শুরু হলো ঘরে ফেরার ‘টিকেট যুদ্ধ’

ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ঘরমুখো মানুষের জন্য দূরপাল্লা বাসের অগ্রিম টিকেট বিক্রি শুরু হয়েছে আজ সোমবার (২০ জুন) সকাল ৬টা থেকে।

আগামীকাল (মঙ্গলবার) থেকে শুরু হবে লঞ্চের ও পরদিন বুধবার থেকে শুরু হবে ট্রেনের অগ্রিম টিকেট বিক্রি। উত্তরাঞ্চল ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের ৬০টির বেশি রুটে ঈদের অগ্রিম টিকেট সংগ্রহ করছে বিভিন্ন গন্তব্যের যাত্রীরা।

গাবতলী, কল্যাণপুর ও শ্যামলীর বিভিন্ন বাস কাউন্টার থেকে পরিবহন সার্ভিসগুলো এ টিকেট বিক্রি শুরু করেছে। প্রথম দিনে সকাল ৬টা থেকে এ পর্যন্ত কোনো ভিড় দেখা যায়নি। বাস কাউন্টারের কর্মীরা বলছেন, ১৫ রমজানের পর থেকে অর্থাৎ আগামীকাল মঙ্গলবার থেকে যাত্রীদের অগ্রিম টিকিট সংগ্রহের চাপ বাড়তে পারে।

তবে বাসমালিকরা বলেছেন, এবার তেমন ভিড় হবে না। কারণ হিসেবে তারা বলেছেন, সোমবার ও মঙ্গলবার) লঞ্চের এবং বুধবার থেকে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হবে। সে কারণে এবার ভিড় হবে না। যাত্রীরা তিন রুটের টিকেট ইচ্ছেমতো কিনতে পারবেন।

বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি ও শ্যামলী পরিবহনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রমেশ চন্দ্র ঘোষ বলেন, ‘আজ সকাল থেকে বাসের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। এক্ষেত্রে সরকার নির্ধারিত যে ভাড়া আছে, তা-ই নেয়া হবে। এর চেয়ে বেশি ভাড়া আদায় করা হবে না। যদি কেউ বেশি ভাড়া নেয়, তাহলে সমিতির পক্ষ থেকে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ঈদযাত্রায় ৩০ জুন ও আগামী ৪ জুলাইয়ের টিকিটের চাহিদা থাকছে সবচেয়ে বেশি। এবারের ঈদে সরকারি চাকরিজীবীদের অনেকেই ৬ জুলাইকে সম্ভাব্য ঈদের দিন ধরে ৩০ জুন শেষ কার্যদিবস হিসেবে বাড়ি যাওয়ার টিকেট চাইছেন।

এ ছাড়া বেসরকারি চাকরিজীবীরা ৪ জুলাই সর্বশেষ কার্যদিবস ধরে বাড়ি যাওয়ার দিন ঠিক করেছেন। এ জন্যই এই দুই দিনের টিকেটের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। টিকেট বিক্রেতাদের মত হচ্ছে, এই দুই দিনের টিকেটের চাহিদা মেটাতে সবচেয়ে বেশি হিমশিম খেতে হবে। তবে ১ ও ৫ জুলাইয়ের টিকিটের চাহিদাও বেশি থাকবে।

হানিফ পরিবহনের মহাব্যবস্থাপক আবদুস সামাদ বলেন, ‘বাস মালিকদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সোমবার সকাল ৬টা থেকে কাউন্টারগুলোর সামনে ঈদের অগ্রিম টিকেট দেয়া শুরু করা গেছে।

তিনি আরও বলেন, ‘ধরে নেয়া হচ্ছে ৬ জুলাই ঈদ হবে। সে অনুসারে সরকারি কর্মজীবীরা বেশির ভাগই এক দিনের আগাম ছুটি নিয়ে ৩০ জুন শেষ অফিস করবেন। ওই দিন পরিবারসহ অনেকে ঢাকা ছাড়বেন। তাই এই দিনের টিকেটের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। এ ছাড়া বেসরকারি চাকরিজীবীরা ঈদের শেষ কর্মদিবস ৪ জুলাই মনে করে ওই দিনের অগ্রিম টিকেট চাইবেন বলেই আমাদের ধারণা।’

রাষ্ট্রায়ত্ত পরিবহন সংস্থা বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশনের (বিআরটিসি) বাসের অগ্রিম টিকেট আগামীকাল (২১ জুন) থেকে বিক্রি শুরু করবে।

রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, ট্রেনের অগ্রিম টিকেট দেয়া হবে বুধবার (২২ জুন) সকাল ৮টা থেকে। ফিরতি যাত্রার টিকেট বিক্রি হবে ৪ থেকে ৮ জুলাই পর্যন্ত। ২২ জুন বিক্রি হবে ১ জুলাই যাত্রার টিকেট। ২ জুলাই যাত্রার টিকেট বিক্রি হবে ২৩ জুন। একইভাবে ৩, ৪ ও ৫ জুলাইয়ের ট্রেনের টিকেট বিক্রি হবে যথাক্রমে ২৪, ২৫ ও ২৬ জুন।

এবার ঢাকার কমলাপুর থেকে দৈনিক প্রায় ৪৩ হাজার অগ্রিম টিকেট বিক্রির পরিকল্পনা রয়েছে। এর ২৫ শতাংশ অনলাইনে বিক্রি হবে। অনলাইনের নিশ্চিত করা টিকেটও সংগ্রহ করতে হবে কমলাপুর থেকে।

গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের জন্য (ভিআইপি) ও রেলওয়ে কর্মীদের জন্য ৫ শতাংশ কোটা সংরক্ষণ করা হবে। কমলাপুর ছাড়াও চট্টগ্রাম ও সিলেটে ঈদের অগ্রিম টিকেট বিক্রি হবে। আর ফিরতি টিকেট বিক্রি হবে চট্টগ্রাম, রাজশাহী, লালমনিরহাট, খুলনা, রংপুর, দিনাজপুরসহ বিভিন্ন স্টেশনে।



মন্তব্য চালু নেই