বাঁশের রেল, স্টেশনও বাঁশের, অবাক হচ্ছেন!

একবিংশ শতাব্দীতে এসে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ পাল্লা দিয়ে রেলের গতি বাড়িয়েই চলেছে। বিশ্বের সবচেয়ে গতিশীল ট্রেনের শিরোপা জয়ে মেতে উঠেছে তারা। তবে এখনো এমন অনেক জায়গা আছে, যেখানে রেল ব্যবস্থা প্রাগৈতিহাসিক যুগের। কম্বোডিয়ার ব্যাটমব্যাং ও পইপেট ঘিরে বিস্তৃত রেললাইন তার অন্যতম উদাহরণ। এই লাইনে চলে বাঁশের রেল। এমনকি স্টেশনও পুরোটাই বাঁশের।

কম্বোডিয়ার বাঁশের তৈরি এই রেলকে বলা হয় ‘নরি’। তবে এটা বাঁশের ট্রেন নামেই পরিচিত বিশ্বের কাছে। মিটারগেজ ট্র্যাকে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৫০ কিলোমিটার বেগে চলে এই ট্রেন। তবে বুলেট ট্রেনের মতো এই রেলে চড়ার কৌতূহল কম নয় পর্যটকদের।

২০০৬ সালে বিবিসির একটি রিপোর্টে বলা হয়, সপ্তাহে একদিন চলে এই ট্রেন। তবে চলতি বছরের মাঝামাঝি থেকে প্রতিদিনই এই পরিসেবা দেয়া শুরু হয়েছে। ২০১৬ সালের আগস্টে চালু হয় ট্রেনের ব্রেক সিস্টেম। পরিকাঠামোর অভাব সত্ত্বেও এর জনপ্রিয়তা চোখে পড়ার মতো।

সিঙ্গেল লাইনে যখন মুখোমুখি হয়ে পড়ে দুই ট্রেন, সেসময় একটি ট্রেনকে লাইন থেকে সরানো হয়। ট্রেনগুলো সম্পূর্ণ বাঁশের তৈরি। চেষ্টা করা হয় ট্রেনটির ওজন হালকা রাখার, যাতে সুবিধা মতো ট্রেনকে লাইন থেকে সরানো যায়।

মাথাপিছু ভাড়া পাঁচ ডলার করে নেয়া হয় যাত্রীদের কাছ থেকে। তিন মিটার লম্বা কাঠের ফ্রেমে তৈরি করা হয় বাঁশের পাটাতন। শক্তি উৎপাদনের জন্য ব্যবহার করা হয় ওয়াটার পাম্প বা গ্যাসোলিন ইঞ্জিন।

এই রেল সম্বন্ধে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘আমি প্রতিদিন বাঁশের ট্রেন ব্যবহার করি, কারণ এর থেকে নিরাপদ যাতায়াত আর নেই। মোটরবাইকে চড়লে ঘুমানো যায় না, দূরে কোথাও গেলে ট্রেনে এক ঘুম অনায়াসে দেয়া যায়।’

বাঁশের ট্রেন চলাচলে সরকারের তেমন নিয়ন্ত্রণ না থাকায় স্থানীয় বাসিন্দারাই এই লাইনে বাঁশের ট্রেন চালিয়ে থাকে।তবে পরিত্যক্ত রেল নেটওয়ার্কেই চলাচল করে বাঁশের রেল। গোটা কম্বোডিয়ায় ৬১২ কিলোমিটার জুড়ে এই রেলপথ বিস্তৃত। সূত্র: বিবিসি



মন্তব্য চালু নেই