বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার নিলেন ১১ জন

১১ লেখক, সাহিত্যিকের হাতে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার-২০১৫ তুলে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সোমবার বিকেলে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে অমর একুশে গ্রন্থমেলা-২০১৬ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এই পুরস্কার প্রদান করেন।

১০ ক্যাটাগরিতে এই পুরস্কার গ্রহণ করেন প্রাপ্ত কবি-সাহিত্যিকরা। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন এমিরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। এর আগে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান গত ২৮ জানুয়ারি এবারের পুরস্কারের জন্য মনোনীতদের নাম ঘোষণা করেন।

পুরস্কারপ্রাপ্তরা হলেন- কবিতায় আলতাফ হোসেন, কথাসাহিত্যে শাহীন আকতার, প্রবন্ধে যৌথভাবে আবুল মোমেন ও ড. আতিউর রহমান, গবেষণায় মনিরুজ্জামান, অনুবাদে আব্দুস সেলিম, মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক সাহিত্যে তাজুল মোহম্মদ, আত্মজীবনী, স্মৃতিকথা ও ভ্রমণকাহিনী ক্যাটাগরিতে ফারুক চৌধুরী, নাটকে মাসুম রেজা, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও পরিবেশে শরীফ খান ও শিশুসাহিত্যে সুজন বড়ুয়া।

পুরষ্কারপ্রাপ্তদের সংক্ষিপ্ত জীবনী

আলতাফ হোসেন: জন্ম ১৯৪৯ সালের ২৭ অক্টোবর। লেখাপড়া করেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে। কবিতার পাশাপাশি তিনি লিখেছেন গল্প ও প্রবন্ধ। তার বইগুলো হলো- লাজুক অক্টোপাস, ভূমধ্যসাগরে অন্ধ ঘূর্ণি যা বলুক, সঙ্গে নিয়ে চলে যাই পাহাড় চূড়োয়, বলি যে তারানা হচ্ছে, তারপর হঠাৎ একদিন মৌমাছি।

শাহীন আখতার: জন্ম ১৯৬২ সালে কুমিল্লার চান্দিনায়। লেখাপড়া করেছেন অর্থনীতিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। তার লেখা বইগুলো হলো, তালাশ, পালাবার পথ নেই, ময়ূর সিংহাসন ইত্যাদি।

আবুল মোমেন: ১৯৪৮ সালের ১৮ ডিসেম্বর চট্টগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। শিক্ষকতায় কর্মজীবনের শুরু হলেও পরে যোগ দেন সাংবাদিকতায়। শিক্ষা ও শিল্পকলা বিষয়ে তার একাধিক বই রয়েছে। রবীন্দ্র ভ্রমণ সাহিত্য সমগ্র (দুই খণ্ড), বাংলা ও বাঙালির কথা, কাগজের কুশীলব এবং বিজ্ঞানী মামা ও অপারেশন ফিউচার তার উল্লেখযোগ্য বই।

ড. আতিউর রহমান: ১৯৫১ সালে জামালপুরে জন্ম নেওয়া আতিউর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি পড়া শেষ করে ইউনির্ভাসিটি অব লন্ডন থেকে পিএইচডি করেন। বিআইডিএসের গবেষক হিসেবে কাজের পর পালন করেছেন জনতা ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব।

২০০৯ সালের ১ মে বাংলাদেশ ব্যাংকের দশম গভর্নর হিসাবে দায়িত্ব নেন আতিউর রহমান। তার লেখা বইগুলো হলো রবীন্দ্র চিন্তায় দারিদ্র ও প্রগতি। এছড়া ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়েও তার বেশ কয়েকটি বই প্রকাশিত হয়েছে।

মনিরুজ্জামান: ১৯৪০ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি জন্মগ্রহণ করা মনিরুজ্জামান গত শতকের ষাটের দশকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা সাহিত্যে পড়ার পর ভারতের মাইশুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভাষাবিজ্ঞানে পিএইচডি করেন। ভাষা, সাহিত্য ও ফোকলোর বিষয়ে ২৭টি বই ও শতাধিক গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে তার।

আবদুস সেলিম: ১৯৪৫ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর চুয়াডাঙ্গায় জন্মগ্রহণ করেন। ইংরেজি ভাষা ও ভাষাতত্ত্বের এই অধ্যাপক কাজ করছেন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে। বের্টোল্ড ব্রেখটের নাটক গ্যালিলিও, হিম্মতী মা, গোলমাথা চোখামাথা এবং তিন খণ্ডে সমাপ্ত ‘অনুবাদ নাটক সমগ্র তাঁর উল্লেখযোগ্য অনুবাদগ্রন্থ।

তাজুল মোহাম্মদ: মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়ায় জন্ম। তিনি মুক্তিযুদ্ধ ছাড়াও বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে নিয়ে বই লিখেছেন। তার বইগুলো হলো- সিলেটে গণহত্যা, একাত্তরে সিলেট: স্মৃতিকথা, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের খোঁজে, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের সন্ধানে এবং কুরুক্ষেত্রী সেনা ১৯৭১।

ফারুক চৌধুরী: ১৯৩৪ সালে আসামের করিমগঞ্জে জ্ন্মগ্রহণ করা ফারুক চৌধুরীর পৈত্রিক বাড়ি সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলায়। স্মৃতিকথা ও ভ্রমণবিষয়ক তার একাধিক বই রয়েছে।

মাসুম রেজা: জন্ম কুষ্টিয়া শহরে। তার লেখা ঊল্লেখযোগ্য মঞ্চ নাটকের মধ্যে রয়েছে বিরসা কাব্য, নিত্যপূরাণ, আরজ চরিতামৃত, জল বালিকা, শামুকবাস।

শরীফ খান: পাখি ও বন্যপ্রাণী বিশেষঞ্জ শরীফ খানের দীর্ঘ গবেষণার ফল `হালতি পাখির বাসা` ও `বড় হালতির ছানা` শীর্ষক দুটি প্রামাণ্য চলচ্চিত্র। তিনি বাংলাদেশ শিশু একাডেমি প্রকাশিত আট খণ্ডের শিশু বিশ্বকোষের অন্যতম প্রদায়ক। পরিবেশ ও বণ্যপ্রাণী বিষয়ক আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান আইইউসিএন প্রকাশিত পাখি ও বন্য প্রাণী বিষয়ক `রেড ডাটা বুক` এর প্রকাশনাতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে শরীফ খানের।

সুজন বড়ুয়া: সুজন বড়ুয়ার জন্ম চট্টগ্রামের ফটকছড়িতে। তার লেখা বইগুলো হলো আকাশ আমার আয়না, আকাশ আমার সাগর আমার, ‌কিশোর প্রবন্ধ সমগ্র, দেবতার রাজ্যে ছেলেটি।



মন্তব্য চালু নেই