বাজারে ঢুকছে ভারতীয় কাপড়

আর মাত্র কয়েক দিন পরে ঈদুল ফিতর। তাই ঈদকে সামনে রেখে সক্রিয় হয়ে উঠেছে চোরাকারবারীরা। ঈদের বাজার দখল করতে রাজশাহীর মার্কেটগুলোতে ঢুকতে শুরু করেছে ভারতীয় কাপড়। ইতোমধ্যে ভারতীয় শাড়ি আর পোশাক বিভিন্ন দামে ও রকমারি নামে বিক্রি হচ্ছে।

ভারতীয় পোশাক চলে নামের গুণে। নামের কারণে খুব সহজেই ক্রেতারা আকৃষ্ট হয়। গত মওসুমে রাজশাহীর মার্কেট ভারতীয় কাপড় চলছিল ভারতীয় টিভি সিরিয়াল ও বিভিন্ন চরিত্রের নামে। আকর্ষণীয় নাম ও বাহরী ডিজাইনে বিক্রি করেছে তারা। একটির একাক রকম না, পাখি, ঝিলিক, পাখি, ইষ্টিকুটুম, বাহা, ফ্লোর টাচ, ক্যাটরিনা, দীপিকা, লুঙ্গি ড্যান্স ইত্যাদি।

এগুলো শুরু আকর্ষণীয় নাম নিয়ে থাকলেও গুণের তালিকায় এখন পর্যন্ত বাংলার ঐতিহ্যবাহী জামদানী, সিল্ক ও বালু চুরির মত হরেক রকমের শাড়ি ও পোশাকগুলোই ক্রেতাদের কাছে বেশ জনপ্রিয়।

নগরীর নিউমার্কেট, আরডিএ মার্কেট, উপশহর নিউমার্কেট ও বিভিন্ন শপিংমল ঘুরে দেখা যায় বেশ কিছু দোকানে ভারতীয় পোশাকের উপস্থিতি। এসব পোশাক চোরাইভাবে বাজারে ঢুকেছে। নামের দিক থেকে বিখ্যাত হলেও গুণের দিক দিয়ে এরা দেশীয় পণ্যর ধারেকাছে নয় বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীসহ ক্রেতারা।

বিভিন্ন রুট দিয়ে ভারতীয় কাপড় ঢুকে পড়ছে রাজশাহী মহানগরীতে। প্রধান রুট হিসেবে চোরাকারবারীরা ব্যবহার করছে রাজশাহীর আশেপাশের ও জয়পুরহাটের হিলি সীমান্ত এলাকা। হিলি সীমান্ত দিয়ে আসা বিভিন্ন কাপড় ট্রেনে করে খুব সহজেই রাজশাহী মহানগরীতে এসে পৌঁছে যাচ্ছে।

সম্প্রতি রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে ১৪৭ পিস শাড়ি এবং ২৬ পিস লেহাঙ্গা উদ্ধার করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। পরিত্যক্ত অবস্থায় উপজেলার হনুমপুর এলাকা থেকে এসব পোশাক উদ্ধার করা হয়।

ব্যবসায়ীরা জানান, ভারতীয় কাপড়ের তুলনায় গুণে ও মানে দেশি কাপড় ভালো। তবে বাজারে ভারতীয় কাপড়ের উপস্থিতি দেশি বাজারের জন্য ক্ষতির কারণ বলে মনে করেন ব্যবসায়ীরা।

মহানগরীর আরডিএ মার্কেটের কাপড় ব্যবসায়ী রহমত আলী জানান, ঈদকে সামনে রেখে দেশি বিভিন্ন ডিজাইন আর দামের শাড়ি বাজারে এসেছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য বালু চুরি, হ্যান্ডি ব্লক, টাংগাইল, জুট কাতান, সূতি, হাফ সিল্ক ও জামদানী সিল্ক, মুসলিন অ্যামব্রয়ডারি, মুসলিন শিপন, এনডি, বলাকা, জামদানী, ধুপিয়ান, জয়শ্রী, স্বর্ণ কাতান, মুসলিন ব্রাশো, ঝলক কাতান।

আর ক্রেতাদের পছন্দের তালিকায় রয়েছে জামদানী, সূতি, টাংগাইল, র-সিল্কের ওপর কাটোয়ার, অ্যামব্রয়ডারি ও এন্ডির মিশ্রণে হাতে বোনা সিল্ক শাড়ি। ক্রেতারা গরমের কারণে এবার সূতি শাড়িকে প্রাধান্য দিচ্ছেন। অনেকে পছন্দ করছেন টাঙ্গাইল শাড়ি। এসব কাপড়ের তুলনায় ভারত থেকে আসা কাপড়ের মূল্য অনেক বেশি। তবে টেলিভিশনের বিভিন্ন সিরিয়াল আর চরিত্রের নাম দিয়ে ক্রেতাদের মন ভোলানোর চেষ্টা চালাচ্ছেন এক শ্রেণির ব্যবসায়ীরা।

নগরীর সাহেববাজার এলাকার কাপড় ব্যবসায়ী আলমগীর হোসেন জানান, দেশি কাপড়ের চাহিদা ক্রেতাদের মধ্যে অনেক বেশি। তবে কিছু ব্যবসায়ী ভারতীয় বিভিন্ন নায়ক, নায়িকার নাম দিয়ে ভারতীয় কাপড়গুলোতে জনপ্রিয় করার চেষ্টা করছে। এতে অনেক ক্রেতা আকর্ষিত হচ্ছে।



মন্তব্য চালু নেই