বিএনপির পলাতক নেতাদের গ্রেফতার করে না পুলিশ

নাশকতার একাধিক মামলায় বিএনপির অনেক কেন্দ্রীয় নেতাকে পলাতক দেখিয়ে বিভিন্ন সময়ে তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। পরোয়ানা জারির পরও তাদের গ্রেফতার কিংবা তামিল প্রতিবেদনও দাখিল করা হচ্ছে না। এর ফলে আদালতের আদেশের মূল্যায়ন করা হচ্ছে না। পুলিশ বলছে, বিএনপির অধিকাংশ নেতার বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি হওয়ার পর তারা আত্মগোপনে চলে যাচ্ছেন। তাই তাদের আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। খবর জাগো নিউজের।

বিএনপির আইনজীবীদের দাবি, মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলায় তাদের বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি করা হচ্ছে। তারা আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করলে আদালত নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়ে দেন।

পরোয়ানাভুক্ত বিএনপির শীর্ষ নেতারা হলেন- বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান সাদেক হোসেন খোকা, সেলিমা রহমান, সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম-মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, সাবেক যুগ্ম-মহাসচিব বরকত উল্লাহ বুলু, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সাবেক এমপি অ্যাডভোকেট সৈয়দা আসিফা আশরাফী পাপিয়া, ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, আজিজুল বারী হেলাল, যুবদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম নীরব, চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী অ্যাডভোকেট শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস ও প্রেস সচিব মারুফ কামাল খান সোহেল।

এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিসি-মিডিয়া) উপ-কমিশনার মাসুদুর রহমান বলেন, ‘বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হওয়ার পর তারা আত্মগোপনে চলে যান। পরে তাদের আর খুঁজে পাওয়া যায় না। তাই তাদের গ্রেফতার করা যাচ্ছে না। পলাতক আসামিদের গ্রেফতার করার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে, তাদের গ্রেফতার করা মাত্রই আদালতে পাঠানো হবে।’

ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আব্দুল্লাহ আবু বলেন, ‘আদালত পলাতক আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। পুলিশের উচিৎ পলাতক আসামিদের গ্রেফতার করে বিচারের জন্য সোপর্দ এবং আদালতের আদেশকে মূল্যায়ন করা।’

এ প্রসঙ্গে বিএনপির আইনজীবী অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া বলেন, ‘বিএনপির নেতাদের মিথ্যা মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। ইতোমধ্যে অনেক মামলায় আসামিরা জামিন নিয়েছেন এবং বাকিরাও খুব শিগগিরই আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করবেন।’

বিএনপির আরেক আইনজীবী অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন মেজবাহ বলেন, ‘মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলায় বিএনপির নেতাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে এসব মামলার কোনো ভিত্তি নেই। আমরা বর্তমান সরকারের আমলে ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হচ্ছি।’

তারেক রহমানের বিরুদ্ধে পরোয়ানা
২০১৪ সালের ২১ ডিসেম্বর মানহানি মামলায় তারেক রহমানের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন ঢাকা মহানগর হাকিম আদালত। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলায় পরোয়ানা জারি করেন বিভিন্ন আদালত।

রিজভীর বিরুদ্ধে পরোয়ানা
গত ২৫ জুলাই রাজধানীর পল্লবী থানার বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় রিজভীসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন নিম্ন আদালত।

খোকার বিরুদ্ধে পরোয়ানা
২০১৫ সালের ২৯ নভেম্বর দুদকের দায়ের করা মামলায় সাদেক হোসেন খোকার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন নিম্ন আদালত। এছাড়া অন্য মামলায়ও তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা আছে।

সেলিমা-সোহেল-শিমুলদের বিরুদ্ধে পরোয়ানা
২০১৫ সালের ২৫ আগস্ট খিলগাঁও থানায় দায়ের করা নাশকতার মামলায় সেলিমা রহমান, সাবেক যুগ্ম-মহাসচিব বরকত উল্লাহ বুলু, মারুফ কামাল খান সোহেল, বিশেষ সহকারী শিমুল বিশ্বাসসহ ১৪ জনকে পলাতক দেখিয়ে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন ঢাকা মহানগর হাকিম আদালত।

টুকু-হেলালসহ ২৮ জনের বিরুদ্ধে পরোয়ানা
২০১৫ সালের ৮ জুলাই মিরপুরে বিশেষ ক্ষমতা আইনে করা মামলায় টুকু-হেলালসহ ২৮ জনকে পলাতক দেখিয়ে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন নিম্ন আদালত। গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা অন্য ব্যক্তিরা হলেন- ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি আজিজুল বারী হেলাল, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, যুবদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম নীরবসহ ২৮ জন।



মন্তব্য চালু নেই