বাংলাদেশের গণতন্ত্র নিয়ে ‘উদ্বিগ্ন’ ব্রিটেন

বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক পরিবেশ সম্পর্কে ব্রিটিশ লেবার পার্টি উদ্বিগ্ন বলে জানিয়েছে বিএনপি। তবে গণতন্ত্রের কোন দিক নিয়ে তারা উদ্বেগ প্রকাশ করেছে তা স্পষ্ট করেনি দলটি।

বিএনপির প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বাংলাদেশ সফররত ব্রিটিশ লেবার পার্টির প্রতিনিধি দলের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান এ কথা জানিয়েছেন।

মঈন খান বলেন, ‘একাত্তর সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্ট ও বিবিসি বিশেষ ভূমিকা পালন করেছিল। এই কারণে যে, আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের মূল উপজীব্য ছিল গণতন্ত্র। সেই কারণে তারা (ব্রিটেন) আজ বাংলাদেশের গণতন্ত্র সম্পর্কে উদ্বিগ্ন।’

বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে মঙ্গলবার বিকেল ৩টা ১০ মিনিটে এ বৈঠক শুরু হয়ে শেষ হয় বিকেল সোয়া ৪টায়।

বৈঠকে দশ সদস্যের ব্রিটিশ লেবার পার্টির প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন দেশটির বিশিষ্ট পার্লামেন্টারিয়ান হাওয়ার্ড ডবার। প্রতিনিধি দলে আরো ছিলেন- এমপি কেইর স্টারমার, এমপি স্টিফেন টিমস প্রমুখ।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলে উপস্থিত ছিলেন- দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান বেগম সেলিমা রহমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

ব্রিটিশ প্রতিনিধি দল সম্পর্কে ড. মঈন খান বলেন, ‘ব্রিটিশ পার্লামেন্টের বিরোধী দল লেবার পার্টির একটি সংগঠন রয়েছে। সেটি হচ্ছে ‘লেবার ফ্রেন্ডস অব বাংলাদেশ’। সেই সংগঠনের ১০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল এখন বাংলাদেশ সফর করছে। এই প্রতিনিধি দলে অনেক সদস্য রয়েছেন, যারা আগে মন্ত্রী ছিলেন।’

তিনি বলেন, ‘বৈঠকে প্রতিনিধি দলের সদস্যরা বাংলাদেশের রাজনীতির চিত্র সম্পর্কে আমাদের কাছে বিভিন্ন তথ্য জানতে চান। আমরা বলেছি- বাংলাদেশে এখন গণতন্ত্র নেই। বিরোধী দলকে কোনো গণতান্ত্রিক স্পেস দেয়া হচ্ছে না।’

এ প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, ‘ব্রিটিশ লেবার পার্টির প্রতিনিধি দলের সদস্যরা যেহেতু নিজেরা রাজনীতিক, সুতরাং বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি যে স্বাভাবিক নয়- সেটা তারা বুঝতে পারেন।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, ‘বৈঠকে তারা আমাদের কাছে উন্নয়নের বিষয় সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। আমরা তাদেরকে বলেছি- গণতন্ত্রকে বাদ দিয়ে টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়। তাই আগে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে হবে।’

তিনি আরো বলেন, ‘বৈঠকে গণতান্ত্রিক পরিবেশ প্রতিষ্ঠার বিষয়টি আলোচনায় এসেছে। প্রতিনিধি দলের সদস্যরা জানতে চেয়েছেন- বর্তমান পরিস্থিতিতে কিভাবে সামনের দিকে এগুতে হবে? আমরা বলেছি- প্রথমে গণতান্ত্রিক পরিবেশকে পুনরুদ্ধার করতে হবে। এটাই এখন সবচেয়ে জরুরি। সরকার ও বিরোধী দলের মধ্যে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরিয়ে এনে অংশগ্রহণমূলক গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে।’

ব্রিটিশ লেবার পার্টির বাংলাদেশ সফর প্রসঙ্গে ড. মঈন খান বলেন, ‘বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে তারা বাংলাদেশে এসেছেন। প্রতিনিধি দলটি সরকারের সঙ্গে কথা বলেছে। আজকে বিরোধী দল বিএনপির সঙ্গে আলোচনা করেছে। বিএনপি সত্যিকারের বিরোধী দল বলেই তারা আমাদের সঙ্গে আলোচনা করেছে।’

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে ব্রিটিশ লেবার পার্টির প্রতিনিধি দলের বৈঠক হওয়ার কথা থাকলেও তিনি কেন বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন না? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের সরাসরি জবাব এড়িয়ে গিয়ে ড. মঈন খান বলেন, ‘ব্রিটিশ লেবার পার্টির প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকে বিএনপির পক্ষে কারা উপস্থিত থাকবেন তা দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াই ঠিক করে দিয়েছেন। তাছাড়া বিদেশি কোনো প্রতিনিধি দলের সাথে বৈঠকে কারা উপস্থিত থাকবেন, সেটি পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে।’



মন্তব্য চালু নেই