বাংলাদেশ ব্যাংকের অর্থ চুরির পেছনে সার্ভার সমস্যা?

বাংলাদেশের তদন্তকারীরা বলছেন আর্থিক লেনদেনের বার্তা আদান-প্রদানকারী আন্তর্জাতিক মাধ্যম সুইফ্‌টের কাজে গাফলতির কারণেই বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্ভার অরক্ষিত হয়ে পড়েছিল। এজন্যই ব্যাংকের রিজার্ভের অর্থ চুরি হয়ে থাকতে পারে কর্মকর্তারা ধারণা করছেন। খবর- বিবিসি বাংলা।

তদন্ত-সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা সোমবার বিবিসিকে জানিয়েছেন, এ বিষয়গুলো তারা বাংলাদেশ ব্যাংক এবং সুইফ্‌ট কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন।

কিভাবে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের অর্থ চুরি হলো সেটি উদঘাটনের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের পুরো অনলাইন ব্যবস্থা এবং কর্মকর্তাদের ল্যাপটপও পরীক্ষা করা হচ্ছে। এই তদন্তে যিনি নেতৃত্ব দিচ্ছেন তিনি হচ্ছেন সিআইডি’র অতিরিক্ত উপ-মহাপরিদর্শক মোঃ: শাহ আলম।

তিনি বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন সুইফ্‌টের কাজে তারা কিছু ত্রুটি চিহ্নিত করেছেন। মি. আলম বলেন, “২০১৫’র মাঝামাঝি সময় থেকে অক্টোবর-নভেম্বর পর্যন্ত সুইফ্‌টের টেকনিশিয়ানরা বাংলাদেশে কাজ করে গেছে। তখন তাদের কাজের মধ্যে আমরা বেশ কিছু লুপহোল (ত্রুটি) আমরা পেয়েছি।”তবে কী ধরনের ত্রুটি চিহ্নিত করা হয়েছে সে বিষয়ে তিনি কিছু বলেননি।

তদন্তকারীরা বলছেন, সুইফ্‌টের ‘অবহেলার’ কারণে বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্ভার অরক্ষিত হয়ে পড়েছিল বলে তাদের ধারনা।

তদন্ত-সংশ্লিষ্ট আরেকজন কর্মকর্তা বলেছেন, সুইফ্‌টের ভুলের কারণে বাংলাদেশ ব্যাংকের সুইফ্‌ট মেসেজিং সিস্টেম সহজেই উন্মুক্ত হয়ে যায়। কিন্তু এ ধরনের ত্রুটি চিহ্নিত করতে বাংলাদেশ ব্যাংকের কি কোন সক্ষমতা নেই? এ বিষয়ে কর্মকর্তারা কোন মন্তব্য করতে রাজী হননি।

ব্যাংকিং বিষয়ে বিশ্লেষক এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খন্দকার ইব্রাহিম খালেদ মনে করেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের এ ধরনের সামর্থ্য আছে কিনা সেটি নিয়ে তার সন্দেহ আছে। মি. খালেদ বলেন, “যন্ত্রের পেছনের মানুষগুলো, যারা যন্ত্রকে চালাবে, তাদেরকে রিস্ক ম্যানেজমেন্টের জন্য উপযুক্ত করে তোলা হয়নি।”

তিনি বলেন, যন্ত্রপাতি ক্রয় করা এবং মানবসম্পদ গড়ে তোলা দুটো ভিন্ন বিষয়। প্রযুক্তি স্থাপনের জন্য অনেক টাকা ব্যয় করা হলেও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রশিক্ষণের জন্য খুব কম অর্থ ব্যয় করা হয়।

তদন্তকারী একজন কর্মকর্তা বলছেন, আর্থিক লেনদেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সাধারণত সুইফ্‌ট যে ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করে বাংলাদেশে ব্যাংকের ক্ষেত্রে সেটি পুরোপুরি হয়নি।

তিনি জানান, বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক এবং সুইফ্‌টের কর্মকর্তাদের সাথে তাদের কথা হয়েছে।
এদিকে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, এ বিষয়ে কথা বলার জন্য সুইফ্‌টের কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা কোন মন্তব্য করতে রাজী হননি।

অন্যদিকে, সুইফ্‌টের কর্তাব্যক্তিদের সাথে বৈঠক করতে বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি দল সুইজারল্যান্ড পৌঁছেছে।



মন্তব্য চালু নেই