বিচলিত নয় বিএনপি…

‘রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপিকে অবৈধ গণ্য করা উচিত’- মর্মে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার দেয়া বক্তব্যকে আমলে নিচ্ছে না বিএনপি। দলটি মনে করে, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে প্রধানমন্ত্রী এ ধরনের বক্তব্য দিয়েছেন। এটি বলার জন্য বলা। এতে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।

সোমবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘হাইকোর্টের রায়ের মধ্য দিয়েই জিয়াউর রহমানের ক্ষমতা দখল সম্পূর্ণ অবৈধ ও অসাংবিধানিক ঘোষিত হয়েছে। কাজেই সে (জিয়া) যা যা করে গেছে, সবই অবৈধ। ক্ষমতায় গিয়ে জিয়া যে দল (বিএনপি) গঠন করেছে, সেটাও প্রকৃতপক্ষে অবৈধ বলে গণ্য করা দরকার।’

প্রধানমন্ত্রীর ওই বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান মঙ্গলবার বলেন, ‘জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে বহুদলীয় গণতন্ত্রের পথ উন্মুক্ত করেন। আওয়ামী লীগ এটির বেনিফিশিয়ারি হয়েছে। কারণ, এর মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগের পুনর্জন্ম হয়। তাছাড়া জিয়াউর রহমানের শাসনামলে আওয়ামী লীগ নির্বাচনও করেছে। কাজেই প্রধানমন্ত্রী যে কথা বলেছেন তা বলার জন্যই বলা। উনি এর আগেও এ ধরনের কথা বলেছেন।’

তিনি বলেন, ‘একজন রাজনীতিবিদ যখন বক্তব্য দেন, তখন বক্তব্যের মধ্যে অনেক কথাই বলে থাকেন। কিন্তু তার সব কথাই তো কার্যকর হয় না। কাজেই প্রধানমন্ত্রীর ওই বক্তব্যে আশঙ্কার কিছুই নেই। আমি ব্যক্তিগতভাবে এটিকে সিরিয়াস কিছু মনে করছি না।’

নোমান বলেন, ‘একটি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপির আইনগত ভিত্তি আছে, নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধনও আছে। কাজেই বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রীর ওই বক্তব্যের খুব একটা তাৎপর্য দেখি না।’

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী যদি বিএনপির দিকে না তাকিয়ে আওয়ামী লীগের দিকে তাকাতেন, তাহলে ভালো হতো। শেখ মুজিবুর রহমান আওয়ামী লীগকে বিলুপ্ত করে বাকশাল প্রতিষ্ঠা করেন। এরপর জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্রের পথ সুগম করেন। আদালত জিয়াউর রহমানের শাসনামলের কিছু কিছু বিষয়কে অবৈধ ঘোষণা করেছেন। প্রধানমন্ত্রী যদি সত্যিকার অর্থে শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শে বিশ্বাসী হন, তাহলে তার উচিত, আওয়ামী লীগ পরিহার করে বাকশালের নেতৃত্ব দেয়া। কারণ, শেখ মুজিবুর রহমান নিজেই আওয়ামী লীগকে বিলুপ্ত করে বাকশাল প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। এসব সিদ্ধান্তগুলো রাজনৈতিক। সুতরাং কোন দল জনপ্রিয়, কোন দল থাকবে, সেটি জনগণই নির্ধারণ করবে।’

তিনি বলেন, ‘দেশে বর্তমানে আইনের শাসন ও রাজনীতি নেই, এক ব্যক্তির শাসন চলছে। তিনি (প্রধানমন্ত্রী) কথাপ্রিয় মানুষ, কথা বলে যাচ্ছেন। আর আমরা পাবলিক হিসেবে তা শুনে যাচ্ছি। তবে প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে ঘটনার অর্ধেকটা বলেছেন, আমি পুরোটা বললাম।’



মন্তব্য চালু নেই