‘বন্দুকযুদ্ধে’ ৩ শীর্ষ মানব পাচারকারী নিহত

কক্সবাজারের টেকনাফে পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত শীর্ষ তিন মানবপাচারকারী নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ পুলিশের তিন কর্মকর্তা।

শুক্রবার ভোরে টেকনাফ সমুদ্র সৈকতের হ্যাচারি এলাকায় ‘বন্দুকযুদ্ধে’ জাহাঙ্গীর, ধলু ও জাফর নিহত হন।

টেকনাফের শাহপরীরদ্বীপ বাজারপাড়া এলাকার মৃত সোলতান আহমদের ছেলে ধলু হোসেন (৪৫), কাটাবুনিয়া এলাকার আবদুল মাজেদের ছেলে জাহাঙ্গীর আলম (৪০) ও হারিয়ারখালী এলাকার কবির আহমদের ছেলে জাফর আলম (৩৯)।

টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আতাউর রহমান খোন্দকার জানান, সাগর পথে মালয়েশিয়ায় মানবপাচারের সংবাদ গোপনে পেয়ে ভোর সাড়ে ৪ টার দিকে টেকনাফ সমুদ্র সৈকতের হ্যাচারি এলাকায় পুলিশ অভিযানে যায়। পুলিশের অবস্থান টের পেলে মানবপাচারকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি করে। পুলিশও আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি করে। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী গুলির পর মানবপাচারকারীরা পালিয়ে গেলে ঘটনাস্থলে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তিনজনের মৃতদেহ পাওয়া যায়। এতে তিনিসহ পুলিশের তিন কর্মকর্তা আহত হন।

তিনি জানান, নিহতদের বিরুদ্ধে মানবপাচারে অভিযোগে ১৮টি করে মামলা রয়েছে। মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

ওসি আরো জানান, ঘটনাস্থল থেকে দুটি দেশীয় তৈরি এলজি বন্দুক, ১০ রাউন্ড কার্তুজ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় পালিয়ে যাওয়া নিহতদের সহযোগীসহ অন্যদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

সম্প্রতি মালয়েশিয়া সীমান্তের কাছে থাইল্যান্ডের সংখলা প্রদেশে পাহাড়ি জঙ্গলে বন্দি শিবিরের খোঁজ পায় পুলিশ। গত ১ মে এক শিবিরে একটি গণকবর থেকে ২৬ জনের দেহাবশেষ উদ্ধার করা হয়।

এই বন্দিশিবিরে পাচার বা অপহরণের শিকার হওয়া পাঁচ শতাধিক অভিবাসীকে মেরে ফেলা হয়ে থাকতে পারে বলে বেঁচে যাওয়া একজনের বরাত দিয়ে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে।

এসব বন্দির অধিকাংশ মিয়ানমারের রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশি বলেও এসব প্রতিবেদনে বলা হয়।

ওই খবর প্রকাশের পর বিষয়টি নিয়ে আলোচনার মধ্যে গত মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল সাংবাদিকদের বলেন, ‘থাইল্যান্ডে অবৈধভাবে যারা লোক পাঠিয়েছেন, সেসব অপরাধীদের খুঁজে বের করে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

গত বছর জাতিসংঘের উদ্বাস্তুবিষয়ক হাইকমিশনের (ইউএনএইচসিআর) বার্ষিক প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৩ সালের জুলাই থেকে ২০১৪ সালের জুন পর্যন্ত মালয়েশিয়ার উদ্দেশে বঙ্গোপসাগর দিয়ে অবৈধভাবে গেছেন ৫৩ হাজার লোক। আগের বছর এ সংখ্যা ছিল প্রায় ৩৩ হাজার। অক্টোবর থেকে জানুয়ারি মাসে সবচেয়ে বেশি পাচারের ঘটনা দেখা গেছে।

সমুদ্রপথে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত হয়ে এক বছরের ব্যবধানে মানব পাচার বেড়েছে ৬১ শতাংশ। প্রধানত মালয়েশিয়ার উদ্দেশে পাচার হওয়া এসব মানুষের মধ্যে বাংলাদেশিদের পাশাপাশি রোহিঙ্গাও রয়েছে।



মন্তব্য চালু নেই