বঙ্গবন্ধু সেতুতে রেল সংযোগের পরামর্শক নিয়োগে চুক্তি

‘বঙ্গবন্ধু সেতু রেল সংযোগ’ প্রকল্পের পরামর্শক নিয়োগে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর রেল ভবনে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।

বাংলাদেশ রেলওয়ের পক্ষে রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অবকাঠামো) কাজী রফিকুল আলম এবং পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের পক্ষে জাপানের অরিয়েন্টাল কনসালট্যান্স গ্লোবাল কোম্পানি লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক রায়োহেই ইশি নিজ নিজ পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।

এ সময় রেলপথমন্ত্রী মুজিবুল হক, রেলসচিব ফিরোজ সালাহউদ্দিন ও রেলওয়ের মহাপরিচালক আমজাদ হোসেন, জাইকার বাংলাদেশ প্রতিনিধি তাকাটোসি নিশিকাতা, বাংলাদেশে জাপান দূতাবাসের ফার্স্ট সেক্রেটারি তোসিউকি নোগুচিসহ রেলপথ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় মুজিবুল হক বলেন, বর্তমান সরকারের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় প্রকল্পটি আলোর মুখ দেখেছে। এটি বাস্তবায়িত হতে যাচ্ছে জাপান ও জাইকার সহযোগিতায়। এই প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে জনগণের ব্যাপক কাজে লাগবে, উপকারে আসবে। এই প্রকল্প সম্পন্ন হলে দেশের পূর্ব-পশ্চিম-উত্তরাঞ্চলের মধ্যে যাত্রী ও পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে বিরাট উপকারে আসবে। সার্বিকভাবে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন সাধিত হবে।

যমুনা নদীর ওপর নতুন রেলসেতু নির্মাণ খুবই জরুরি। এই সেতু নির্মিত হলে উত্তর ও পশ্চিম অঞ্চলসহ সমগ্র দেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। আরো নতুন ট্রেন চালানো যাবে, অতিরিক্ত মালামাল পরিবহন করা সম্ভব হবে। ফলে সেতুটি দেশের অর্থনীতিতে বিরাট অবদান রাখবে বলে রেলপথমন্ত্রী উল্লেখ করেন।

চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে জানানো হয়, পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এই প্রকল্পের সম্ভাব্যতা সমীক্ষা হালনাগাদকরণ, এনভায়রনমেন্টাল ইমপ্যাক্ট আসেসম্যান্ট প্রতিবেদন চূড়ান্তকরণ, ডিটেইল্ড ইনভেস্টিগেশন ও সার্ভে পরিচালনা করে ডিটেইল্ট ডিজাইন, ড্রইং, প্রাক্কলন ও দরপত্র দলিল প্রণয়ন, দরপত্র প্রক্রিয়া ও মূল্যায়নে সহায়তা এবং নির্মাণ কাজ সুপারভিনে সেবা প্রদান করা হবে।

সরকার জাতীয় এবং উপ-আঞ্চলিক রেল যান চলাচলের ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণ করার লক্ষ্যে বিদ্যমান বঙ্গবন্ধু সেতুর সমান্তরালে একটি পৃথক রেল সেতু নির্মাণের জন্য সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। এ লক্ষ্যে ‘বঙ্গবন্ধু সেতু রেল সংযোগ’ নামক একটি প্রকল্প ২০১৬ সালের ৬ ডিসেম্বর একনেক সভায় অনুমোদিত হয়। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে নয় হাজার ৭৩৪ দশমিক শূন্য সাত কোটি টাকা।

চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে আরো জানানো হয়েছে, ৮ ফেব্রুয়ারি সিসিজিপি সভায় পরামর্শক ক্রয় প্রস্তাব মোট সমমূল্য ৭৪৭ কোটি ৫৮ লাখ লাখ টাকায় অনুমোদিত হয়েছে, যার মধ্যে আয়কর-ভ্যাট বাবদ ১৫৮ দশমিক ৯৪ কোটি টাকার সংস্থান রয়েছে। আর আজ পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে পরামর্শক সেবার জন্য রেলওয়ের সঙ্গে চুক্তিপত্র স্বাক্ষরিত হলো।

এ সময় আরো জানানো হয, পরামর্শক কর্তৃক বিশদ অনুসন্ধান করে ডিটেইল্ড ডিজাইন ও প্রাক্কলন প্রণয়নের পর মূল সেতুসহ অন্যান্য নির্মাণকাজ শুরু করা হবে।

‘বন্ধ স্টেশন দ্রুতই চালু হবে’
একই অনুষ্ঠানে রেলপথমন্ত্রী আরো বলেন, বন্ধ হয়ে যাওয়া রেল স্টেশনগুলো পর্যায়ক্রমে চালু করা হবে। এর মধ্যে কমপক্ষে ৬০টি স্টেশন দ্রুত চালু করা হবে।

রেলপথমন্ত্রী বলেন, চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণের জন্য প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এই সরকারের আমলে রেলের উন্নয়নে সব প্রকল্প শেষ করা হবে।

রেলপথের দৃশ্যমান উন্নয়ন করা হবে।

মন্ত্রী আরো বলেন, সরকার সারা দেশের রেল যোগাযোগ উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। নতুন নতুন লাইন নির্মাণ করা হচ্ছে। কোচ আনা হচ্ছে। সবকিছুর উদ্দেশ্য যাত্রীদের সেবা বাড়ানো। আগামী দুই বছরের মধ্যে রেলের অনেক প্রকল্প শেষ হলে যাত্রীদের অধিকহারে সেবা দেওয়া সম্ভব হবে বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন।



মন্তব্য চালু নেই