বন্যা পরিস্থিতি আগ্রাসী রূপ নিচ্ছে

নওগাঁর ছোট যমুনা ও আত্রাই নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যহত থাকায় রাণীনগর উপজেলার সাতটি ইউনিয়নে বন্যা পরিস্থিতি আগ্রাসী রুপ নিচ্ছে। দফায় দফায় পানি বৃদ্ধি পেয়ে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের উচু ভিটা ও চলতি মৌসুমের রোপা-আমন ধানের জমি তলিয়ে যাচ্ছে। নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হওয়ায় স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসায় পানি ঢোকায় বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদের নিরাপত্তার কথা ভেবে বন্ধ ঘোষানা করা হয়েছে।

এপর্যন্ত জানা গেছে, রাণীনগর-আত্রাই সড়কের পূর্ব মিরাপুর নামক স্থানে গত ২৪ আগষ্ট ভোরে পানির চাপে সড়কটি ভেঙ্গে গেলে রাণীনগর উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের মধ্যে ৭টি ইউনিয়নের প্লাবিত হওয়ায় পীরেরা, লক্ষীপুর, ভবানীপুর, সর্বরামপুর, গোনা, বইনা, চক, সিংড়াডাঙ্গা, সিম্বা, লোহাচূড়া, ছয়বাড়িয়া, গৌরদীঘি, খাগড়া, বড়গাছা, গহেলাপুর, শফিকপুর, বোদলা, পালশা, বড়িয়া, কচুয়া, দৌলিয়া সহ ৭০ টি গ্রামের প্রায় ৫০হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। এসব মানুষের কাজকর্ম না থাকায় কর্মহীন হয়ে পড়ায় খাদ্য ও ত্রান সংকট সহ নানা কারণে চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। হাজার হাজার হেক্টর জমির চলতি মৌসুমে রোপা-আমন ধান ও মৌসুমি সবজির ক্ষেত তলিয়ে গেছে। বাড়িঘরে বন্যার পানি ঢোকাই অনেক পরিবার এখন স্থাণীয় ইউনিয়ন পরিষদ ও একে অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে। বাঁধ ভেঙ্গে বন্যায় পানিবন্দী মানুষের মাঝে কিছু কিছু সরকারি সাহায্য পৌছলেও অনেক স্থানেই তা পৌছেনি। ফলে মানবেতর জীবন যাপন করছে পানিবন্দী ও বানভাসী এসব লোক-জন। বন্যার পানিতে দেখা দিয়েছে পানিবাহিত নানা রোগ, সাপের উপদ্রপ। প্রায় ১৩দিন অতিবাহিত হলেও ভাঙ্গন কবলিত স্থানে নওগাঁর পানি উন্নয়ন বোর্ড ও সড়ক ও জনপথ বিভাগের পক্ষ থেকে বাঁধ দেওয়ার কোন উদ্যোগ চোখে পড়ছে না। তবে তাদেরকে মাঝে মধ্যে ভাঙ্গন কবলিত স্থানে নৌকা ভ্রমনে টোহল দিতে দেখা যায়। পানিবন্দী মানুষের দূর্ভোগ লাঘবের জন্য দৃশ্যমান কোন তৎপরতা সংশ্লিষ্টদের নেয় বলে অভিযোগ উঠছে। রাণীনগর উপজেলায় এপর্যন্ত প্রায় ২৭কি:মি: রাস্তা, বাঁধ কাম-রাস্তা ১২কি:মি:, ২৫০টি গভীর-অগভীর নলকূপ, পানিবন্দী ৫০হাজার সহ ৭হাজার ৪শ’ পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়াও নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হওয়ায় এপর্যন্ত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৬টি, কলেজ ও উচ্চ বিদ্যালয় ১০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদের নিরাপত্তার কথা ভেবে বন্ধ ঘোষনা করা হয়েছে।

কাশিমপুর ইউপি চেয়ারম্যান মোকলেছুর রহমান বাবু জানান, বন্যা দাপটে যে পরিমান এলাকায় ক্ষতি হচ্ছে চাহিতার তুলনায় ত্রান সামগ্রী অনেক কম পাচ্ছি। এপর্যন্ত ৩টন চাল সরকারি বরাদ্দ পেয়েছি তা ইতিমধ্যেই বিতরণ করা হয়েছে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মেহেদী হাসান জানান, দফায় দফায় পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় রাণীনগর উপজেলায় ৭টি ইউনিয়নের মানুষ পানিবন্দী হয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছে। বন্যার ক্ষতি দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্তদের পরিবারদের মাঝে এপর্যন্ত ৪০ মেট্রিক টন চাল ও ৫৩ হাজার টাকা দূযোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রান মন্ত্রালয় হতে জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে বরাদ্দ পেয়ে বিতরণ করা হয়েছে। অতিরিক্ত আরো অনুদানের চাহিদাপত্র দিয়েছি।



মন্তব্য চালু নেই