বাংলাদেশের পল্লীফোন এখন স্কটল্যান্ডের জাদুঘরে

ঝুলন্ত অবস্থায় রাখা নকিয়া ৩৩১০সহ আরও কয়েকটি মডেলের ফোনের বিবরণ জাদুঘরে রাখা পল্লীফোনের সাইনবোর্ড। সাইনবোর্ডের নিচে পল্লীফোন গ্রহীতা এলিজা বেগমের নাম ও বিবরণ। গ্রামীণফোনের একদা জনপ্রিয় পল্লীফোন এখন শোভা পাচ্ছে স্কটল্যান্ডের জাতীয় জাদুঘরে।

প্রতিদিনই নজর কাড়ছে বিভিন্ন দেশের দর্শনার্থীদের। মানুষের জীবনমান পরিবর্তনের মাধ্যমে একটি মোবাইল ফোন কীভাবে ছড়িয়ে যেতে পারে প্রত্যন্ত এলাকায় তার জ্বলন্ত উদাহরণ বাংলাদেশের পল্লীফোন।

১৯৯৭ সালে বাংলাদেশে সর্বজনীনভাবে মোবাইল ফোনসেবা চালু করে গ্রামীণফোন। এর আগে সিটিসেল কোম্পানি সর্ব প্রথম মোবাইল ফোন নিয়ে এলেও বেশি দামের কারণে তা সর্বসাধারণের জন্য সহজলভ্য ছিল না।

পল্লীফোনের বৈশিষ্ট্য ছিল এ ফোন শুধুমাত্র গ্রামীণ ব্যাংকের নারী সদস্যরাই নিতে পারতেন গ্রামীণফোন থেকে। এই ফোন ছিল ব্যবসা করার জন্য। মিনিট প্রতি ধার্য করা ফি ছিল প্রচলিত ফোন থেকে অনেক কম। যাতে ব্যবসায়ের মাধ্যমে দরিদ্র নারীরা তাঁদের ভাগ্যকে পরিবর্তন করতে পারেন।

এডিনবরায় অবস্থিত স্কটল্যান্ডের জাতীয় জাদুঘর প্রায় পাঁচ বছরের উন্নয়নকাজের পর গত ৮ জুলাই দর্শনার্থীদের জন্য অবমুক্ত করা হয়। উন্নয়নকাজের খরচ পড়ে প্রায় ৫০ মিলিয়ন পাউন্ড। জাদুঘরকে নতুন রূপে সাজানোর প্রয়াস হিসেবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সমসাময়িক বিষয়গুলোকে প্রাধান্য দেওয়া হয়। এরই প্রেক্ষিতে জাদুঘর কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশের গ্রামীণফোনের সঙ্গে যোগাযোগক্রমে পল্লীফোনের তথ্যাবলি সংগ্রহ করেন।

পল্লীফোন স্থান পেয়েছে জাদুঘরের লেভেল ৩ টেকনোলজি বাই ডিজাইন গ্যালারিতে। এই গ্যালারিতে ফোনের পর্যায়ক্রমিক বিবর্তন দেখানো হয়েছে। পল্লীফোনের বড় একটি সাইনবোর্ড রাখা হয়েছে ডিসপ্লে কেসে। এর নিচে আছে এলিজা বেগম নামে একজন পল্লীফোন গ্রহীতার নাম ও বিবরণ। সামনে ঝুলন্ত অবস্থায় আছে সে সময়ের বহুল প্রচলিত নকিয়া ৩৩১০সহ আরও কয়েকটি মডেলের ফোন।

টেকনোলজি বাই ডিজাইন গ্যালারি সম্পর্কিত তথ্যস্কটল্যান্ডের এই জাদুঘরে আরও আছে পাকিস্তান আমলে বাংলাদেশ থেকে রপ্তানিকৃত পাট ডান্ডির কারখানাগুলোতে যেভাবে প্রস্তুত করা হতো তার ভিডিওচিত্র। এটি শোভা পাচ্ছে লেভেল ৬-এ। এ ছাড়া ভারতীয় উপমহাদেশের অসংখ্য সংগ্রহ রয়েছে প্রদর্শনীর তালিকায়।-প্রথম আলো



মন্তব্য চালু নেই