বাজেট অধিবেশন : কঠোর নিরাপত্তা বেষ্টনীতেও উৎসবমুখর পরিবেশ

বাজেট অধিবেশনকে ঘিরে জাতীয় সংসদ ছিল উৎসবমুখর। রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ উপস্থিত ছিলেন ভিআইপিরাও। নেয়া হয়েছিল বাড়তি নিরাপত্তা।

বৃহস্পতিবার অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বিকাল সাড়ে ৩টার পর বাজেট বক্তৃতা শুরু করেন। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে শুরু হওয়া সংসদের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে প্রবেশ করেন তিনি। এসময় প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রীকে ফুরফুরে মেজাজে দেখে গেছে। বাজেট পেশ উপলক্ষ্যে কানায় কানায় পূর্ণ ছিল অধিবেশন কক্ষ।

বাজেট অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অফ হোয়াইট সিল্ক শাড়ি পরে অধিবেশন কক্ষে প্রবেশ করেন। আর অর্থমন্ত্রী তার প্রিয় পোশাক ধূসর রঙ্গের পাঞ্জাবীর ওপর কালো মুজিব কোট পরে প্রবেশ করেন। এ সময়ে অর্থমন্ত্রীর হাতে ছিল কালো ব্রিফকেস। মুখে ছিল উচ্ছা¡স।

অর্থমন্ত্রীর বাজেট বক্তৃতার পরে আমন্ত্রিত অতিথিরা যাতে নির্বিঘেœ বের হতে পারেন সেজন্য সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজার পিজিয়ন হলের গেটটিও খোলা রাখা হয়। আমন্ত্রিত অতিথিদের আগমন উপলক্ষে সংসদ ভবন ও আশপাশের এলাকায় সকাল থেকেই নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা বেষ্টনী গড়ে তোলা হয়। র্যা ব-পুলিশসহ গোয়েন্দা সংস্থার বিপুল সংখ্যক সদস্য পুরো এলাকা নিরাপত্তা ঘেরাটোপ গড়ে তোলেন।

সংসদ গ্যালারি থেকে ভিআইপি লাউঞ্চ সর্বত্রই ছিল উপচে পড়া ভীড়। সম্পূর্ণ ডিজিটাল পদ্ধতিতে নিজের জীবনের দশম বাজেট পেশ করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। ঘড়ির কাঁটায় ৩ টা ৩২ মিনিটে বাজেট বক্তব্য শুরু করেন অর্থমন্ত্রী।

বাজেট বক্তৃতার আগেই জাতীয় সংসদের কেবিনেট কক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে বাজেট অনুমোদন করা হয়। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ সংসদে নিজ কক্ষে বসে বাজেট উপস্থাপন প্রত্যক্ষ করেন।

রাষ্ট্রপতিকে সংসদ ভবনে স্বাগত জানান সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ডেপুটি স্পিকার মো. ফজলে রাব্বী মিয়া। সংসদ কার্য-উপদেষ্টা কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৪৫ ঘণ্টা আলোচনার পর বাজেট পাস হবে।

বাজেট অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদ, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদ, সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীসহ সিনিয়র সদস্যদের প্রায় সকলেই অধিবেশনে অংশ নেন।

অন্যদিকে ভিআইপি গ্যালারিতে ছিলেন, প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্ণর ড.ফজলে করিম ও তিন বাহিনীর প্রধান।

এছাড়া বিভিন্ন দেশের কূটনৈতিকরাও অধিবেশন কক্ষের নির্ধারিত চেয়ারে বসে বাজেট বক্তৃতা প্রত্যক্ষ করেন। তাদের মাঝে অর্থমন্ত্রীর ইংরেজিতে প্রিন্ট করা বাজেট বক্তৃতা সরবরাহ করা হয়।

বাজেট বক্তৃতার প্রথম ও দ্বিতীয় অংশ অর্থমন্ত্রী পড়ে শোনান। এছাড়া তৃতীয় অংশের কিছু অংশ ডিজিটাল পদ্ধতিতে উপস্থাপন করা হয়। বক্তৃতার চতুর্থ অংশের পুরোটাই স্ক্রিনের মাধ্যমে উপস্থাপন করা হয়। শারীরিক কারণে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত বসেই বাজেট বক্তৃতা করেন।

বাজেট বক্তৃতা শেষে অর্থমন্ত্রী অর্থ বিল ২০১৬ সংসদে উত্থাপন করেন। সরকারের আর্থিক প্রস্তাবাবলী কার্যকরণ এবং কতিপয় আইন সংশোধনের লক্ষ্যে বিলটি উত্থাপন করা হয়। বিলটি আগামী ৩০ জুন পাস হবে।



মন্তব্য চালু নেই