বিখ্যাত যে রূপকথাগুলো আসলে সত্যি!

বাচ্চাদের জন্যে লেখা বিখ্যাত সব রূপকথাগুলোর দিকে তাকালে যে কোন মানুষেরই মনে হবে- আরে! এটা তো মিথ্যে! তৈরি করা চরিত্র। বাস্তবেও সেগুলো তাই-ই। কিন্তু আপনি কি জানেন তারপরেও এমন কিছু বিখ্যাত রূপকথা রয়েছে যেগুলো রচিত হয়েছে বাস্তব দুনিয়ার মানুষকে অবলম্বন করে? কিংবা যেটা প্রভাবিত হয়েছে পৃথিবীরই কোন রক্ত-মাংসে গড়া চরিত্র দ্বারা? চলুন দেখে আসি এমনই কিছু রূপকথার চরিত্র আর সেগুলোর বাস্তব মানুষগুলোকে।

১. তুষারকন্যা ও সাত বামন
শুনতে নতুন আর অবাক করা মনে হলেও সত্যি যে আদতে তুষারকন্যা আর সাত বামনের গল্প রচিত হয়েছিল ১৬ শতকের এক সম্ভ্রান্তবংশীয় তরুনী মার্গারেট ভর ওয়াল্ডেকের জীবনের কষ্টগুলোর ওপর ভিত্তি করে ( লিস্টভার্স ) এবং অবশ্যই তাতে কিছু রং মাখিয়ে! তবে গল্পের মতন মার্গারেটের জীবনেও ছিল বামন, যারা কিনা কারখানায় অত্যাধিক শারীরিক কষ্টের কারণেই বামন রূপ পেয়েছিল। তুষারকন্যার মতনই মার্গারেটের মা খুব ছোটবেলাতেই মারা যায় আর ঘরে আসে সৎ মা। শুরু হয় অত্যাচার। ঘর থেকে মার্গারেটকে বের করে দেয় সৎ মা। পরবর্তীতে মার্গারেটের সাথে পরিচয় হয় এক রাজপুত্রের। একে অন্যকে ভালোবেসে ফেলে তারা। রাজা অবশ্য এই ভালোবাসার গল্পকে কখনোই মেনে নেননি। ফলাফল হিসেবে শেষ অব্দি বিষাক্ত আপেল খেয়ে মারা যেতে হয়!

২. সিন্ডারেলা
গল্পের মতন বাস্তবের এই সিন্ডারেলাকেও কিন্তু প্রচন্ড কষ্টের ভেতর দিয়ে যেতে হয়েছিল প্রথম জীবনে। অসম্ভব সুন্দর ছিল সে। নাম ছিল রোডোপিস। যার মানে- গোলাপী চিবুক। আর এই অসম্ভব সৌন্দর্যের কারণেই সবার নজর আকর্ষণ করে রোডেপিস সেই ছোটবেলা থেকেই। দাস হিসেবে বিক্রি করে দেওয়া হয় তাকে সেসময়। আর তারপর খানিকটা স্বাভাবিকতা ফিরে আসে তার জীবনে। যদিও দাসদের জীবন ছিল খুব কষ্টের, প্রচন্ড সৌন্দর্যের কারণে রোডেপিসকে একটু বেশিই ভালোবাসতেন মনিব। রোডেপিসকে তিনি কিনে দিয়েছিলেন সোনার জুতো। আর এই জুতো আর নিজের সৌন্দর্যের মাধ্যমেই ফারাও আহমোসের চোখে পড়ে রোডেপিস। ফারাও তাকে নিজের অনেকগুলো রানীর একজন করে নেয়। হ্যাঁ! এই অব্দি সবটাই সিন্ডারেলার সাথে অনেকটা মিলে যায় রোডেপিসের। সৌন্দর্য, জুতো, রাজার সাথে বিয়ে। তবে শেষ অব্দি কিন্তু সুখী হতে পারেনি এই নারী সিন্ডারেলার মতন।

৩. হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালা
রূপকথা মনে হলেও আসলে কিন্তু এটি রূপকথা নয়। ১২৬৪ সালে জার্মানিক গ্রাম হ্যামিলনে সত্যিই এক বাঁশিওয়ালা এসে শহরের সব ইঁদুরকে তাড়িয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি জানায় আর কিছু টাকা তাকে দিতে বলে (হাফিংটন পোস্ট)। নিজের কথা মতন কাজ করলেও পরবর্তীতে ঠিক গল্পের কাহিনী অনুসারেই গ্রামবাসীরা তাকে তার প্রাপ্য দেয়না। ফলে রেগে গিয়ে বাঁশিওয়ালা গ্রামের সব শিশুকে নিয়ে চলে যায়। একেবারের মতন। এরপর আর কোনদিন ফিরে আসেনি শিশুগুলো। কোথায় গিয়েছে তারা, কি হয়েছিল তাদের- এ নিয়ে অনেক জল্পনা-কল্পনা তৈরি হলেও সত্যিটা জানা যায়নি কোনদিন।



মন্তব্য চালু নেই