বাজপেয়ির হাতে বাংলাদেশের সম্মাননা

ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারি বাজপেয়িকে দেওয়া ‘বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ সম্মাননা’ তার পরিবারের কাছে তুলে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের পক্ষে ভূমিকা রাখায় বাজপেয়িকে এ সম্মাননা দেওয়া হয়। ঢাকা সফরকালে বাজপেয়ির পক্ষে এ সম্মাননা গ্রহণ করেন মোদি।

বৃহস্পতিবার ভারতের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ওয়েবসাইটে জানানো হয়- অটল বিহারি বাজপেয়ির পরিবারের সদস্য রঞ্জন ভট্টাচার্য, নমিতা ভট্টাচার্য ও নীহারিকা ভট্টাচার্যের হাতে ‘বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ সম্মাননা’ তুলে দেন মোদি। এ সময় ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ উপস্থিত ছিলেন।

বাজয়েপির পরিবারের কাছে সম্মাননা তুলে দেওয়ার পর নরেন্দ্র মোদি তার টুইটার অ্যাকাউন্টে লিখেছেন, ‘ অটল জির সঙ্গে দেখা করে ও তার পরিবারের হাতে ‘বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ সম্মাননা’ তুলে দিতে পেরে আমি আনন্দিত।’

১৯৭১ সালের ভারতের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ লোকসভার সদস্য বাজপেয়ি বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অবদান রাখেন।

গত ৬ ও ৭ জুন ঢাকা সফরে এসেছিলেন মোদি। সফরের দ্বিতীয় দিন বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের কাছ থেকে অটল বিহারি বাজপেয়ির পক্ষে সম্মাননা গ্রহণ করেন মোদি। অসুস্থতার কারণে বাংলাদেশ সফরে আসতে পারেননি ৯০ বছর বয়সী বাজপেয়ি ।

modi

সম্মাননা গ্রহণের পর মোদি বলেন, ‘আজ সব ভারতীয়র জন্য গর্বের দিন। এদিন অটল বিহারি বাজপেয়ির মতো একজন মহান নেতা সম্মানিত হয়েছেন। তিনি দেশের জন্য ও সাধারণ মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে পুরো জীবন উৎসর্গ করেছেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সমর্থনে বাজপেয়ির ডাকে সত্যাগ্রহে আমিও যোগ দিয়েছিলাম।’

এ সময় রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বলেন, ‘বাজপেয়িকে সম্মাননা প্রদান করে আমরা বিনীত কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে ভারতীয় যে সেনা সদস্যরা সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করেছেন, তাদের প্রত্যেককে সম্মান জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা। এর মাধ্যমে আমরা তাদের প্রতি বিনীত কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে চাই।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওই অনুষ্ঠানে বলেন, ‘অটল বিহারি বাজপেয়ির অকুণ্ঠ সমর্থন ভারতীয় রাজনীতিকদের বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষে আনতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। পরে বাজপেয়ি বাংলাদেশের প্রতি তার ভালোবাসা দেখিয়েছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে এবং পরে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনের সময়েও। তাকে সম্মাননা দিয়ে সম্মানিত বোধ করছি।’

১৯৯৬ সালে প্রথমবার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ১৩ দিন দায়িত্ব পালন করেন ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) নেতা অটল বিহারি বাজপেয়ি। পরে ১৯৯৮ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন তিনি।

স্বাধীনতা যুদ্ধে অবদান রেখেছেন এমন বিদেশি বন্ধুদের সম্মাননা প্রদান করছে বাংলাদেশ সরকার। ইতিমধ্যেই অনেক বিদেশি বন্ধুকে সম্মান জানানো হয়েছে। ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীকে ২০১২ সালের ২৫ জুলাই মরণোত্তর সম্মাননা প্রদান করা হয়। ইন্দিরা গান্ধীর পুত্রবধূ ও কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধী ২০১২ সালে এক বিশেষ অনুষ্ঠানে ওই সম্মাননা গ্রহণ করেন। ২০১৩ সালের ৫ মার্চ ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জিকে সম্মাননা দেওয়া হয়। এবার সম্মাননা দেওয়া হলো আরেক ভারতীয় রাজনীতিক অটল বিহারি বাজপেয়িকে।



মন্তব্য চালু নেই