ফরাসি প্রেসিডেন্টদের ওপর মার্কিন গোয়েন্দাগিরি

ফ্রান্সের তিন প্রেসিডেন্টের ওপর গোপন নজরদারি চালিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা এনএসএ (ন্যাশনাল সিকিউরিটি এজেন্সি)। সম্প্রতি এ তথ্য ফাঁস করেছে উইকিলিকস। খবর বিবিসি ও রয়টার্সের।

‘টপ সিক্রেট ইন্টেলিজেন্স রিপোর্ট এ্যান্ড টেকনিক্যাল ডকুমেন্টস’ শিরোনামে গত মঙ্গলবার ফাঁস করা তথ্যে বলা হয়েছে, ২০০৬ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে ফ্রান্সের সাবেক প্রেসিডেন্ট জ্যাক শিরাক, নিকোলাস সারকোজি ও বর্তমান প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলাঁদের ওপর গোপন নজরদারি চালায় এনএসএ।

উইকিলিকসের ফাঁস করা এই তথ্যের ব্যাপারে এখনও মুখ খোলেনি যুক্তরাষ্ট্র। তবে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ওলাঁদ বিষয়টিকে গুরুতর হিসেবেই নিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে বুধবার প্রতিরক্ষা কাউন্সিলের বৈঠক ডেকেছেন তিনি।

উইকিলিকসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা ‘এসপিনেজ এলিসি’ শিরোনামে ফরাসি প্রেসিডেন্টদের ওপর গোয়েন্দাগিরির নথি প্রকাশ করা শুরু করেছে।

প্রতিষ্ঠানটি বলেছে, তাদের কাছে ফ্রান্সের তিন প্রেসিডেন্ট, কয়েকজন মন্ত্রী ও যুক্তেরাষ্ট্রে নিযুক্ত দেশটির রাষ্ট্রদূতের ওপর এনএসএ’র সরাসরি নজরদারির নথি রয়েছে।

ফ্রান্সের জাতীয় স্বার্থের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ওই নথিগুলো দেশটির লিবারেশন পত্রিকা ও মিডিয়াপার্ট নামে এক অনুসন্ধানী ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হচ্ছে।

নথিতে দেখা গেছে, ২০১২ সালে ইউরোজোন থেকে গ্রিসের বেরিয়ে যাওয়ার সম্ভাব্যতা নিয়ে আলোচনা করেছিলেন ওলাঁদ। ২০১১ সালে ফ্রান্সের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট সারকোজি যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়াই ইসরায়েল-ফিলিস্তিন শান্তি আলোচনা শুরু করতে চেয়েছিলেন।

আরও উল্লেখ রয়েছে, সারকোজি ভাবতেন একমাত্র তার পক্ষেই বিশ্বের অর্থনৈতিক সঙ্কটের সমাধান করা সম্ভব।

নথিগুলো প্রকাশ করার ব্যাপারে উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান এ্যাসাঞ্জ এক বিবৃতিতে বলেন, ‘ফ্রান্সের জনগণের জানার অধিকার রয়েছে কীভাবে তাদের নির্বাচিত সরকারের ওপর শত্রুসুলভ নজরদারি চালাচ্ছে মিত্র হিসেবে পরিচিত একটি দেশ।’

ফ্রান্সের জনগণ নিকট ভবিষ্যতে আরও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

এর আগে ২০১৩ সালে জার্মান চ্যান্সেলর এ্যাঙ্গেলা ম্যার্কেলের ওপর এনএসএ’র গোপন নজরদারির তথ্য ফাঁস করেন সংস্থাটির সাবেক কর্মকর্তা এডওয়ার্ড স্নোডেন। বিষয়টি নিয়ে তখন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে জার্মানির সম্পর্কে খানিকটা অবনতি লক্ষ্য করা যায়।

এর পরপরই জার্মান গণমাধ্যমগুলো জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের হয়ে ফ্রান্স ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদর দফতরের ওপর গোপন নজরদারি চালিয়েছিল জার্মানির জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটনের ফোনে নজরদারিও চালায় সংস্থাটি।

পরবর্তী সময়ে জার্মান তদন্তকারী সংস্থা জানায়, ম্যার্কেলের ফোনে এনএসএ’র নজরদারির অকাট্য প্রমাণ পায়নি তারা।



মন্তব্য চালু নেই