বঙ্গবন্ধু বিমানবন্দরের সম্ভাব্যতা যাচাই করবে জাপান

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ পাচ্ছে জাপানের নিপ্পন কোয়েই কোম্পানি লিমিটেড। ১২০ কোটি ২০ লাখ টাকায় নিপ্পন কোয়েইকে এ কাজ দেওয়ার প্রস্তাবের সারসংক্ষেপ তৈরি করেছে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়। শিগগিরই এ সারসংক্ষেপ সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে ওঠার কথা আছে।

এর আগে সরকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নির্মাণে ১৩ হাজার ৬৭৫ কোটি টাকার প্রকল্পটি গ্রহণ করে।

বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর প্রকল্পের বিষয়ে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘প্রকল্পটির বিষয়ে আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছি। আধুনিক স্থাপত্যশৈলীর অনন্য এক দৃষ্টান্ত এ বিমানবন্দর। এসব বিষয় মাথায় রেখেই অভিজ্ঞ প্রতিষ্ঠানকে এর সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ দেওয়া হচ্ছে।’

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব এস.এম গোলাম ফারুক স্বাক্ষরিত সারসংক্ষেপে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘এ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী সার-সংক্ষেপটি দেখেছেন, অনুমোদন করেছেন এবং মন্ত্রিসভা বৈঠকে উপস্থাপনের লক্ষ্যে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে প্রেরণের জন্য সম্মতি জ্ঞাপন করেছেন।’

সার-সংক্ষেপে উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) কারিগরী সহায়তায় প্রস্তাব মূল্যায়ন কমিটি প্রাপ্ত চারটি প্রস্তাবের কারিগরি মূল্যয়ন সম্পন্ন করেন। গত ৫ মে প্রস্তাব মূল্যায়ন কমিটির সভায় আর্থিক মূল্যায়ন শেষে সম্মিলিত কারিগরি ও আর্থিক মূ্ল্যায়ন সম্পন্ন করা হয়। মূল্যায়নে সর্বোচ্চ স্কোর অর্জনকারী প্রতিষ্ঠান নিপ্পন কোয়েই কো. লিমিটেডের প্রস্তাব গ্রহণ করে কমিটি ওই প্রতিষ্ঠানকে চুক্তি সমঝোতার জন্য আমন্ত্রণ জানানোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।

নিপ্পন কোয়েই কো. লিমিটেডের প্রস্তাব অনুযায়ী, প্রকল্পের ব্যয় দাঁড়ায় ১২০ কোটি ২০ লাখ ৩০ হাজার টাকা। যা সরকার অনুমোদিত প্রাক্কলিত মূল্য ১৩৪ কোটি টাকা হতে ১০ দশমিক ৩০ শতাংশ কম। প্রস্তাব মূল্যায়ন কমিটি সম্মিলিত কারিগরি ও আর্থিক মূল্যায়নে সর্বোচ্চ স্কোর অর্জনকারী প্রতিষ্ঠান নিপ্পন কোয়েইয়ের প্রস্তাব গ্রহণ করার জন্য সর্বসম্মতিক্রমে সুপারিশ করেন।

গত বছর সরকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নির্মাণে সরকার ১৩ হাজার ৬৭৫ কোটি টাকার একটি প্রকল্প গ্রহণ করেছে। বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের এ প্রকল্পটি বাস্তবায়নে চারটি স্থানকে উপযুক্ত হিসেবে নির্বাচন করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ বিমানবন্দরকে প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের সেতুবন্ধন হিসেবে চিহ্নিত করে প্রকল্পটি দ্রুত বাস্তবায়নের নির্দেশনা দিয়েছেন। প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির বৈঠকের কার্যপত্রে এ তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে।

দুই ধাপে প্রকল্প বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রকল্পটির জন্য মাদারীপুর শিবচরের চর জানাজাত, ঢাকার দোহারের চর বিলাসপুর, মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানের কেয়াইন এলাকা ও মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানের লতব্দি এলাকাকে বিমানবন্দরের জন্য উপযুক্ত হিসেবে বিবেচনা করা হয়। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মতামত গ্রহণ করা হয়েছে বলে কার্যপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।

চারটি স্থান নির্বাচনের বিষয়ে কার্যপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে যে, প্রকল্পটি বাস্তবায়নের নিমিত্ত বেসামরিক পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় হতে ঢাকার সাথে উত্তম যোগাযোগ ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করার লক্ষ্যকে সামনে রেখে দেশের বিভিন্ন জায়গা পরিদর্শনপূর্বক স্থান নির্বাচনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। উপযুক্ত স্থান নির্বাচনের লক্ষ্যে মোট নয়টি স্থান সরেজমিনে পরিদর্শন করে ঢাকা থেকে দূরুত্ব, ঢাকার সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা, জমির পর্যাপ্ততা, আন্তর্জাতিক রুট, সড়ক, রেল ও নদীপথে যোগাযোগ ব্যবস্থা, ভবিষ্যতে সম্প্রসারনের সম্ভাবনা, পুনর্বাসন, যাতায়াত খরচ ইত্যাদি বিবেচনা করে উপরোক্ত চারটি স্থান নির্বাচন করা হয়’।

চারটি স্থানের মধ্যে কোনটিকে বেঁছে নেওয়া হবে? এমন প্রশ্নের জবাবে রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘সম্ভাব্যতা যাচাই ও সমীক্ষা পরিচালনার জন্য আমরা প্রতিষ্ঠান নিয়োগ করতে যাচ্ছি। তাদের কাজ শুরু হলেই কোন স্থানটি জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে উপযোগী হবে তা নির্ধারণ করা যাবে।’ এনটিভি



মন্তব্য চালু নেই