‘বাংলাদেশ আওয়ামী শিশু লীগ’ নামের একটি সংগঠনের হদিস পাওয়া গেছে

আওয়ামী লীগ, বঙ্গবন্ধু, বঙ্গমাতা ও জাতির পিতার নামে গড়ে ওঠা শতাধিক সংগঠনের ন্যায় ‘বাংলাদেশ আওয়ামী শিশু লীগ’ নামের একটি সংগঠনের হদিস পাওয়া গেছে।

সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা ও ডেমরা থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. ফয়সাল আহাম্মদ মুন্সী দুই বছর ধরে সংগঠনটির কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানান।

ফয়সাল বলেন, “আজকের শিশু আগামীর ভবিষ্যত। প্রত্যেক বাবা-মা শিশুদের ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন দেখায়। কিন্তু নেতা হবার, বঙ্গবন্ধুর মত হবার স্বপ্ন কেউ দেখায় না।

“তাই তাদেরকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে ছোট সময় থেকেই গড়ে তুলে নেতা বানানোর জন্য আমি এই উদ্যোগ নিয়েছি। আমাদের এই সংগঠন থেকেই আগামীতে কেউ না কেউ বঙ্গবন্ধু হয়ে উঠবে, জাতির হাল ধরবে।”

শিগগির কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা দিয়ে জাতীয় প্রেসক্লাবে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য কর্মসূচি দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

ফয়সাল বলেন, “ইতোমধ্যে কেন্দ্রীয় কমিটির ফরমেট তৈরি হয়ে গেছে। ডেমরার তিনটি ইউনিয়নের কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। ডেমরার আমতলা ইউনিয়ন শিশু লীগের সভাপতি ইভান।”

প্রথম শ্রেণি থেকে অষ্টম শেণিতে পড়ুয়া শিক্ষার্থীরাই কেবল শিশু লীগ করতে পারবে বলে জানান তিনি।

শিশুলীগের বিষয়ে ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে না জানানোর পরামর্শ দেন সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা ডেমরা থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক। তবে আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ শিশু লীগের জন্মের কথা জানেন বলেও দাবি করেন তিনি।

“স্থানীয় এমপির নাতিকে শিশুলীগের সভাপতি করার পরিকল্পনা রয়েছে। আমতলা ইউনিয়নের সভাপতি ইভানকে ইতোমধ্যে আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদকের সঙ্গে স্থানীয় অনুষ্ঠানে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়। এসময় তিনি মাথায় হাত বুলিয়ে বলেছেন- ‘এগিয়ে যাও’।”

সংগঠনের তহবিল কোথা থেকে আসে জানতে চাইলে ফয়সাল আহাম্মদ বলেন, তার ব্যক্তিগত তহবিল থেকে আপাতত চালানো হচ্ছে। এখন ব্যবসা ভালো না থাকায় কাজ এগোচ্ছে না। সামনে দলের অনুমতি পেলে অন্যান্য সংগঠনের মত চলবে।

রাজনীতিতে শিশুদের ব্যাবহার করার বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাননি তিনি।

“আমরা নিতে না চাইলেও অনেক সময় আমাদের সঙ্গে চলে আসে তারা। শোক দিবসে শিশুদের নিয়েও প্রোগ্রাম করি। শিশু লীগের সদস্যদের ভাল ফলাফলের ভিত্তিতে পুরস্কার দেওয়ার ব্যবস্থাও আমি করেছি।”

পূর্ণাঙ্গ কমিটি হওয়ার পর উপদেষ্টা পরিষদে থাকার আগ্রহ প্রকাশ করেন ফয়সাল আহাম্মদ মুন্সী।

‘বাংলাদেশ আওয়ামী শিশু লীগ’ নামে গড়ে উঠা সংগঠনের ব্যাপারে দলের অবস্থান জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, “এ ধরনের ‘ফালতু’ সংগঠনের ব্যাপারে আমার কোনো মন্তব্য নেই।”

গঠনতন্ত্র অনুযায়ী আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনগুলো হচ্ছে যুবলীগ, কৃষক লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ, যুব মহিলা লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ ও তাঁতী লীগ। ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠনের স্বীকৃতি রয়েছে ছাত্রলীগ ও শ্রমিক লীগের।

শিশুদের রাজনৈতিক আন্দোলনে ব্যবহার করায় ২০১৩ সালে উদ্বেগ প্রকাশ করে ইউনিসেফ।

ওই সময় এক বিবৃতিতে সংস্থাটি বলে, “রাজনৈতিক সুবিধা অর্জনের জন্য শিশুদের ব্যবহার অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। শিশুদের বিপদমুক্ত রাখতে হবে।” বিডিনিউজ24



মন্তব্য চালু নেই