ফিফার বিরুদ্ধে বাংলাদেশী শ্রমিকের মামলা

কাতার বিশ্বকাপের অবকাঠামো নির্মাণে কাজ করা শ্রমিকদের যথাযথ অধিকার নিশ্চিতে প্রভাব খাটাতে ব্যর্থ হওয়ার অভিযোগ এনে ফুটবলের আন্তর্জাতিক সংস্থা ফিফার বিরুদ্ধে মামলা করেছেন এক বাংলাদেশী।

২০২২ সালে ফুটবল বিশ্বকাপের বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণ প্রকল্পে কাজ করার সময় জঘন্যভাবে তার অধিকার লংঘন করা হয়েছিল বলে অভিযোগ বাংলাদেশী শ্রমিক নাদিম শরীফুল আলমের।

নেদারল্যান্ডসভিত্তিক সবচেয়ে বড় শ্রম ইউনিয়নের সহায়তায় নাদিম সোমবার এই মামলা করেন সুইজারল্যান্ডের জুরিখে, যে শহরে রয়েছে ফিফার সদর দফতর।

জুরিখ ট্রেড কোর্টে দায়ের করা মামলার সঙ্গে এক খসড়া চিঠিতে নাদিম অভিযোগ করেছেন, কাতারে যাওয়ার পরপরই তার পাসপোর্ট নিয়ে নেয়া হয়। একইসঙ্গে খুবই বাজে পরিবেশে দেড় বছরের চুক্তিতে কাজ করতে তাকে বাধ্য করা হয়। সেখানে নির্মাণ উপাদান বোঝাই জাহাজ খালি করার কাজের বিনিময়ে তাকে শুধু পারিশ্রমিক হিসেবে খাবারের টাকা দেয়া হতো; থাকার জায়গা দেয়া হয়েছিল বড় একটি শ্রমিক ক্যাম্পে, যেখানে তিনি ছিলেন কার্যত বন্দি।

একপর্যায়ে তাকে চাকরিচ্যুত করে বিতাড়িত করা হয় অভিযোগ করে নাদিম বলেছেন, এমনকি তিনি এত অল্প আয় করেছেন, যাতে কার্যত নিয়োগ ফি বাবদ যে অর্থ তাকে দিতে হয়েছে, তাই উঠে আসে না।

বিদেশী শ্রমিকদের সঙ্গে যথাযথ আচরণ না করার জন্য ইতিমধ্যেই উপসাগরীয় দেশ কাতারের সমালোচনা করেছে মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এবং ভবন ও কাঠ শ্রমিকদের আন্তর্জাতিক সংস্থাসহ বিভিন্ন সংগঠন।

কিন্তু ২১ বছর বয়সী নাদিমের করা মামলায় প্রথমবারের মতো ফুটবলের আন্তর্জাতিক সংস্থা ফিফার প্রতি অভিযোগ আনা হয়েছে। মামলায় এই বাংলাদেশী শ্রমিক একটি চুক্তির জন্য ক্ষতিপূরণ হিসেবে প্রায় সাড়ে ১১ হাজার ডলার দাবি করেছেন, যার চার হাজার ডলার তিনি নিয়োগকারীদের দিয়েছিলেন।

এছাড়া অভিবাসী শ্রমিকদের নিজেদের ইচ্ছেমতো চাকরি পরিবর্তন বা কাতার ছাড়ার ন্যূনতম অধিকারসহ বিশ্বকাপ ঘিরে কাজ করা শ্রমিকদের ‘ন্যূনতম শ্রম মান’ নিশ্চিতে দেশটিকে চাপ দেয়ার জন্য ফিফার প্রতি আহ্বান জানানো হয়। নাদিমের কাছ থেকে আইনি নোটিশ পাওয়ার বিষয়টি ফিফার একজন মুখপাত্র স্বীকার করেছেন।

তবে অভিযোগের বিষয়ে কাতার সরকারের এক মুখপাত্রের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেননি। দেশটি এর আগেও শ্রমিকদের কাজে বাধ্য করার বিষয়টি অস্বীকার করেছে; বলেছে তারা শ্রম আইন বাস্তবায়ন করছে।

দেশটির ‘কাফালা’ ব্যবস্থা অনুযায়ী, বিদেশী শ্রমিকদের তাদের নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ চাকরি পরিবর্তনের অনুমতি দিলেই তারা নতুন কোনো চাকরিতে যোগ দেয়া বা কাতার ছাড়তে পারবেন।



মন্তব্য চালু নেই