ফুসফুসকে শক্তিশালী ও স্বাস্থ্যকর রাখার ছয় উপায়

শরীরের প্রয়োজনীয় অঙ্গের একটি হলো ফুসফুস। ফুসফুসের কাজ অবিরাম চলতে থাকে, কখনোই যেন এর বিরাম নেই। একজন স্বাস্থ্যবান মানুষ দিনে ২৫ হাজারবার শ্বাস নেয়।

অ্যাজমা, ক্রনিক অবসট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ (সিওপিডি), ব্রঙ্কাইটিস, নিউমোনিয়া, যক্ষ্মা ইত্যাদি ফুসফুসের প্রচলিত রোগ।

কিছু জিনিস রয়েছে যেগুলো ফুসফুসের কার্যক্ষমতাকে নষ্ট করে। তবে কিছু বিষয় মেনে চললে ফুসফুসকে ভালো রাখা যায়।

স্বাস্থ্যবিষয়ক ওয়েবসাইট টপ টেন হোম রিমেডি জানিয়েছে ফুসফুসকে শক্তিশালী ও স্বাস্থ্যকর রাখার ছয় উপায়ের কথা।

১. ধূমপান ত্যাগ করা

ধূমপায়ীদের কাছে এই কথাটি শুনতে হয়তো বিরক্তই লাগে। কেননা অধিকাংশ ধূমপায়ীই জানেন ধূমপানের ক্ষতিকর দিকগুলোর কথা। ধূমপান ছেড়ে দিতে পারেন না বেশির ভাগই।

তারপরও একটু ভাবুন তো, এই একটি মাত্র অভ্যাস ছেড়ে দিলে কতগুলো রোগের হাত থেকে মুক্তি পেতে পারেন আপনি। ধূমপান বন্ধ করলে ফুসফুসের ক্যানসার, সিওপিডির মতো কঠিন রোগগুলোর হাত থেকে অনেকটাই রেহাই পাওয়া যায়।

ধূমপান করলে শ্বাসনালি সরু হয়ে যায়। এতে শ্বাসকষ্ট হয়। ফুসফুসে দীর্ঘমেয়াদি প্রদাহ ও ফোলাভাব তৈরি হয়। ধূমপান ফুসফুসের টিস্যুগুলোকে নষ্ট করে দেয়। পরবর্তীকালে এটি ফুসফুসের ক্যানসারে রূপ নেয়।

আপনি যদি কিডনি অথবা ফুসফুসের কোনো সমস্যায় ভোগেন, তবে দ্রুত ধূমপান ছেড়ে দিন।

২. পরোক্ষ ধূমপান এড়িয়ে যাওয়া

একজন ধূমপায়ী কেবল নিজেরই ক্ষতি করেন না, আশপাশে যাঁরা থাকেন তাঁদেরও ক্ষতি করেন। ধূমপান না করেও যাঁরা ধূমপায়ীদের কাছাকাছি থাকেন বা ধূমপানের সময় আশপাশে থাকেন তাঁরাও ক্ষতিগ্রস্ত হন। একে পরোক্ষ ধূমপান বলা হয়। এতেও ফুসফুসের ক্ষতি হয়। তাই ঘরে, কর্মক্ষেত্রে ও গাড়িতে কেউ ধূমপান করলে তাঁকে মানা করুন এবং নিজেও ধূমপান থেকে দূরে থাকুন।

৩. বায়ুদূষণ থেকে দূরে থাকুন

ধূমপানের মতো দূষিত বায়ুও ফুসফুসের জন্য ক্ষতিকর। কলকারখানার ব্যবহৃত বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ, যানবাহনের ধোঁয়া এর জন্য দায়ী। তাই বায়দূষণ হয় এমন বাণিজ্যিক এলাকায় থাকবেন না। সুস্থ থাকতে সাইকেল চালানোর অভ্যাস গড়ে তুলতে পারেন।

৪. ঘরে গাছ রাখুন

বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, ঘরে গাছ থাকলে বায়ু পরিশোধিত হয়। ঘরে ১০০ স্কয়ার ফুটের মধ্যে দুটি গাছ রাখুন। এর পটের আকার হতে পারে ১০ থেকে ১২ ইঞ্চির মধ্যে। তবে এর আগে জেনে নেবেন কোন গাছগুলো ঘরে রাখার উপযোগী। ঘরে রাখার জন্য ভালো হলো ফার্ন, স্পাইডার প্ল্যান্ট, পিস লিলি, ব্যাম্বো প্ল্যাম, অ্যালোভেরা ও ইংলিশ আইভি ইত্যাদি গাছগুলো।

এ ছাড়া ঘরের মধ্যে মশা তাড়ানোর জন্য কোনো স্প্রে ব্যবহার করবেন না। ঘরে যেন পর্যাপ্ত আলোবাতাস ঢোকে সে ব্যবস্থা করুন।

৫. স্বাস্থ্যকর খাবার খান

ফুসফুসকে ভালো রাখতে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট জাতীয় খাবার খান। রসুন, পেঁয়াজ, আদা, হলুদ, আপেল, গ্রিন টি ইত্যাদি খাদ্যতালিকায় রাখুন। ফুসফুসের পেশিকে ভালো রাখতে দুধ, পনির, মাছ, বাদাম এসব খাবার খাদ্যতালিকায় রাখুন। পাশাপাশি চিনি জাতীয় খাবার, কার্বোহাইড্রেট, কেক, সফট ড্রিংকস খাওয়ার পরিমাণ কমিয়ে দিন। এতে কেবল ফুসফুসই নয়, সম্পূর্ণ স্বাস্থ্যই ভালো থাকবে।

৬. নিয়মিত ব্যায়াম করুন

ফুসফুসের ধারণক্ষমতা বাড়াতে ব্যায়াম একটি অন্যতম উপায়। নিয়মিত ব্যায়াম করলে হৃৎপিণ্ড ও পেশিতে অক্সিজেন পরিবহন করতে ফুসফুসের সুবিধা হয়। এতে মেজাজ ও হৃৎপিণ্ড দুটোই ভালো থাকে। ফুসফুস ভালো রাখতে প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটুন।



মন্তব্য চালু নেই