বর্ষবরণ: কঠোর নিরাপত্তায় প্রস্তুত রমনা

২০০১ সালে রমনার বটমূলে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বোমা হামলার সময় সুমন দাস ছিলেন শিশু। রাজধানীর বেইলী রোডের বাসা থেকে ভয়াবহ সেই বোমা বিস্ফোরণের শব্দ শুনে আ‍ঁতকে উঠেছিলেন তিনি। ভয়ে ঘর থেকে বের হননি সুমন।

১৫ বছর পর সেই সুমন এখন পুলিশ কর্মকর্তা। বর্ষবরণের ডিউটিও পড়েছে রমনা বটমূলেই। পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠানের তদারকি করছেন তিনি।মঙ্গলবার (১২ এপ্রিল) রাত ১১টার দিকে রমনা বটমূলের দিকে এগিয়ে যেতে চাইলে পরিচয় জানতে চাইলেন। দেখে নিলেন ‍পরিচয়পত্রও। এরপর ঘুরে দেখার সুযোগ করে দিলেন।

এতো রাতে সাধারণ পোশাকে মঞ্চের আশেপাশে কারা ঘুরছে, সিসিটিভি ক্যামেরায় তা দেখা গেলে যাতে কোনো প্রশ্নের মুখোমুখি হতে না হয়; সেজন্য সঙ্গেই থাকলেন তিনিও।

বললেন, রমনা বটমূলসহ পার্কের কোনো এলাকা পুলিশের পর্যবেক্ষণের বাইরে নয়।
এর আগে পার্কের প্রবেশ পথে রাতের ডিউটিতে থাকা র‌্যাব সদস্যরা জানান, রমনা পার্কের ৮টি গেট ধরে র‌্যাব-পুলিশের চেকিং শেষ করেই দর্শনার্থীদের মেলায় প্রবেশ করতে হবে। তিনটি ওয়াচ টাওয়ার থেকে রমনা পার্কের অনুষ্ঠানস্থল পর্যবেক্ষণ করবে র‌্যাব।

পাশাপাশি আছে, পুলিশের ওয়াচ টাওয়ারও। শুধু গেট থেকে বটমূল পর্যন্ত যেতেই ৬টি ওয়াচ টাওয়ার চোখে পড়লো। যেগুলোর কাজ প্রায় শেষ।

এই ওয়াচ টাওয়ার থেকে প্রায় ৩০০ গজ পর্যন্ত স্বাভাবিক দৃষ্টিতে দেখা যাবে। একটি ওয়াচ টাওয়ার থেকের আরেকটির দূরত্ব এ রকম।

পুরো পার্ক এলাকা চারটি মনিটর জুড়ে ৮০টি সিসিটিভি ক্যামেরা দিয়ে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। এরই মধ্যে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানোর ও মনিটর সেন্টারের কাজ করছে এ টেকনোলজি লিমিটেড।
এই প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা জানান, ৮০টি সিসিটিভি ক্যামেরা পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। এর মধ্যে ৬৪টি রমনার ভেতরে বাকি ১৬টি শেরাটন হোটেল কেন্দ্রিক। একই প্রতিষ্ঠান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকাতেও সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনের কাজ করছে বলে জানান কর্মকর্তারা।

এবার এগিয়ে যাওয়া যাক নববর্ষের অনুষ্ঠানের মূল মঞ্চের দিকে। মঞ্চের সামনে বেশ ফাঁকা জায়গা রেখে বাঁশের ব্যারিকেড। পরে নিজে সঙ্গে থেকেই বটমূল মঞ্চ ঘুরে দেখালেন রমনার থানা উপ-পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) সুমন দাস।

জানালেন, পহেলা বৈশাখের দিনও এই একই স্থানে তার ডিউটি পড়েছে। ১৯৮৬ সালে রমনা পার্কের অদূরে বেইলী রোডে তার জন্ম। বেড়ে ওঠা ঢাকাতেই। এজন্য ছোটবেলা থেকেই বন্ধুদের নিয়ে রমনা পার্কের মেলায় এসেছেন।

এসআই সুমন বলেন, এবার বর্ষবরণের অনুষ্ঠান চলাকালে রমনা পার্কের ভেতরে কোনো হকার ঢুকতে না দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। হকার উচ্ছেদের জন্যও রয়েছে আলাদা পার্টি।



মন্তব্য চালু নেই