বিএনপির কার্যালয়ে ক্যামেরা বসাচ্ছে সরকার!

ঢাকা মহানগর বিএনপির কার্যালয়ে সিসি ক্যামেরা বসাবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এমন তথ্যই দিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও মহানগরের আহ্বায়ক মির্জা আব্বাস। তবে ক্যামেরা বসিয়ে ক্ষমতাসীনরা নেতাকর্মীদের কার্যক্রম মনিটরিং করার পরিকল্পনা করছে বলে অভিযোগ করছেন তিনি।

তিনি বলেছেন, ‘জোর করে ক্যামেরা লাগানোর অর্থই হলো, আপনারা (বিএনপির নেতাকর্মী) আর অফিসে আসবেন না।’

বুধবার বাদ আছর রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় জাতীয়তাবাদী যুবদল আয়োজিত এক মিলাদ ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন আব্বাস।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এবং যুগ্ম-মহাসচিব ও যুবদল সভাপতি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালের ছেলে সৈয়দ আরাফাত আব্দুল্লাহ অন্তরের সুস্থতা কামনায় এ দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।

মির্জা আব্বাস বলেন, গত মঙ্গলবার (১৯ জুলাই) ঢাকা মহানগর বিএনপির কার্যালয়ে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কিছু সদস্য আসেন। এসে বলে গেছেন, কার্যালয়ে ক্যামেরা (সিসি ক্যামেরা) লাগানো হবে। এটা শুনে ভাবলাম, সরকার কি বিএনপির ওপর এতই সদয় হলো? এখন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, কেন এই ক্যামেরা লাগানো হবে? এটি কি আমাদের নিরাপত্তার জন্য নাকি আমাদের কার্যক্রম মনিটর করার জন্য?

গত ১ জুলাই গুলশানের রেস্টুরেন্ট এবং ঈদের দিন শোলাকিয়া ঈদগাহের পার্শ্ববর্তী এলাকায় সন্ত্রাসী হামলার পর সারা দেশেই নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। এছাড়া গুলশান কূটনীতিক পাড়ার মতো স্পর্শকাতর এলাকায় হামলা করে ১৭ বিদেশিসহ ২০ জনকে হত্যার ঘটনায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন দলটি। এই এলাকাতেই তার বাসভবন এবং রাজনৈতিক কার্যালয়। বিএনপির পক্ষ থেকে খালেদা জিয়ার নিরাপত্তাও চাওয়া হয়েছে।

বিএনপির মহানগর কার্যালয়ে সিসি ক্যামেরা বসানোর উদ্যোগ প্রসঙ্গে মির্জা আব্বাস আরো বলেন,‘ঘটনা যাই ঘটুক, এ পদক্ষেপ ব্যক্তি স্বাধীনতায় সরাসরি হস্তক্ষেপ। আমাদের কার্যালয়ে ক্যামেরা লাগবে কি লাগবে না, সেটা আমাদের দায়িত্বের ব্যাপার। খুব বেশি হলে সরকার এ ব্যাপারে আমাদেরকে একটা উপদেশ দিতে পারে। আমরা নিজের পয়সায় ক্যামেরা লাগিয়ে নেব অথবা সরকারকে বলব, এ ব্যাপারে সহযোগিতা করুন। কিন্তু জোর করে ক্যামেরা লাগানোর অর্থই হলো, আপনারা (বিএনপির নেতাকর্মী) আর অফিসে আসবেন না।’

এদিকে সন্ত্রাসী হামলার পর গুলশান আবাসিক এলাকায় অবৈধ বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও রাজনৈতিক কার্যালয় উচ্ছেদ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। তবে বিএনপি মনে করছে, নিরাপত্তা নিশ্চিত করা নয় বরং খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক কার্যালয় সরিয়ে দেয়ার উদ্দেশ্যেই এমন পরিকল্পনা করেছে সরকার।

যুবদলের দোয়া মাহফিলে মোনাজাতপূর্ব সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও যুবদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ। এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন দলের স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।

এতে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট আবেদ রাজা, যুবদলের সহ-সভাপতি আব্দুল খালেক,যুগ্ম-সম্পাদক অমলেন্দু দাস অপু,সাংগঠনিক সম্পাদক আ ক ম মোজাম্মেল হক,দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্ম সম্পাদক কাজী রফিক;উত্তরের সহ-সভাপতি কফিল উদ্দিন ভুঁইয়া, কেন্দ্রীয় সদস্য গিয়াস উদ্দিন মামুন; ছাত্রদলের সহ-সভাপতি নাজমুল হাসান, দপ্তর সম্পাদক আব্দুস সাত্তার পাটোয়ারী প্রমুখ।

প্রসঙ্গত, রাজধানীর নয়াপল্টনের ভিআইপি রোডে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের বিপরীত দিকে দলটির ঢাকা মহানগর কার্যালয় অবস্থিত।



মন্তব্য চালু নেই