বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্ণরের সাথে এফবিসিসিআই পরিচালনা পর্ষদের মতবিনিময়

এফবিসিসিআই সভাপতি জনাব আবদুল মাতলুব আহমাদ, প্রথম সহ সভাপতি জনাব মোঃ শফিউল ইসলাম (মহিউদ্দিন), এফবিসিসিআই পরিচালকবৃন্দ এবং এফবিসিসিআইয়ের বিভিন্ন সদস্য সংস্থার প্রধানগন আজ বৃহস্পতিবার (৩/৩/২০১৬) বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্ণরের সাথে বাংলাদেশ ব্যাংক কার্যলয়ে এক মতবিনিময়ে মিলিত হন। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্ণর হিসেবে ব্যাংকিং খাতের উন্নয়ন ও দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে অপরিসীম অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ‘‘সেন্ট্রাল ব্যাংক গভর্ণর অব দ্যা ইয়ার-২০১৫’’ এবং ‘‘সেন্ট্রাল ব্যাংকার অব দ্যা ইয়ার-২০১৫’’ অর্জন করায় এফবিসিসিআই নেতৃবৃন্দ বেসরকারি খাতের পক্ষ থেকে মাননীয় গভর্ণরকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানান। এছাড়াও অন্যান্য অর্জনের পাশাপাশি দারিদ্র বিমোচন ও দরিদ্রদের উন্নয়নে অবদান রাখায় ‘‘গুসী ইন্টারন্যাশনাল পিস প্রাইজ-২০১৪’’ অর্জন করায় ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ অত্যন্ত গৌরাবান্বিত বলে উল্লেথ করেন।

এফবিসিসিআই সভাপতি জনাব আবদুল মাতলুব আহমাদ এর নেতৃত্বে এফবিসিসিআই পরিচালকবৃন্দ দেশের শিল্প ও বাণিজ্যের উন্নয়নে বিভিন্ন প্রস্তাব তুলে ধরেন। এফবিসিসিআই সভাপতি এসএমই খাত উন্নয়ন, মহিলা উদ্যোক্তাসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে টার্নওভার অনুযায়ী ব্যাংক কর্তৃক খাতভিত্তিক ঋন প্রদানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন,‘নন-পারফর্মিং লোনসমূহ’ এর ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন,চলতি মুলধনসহ সকল উৎপাদনশীল খাতে ঋনের সর্বোচ্চ সুদের হার প্রাক্কলিত কস্ট অব ফান্ড প্লাস ৩% এর মধ্যে সীমাবন্ধ রাখা এবং ব্যাংক ঋনের সুদের হার ‘সিঙ্গেল ডিজিট’ এ নামিয়ে আনার ব্যবস্থা গ্রহনের সুপারিশ করেন। জনাব আবদুল মাতলুব আহমাদ দেশের ৬৪ টি জেলা চেম্বাকে সম্পৃক্ত করে এসএমই তহবিল সম্প্রসারনের উপর গুরুত্ব আরোপ করেন।

এফবিসিসিআই প্রথম সহ সভাপতি তৈরি পোশাক খাতের শ্রমিকদের আবাসনের জন্য দ্রুত গৃহায়ন তহবিলের কার্যক্রম শুরুর ব্যাপারে অনুরোধ জানান। তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকের উদ্যোগে ‘রপ্তানি উন্নয়ন তহবিল’ (ইডিএফ) এর অর্থ ২০০ কোটি টাকায় উন্নীতকরণে মাননীয় গভর্ণরকে ধন্যবাদ জানান। এফবিসিসিআই পরিচালক আলহাজ্ব মোঃ বজলুর রহমান এসএমই খাতে অর্থায়নে আরো তৎপরতা বাড়াতে অনুরোধ জানান। এছাড়াও এফবিসিসিআই পরিচালক জনাব আক্তারুজ্জামান আসবাব শিল্প খাতে ক্যাশ ইনসেনটিভ বৃদ্ধির বিষয়টিতে মনযোগ আকর্ষন করেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্ণর ড. আতিউর রহমান তাঁর বক্তব্যে বলেন যে, বাংলাদেশ ব্যাংক তার কার্যক্রম আরো জনমূখী করে একটি উন্নয়ন সহায়তাকারী সংগঠনে পরিণত হয়েছে। ব্যাংক ঋনের সুদের হার কমানো,ক্ষুদ্র ও মাঝারি (এসএমই) খাতে প্রযোজনীয় অর্থায়ন, দেশের নারী উদ্যোক্তাদের ব্যবসা পরিচালনার ক্ষেত্রে জামানতবিহীন ঋন প্রদানের ব্যবস্থা ও তৈরি পোশাক খাতের শ্রমিকদের আবাসনের জন্য দ্রত গৃহায়ন তহবিলের কার্যক্রম শুরুসহ ব্যবসায়ীদের সহায়তায় বাংলাদেশ ব্যাংক নানা পদক্ষেপ গ্রহন করছে বলে তিনি জানান । তবে ব্যাংক ঋনের সুদের হার সার্বিকভাবে ‘সিঙ্গেল ডিজিট’ এ নামিয়ে আনার ক্ষেত্রে মূল্যস্থীতি নিয়ন্ত্রনে রাখাও একটি বড় বিষয় বলে তিনি উল্লেখ করেন। তবে তিনি বলেন যে, গত কয়েক বছরে খাদ্য মূল্যস্থীতি অনেক কম রয়েছে। এছাড়াও আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যমূল্য অনেক কম থাকায় আমদানির ক্ষেত্রে মূল্যস্থীতি বেশ কম। আর এ দু’টো বিষয় মিলে দেশে একটি ভারসাম্যপূর্ণ অর্থনীতি বজায় রয়েছে। বাজার-ভিত্তিক অর্থনীতিতে কোন কিছু চাপিয়ে দেওয়া যায় না,বরং মূল্যস্থীতি আরো নিয়ন্ত্রন করতে পারলে ধীরে ধীরে সুদের হার নেমে আসবে বলে তিনি জানান।

বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্ণর তাঁর বক্তব্যে আরো উল্লেখ করেন যে, ব্যবসায়ীরাই আমাদের বাঁচিয়ে রেখেছেন, তাই ব্যবসায়ীদেও বাচিয়ে রাখতে আমরা সহায়তা দিয়ে যাব। তিনি বিভিন্ন সামাজিক দায়বদ্ধতামূলক (সিএসআর) কার্যক্রমে ব্যবসায়ীদের ভুমিকার প্রংশসা করেন। এছাড়াও তিনি মোবাইল ফাইনান্সিয়াল সার্ভিস সম্প্রসারন এবং বেসরকারি খাতের কর্মীদের জন্য পেনশন তহবিল গঠনের উপরও গুরুত্ব দেন।

সভায় বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্ণর জনাব আবু হেনা মোঃ রাজী হাসান,মহা-ব্যবস্থাপক,উপ-মহাব্যবস্থাপকবৃন্দসহ উর্দ্ধতন কর্মকর্তাগন উপস্থিত ছিলেন।



মন্তব্য চালু নেই