।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে বর্তমানে সবচেয়ে কঠিন সময় পার করছে বিএনপি। বিরোধী দলের দুর্যোগপূর্ণ রাজনীতিতে নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে গত পাঁচ বছর ধরে ‘সেকেন্ড ইন কমান্ড’র হাল ধরে রয়েছেন বিএনপির ‘ভারপ্রাপ্ত’ মহাসচিব মির্জা আলমগীর। ‘প্রশ্নবিদ্ধ ও হাস্যকর’ বিভিন্ন মামলায় ইতোমধ্যে সাত দফায় গ্রেপ্তার হয়ে জেলও খেটেছেন দলের ‘ক্লিনম্যান’ খ্যাত এই নেতা।

গেল দুই বছরের মধ্যে দীর্ঘ সময় তাকে কারাগারেই থাকতে হয়েছে। সর্বশেষ গত ১ ডিসেম্বর জামিনে মুক্তি পান তিনি। বর্তমানে তার বিরুদ্ধে ৮৪টি মামলা রয়েছে।

অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বিএনপির সর্বশেষ কমিটির ৭নং যুগ্ম মহাসচিব ছিলেন। একইসঙ্গে তিনি কেন্দ্রীয় দপ্তরের দায়িত্বও পালন করেন।

নেতাকর্মীদের মতে, রুহুল কবির রিজভী দলের একজন ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতা। দলের চরম দুঃসময়ে তিনি সাহসিকতার সাথে তার ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করেন। এ দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে তাকে সরকারের রোষানলে পড়ে একাধিকবার কারাবরণ করতে হয়েছে। বিএনপির বিগত আন্দোলনে চরম সঙ্কটকালীন সময়ে তিনি মুখপাত্রের দায়িত্ব পালন করেন।

এদিকে, রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব হওয়ায় যুবদল সভাপতি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান। দুপুর ১২টার দিকে নয়াপল্টনে বিএনপি কার্যালয়ে এ শুভেচ্ছা জানান তিনি। এছাড়া আরো অনেকে রিজভীকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান।

এ সময় অর্থনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সালাম, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নাজিম উদ্দিন আলম, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক খায়রুল কবির খোকন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব হওয়ার পর উপস্থিত সাংবাদিকদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন রিজভী। এ সময় রিজভীর অনুগতরা নয়াপল্টনে বিএনপি কার্যালয়ে আগতদের মিষ্টিমুখ করান।

দি একমি ল্যাবরেটরিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিজানুর রহমান সিনহা এর আগেও (সর্বশেষ কমিটি) দলের কোষাধ্যক্ষ ছিলেন।



মন্তব্য চালু নেই