বিচারের মুখোমুখি বিএনপির শীর্ষ নেতারা

বিচারের মুখোমুখি বিএনপির শীর্ষ নেতারা। আদালতে চার্জ গঠন হচ্ছে একের পর এক মামলায়। হত্যা, বিস্ফোরণ, ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ ও পুলিশের কাজে বাধা দেয়ার অভিযোগে দ্রুত বিচার আইনে দায়ের করা মামলার পাশাপাশি রয়েছে তথ্য-প্রযুক্তি আইন এবং রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে দায়ের করা মামলা। রয়েছে দুর্নীতির অভিযোগে দুদকের মামলাও।

ব্যক্তিগত অভিযোগে দায়ের মামলার চেয়ে দলীয় মামলার সংখ্যাই বেশি। উচ্চ আদালতে আবেদন করেও বাতিল বা স্থগিত করা যাচ্ছে না বিচার প্রক্রিয়া। স্পর্শকাতর কয়েকটি মামলার সম্পূরক চার্জশিটে যুক্ত হয়েছে বিএনপি নেতাদের নাম। খোদ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান, জিয়া পরিবারের ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোসহ তাদের ঘনিষ্ঠ আত্মীয়দের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হয়েছে অন্তত চার মামলায়। ২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় জড়িয়ে পড়েছেন তারেক রহমানসহ বিএনপির কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা। চার্জগঠনের মাধ্যমে সর্বাধিক মামলায় বিচার শুরু হয়েছে দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের। আসামির তালিকায় তিনি রয়েছেন এমন অন্তত ২৫টি মামলায় চার্জগঠন হয়েছে। দলের নীতিনির্ধারক ফোরাম স্থায়ী কমিটি, কেন্দ্রীয় নেতৃত্বসহ তৃণমূল নেতাকর্মীদের অনেকেই এখন ১-২৫ মামলায় আনুষ্ঠানিক বিচারের মুখোমুখি। রাজধানীর বেশির ভাগ মামলায় শীর্ষ নেতাদের পাশাপাশি ৩০-১০০ জন এবং জেলা পর্যায়ের মামলাগুলোতে আরও বেশি সংখ্যক তৃণমূল নেতাকর্মীও বিচারের মুখে।

ফখরুদ্দীন-মইনউদ্দিনের নেতৃত্বাধীন ওয়ান-ইলেভেনের সময় বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে বয়ে যায় মামলার সিডর। মহাজোট সরকারের আমলে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা বেশির ভাগ মামলা প্রত্যাহার করা হলেও উল্টো পরিস্থিতির মুখে পড়ে বিএনপি নেতাকর্মীরা। দলের নিখোঁজ নেতা এম. ইলিয়াস আলীর সন্ধান ও পরে নির্দলীয় সরকারের দাবিতে আন্দোলনের সময় বিরোধী নেতাকর্মীদের ওপর জমে ওঠে মামলার পাহাড়। নানা আইনি প্রক্রিয়া শেষে এখন সেসব মামলায় শুরু হয়েছে আনুষ্ঠানিক বিচারিক কার্যক্রম। বিএনপির অভিযোগ জনবিচ্ছিন্ন সরকার মামলা-হামলার মাধ্যমে ক্ষমতায় আঁকড়ে থাকতে চায়। রাজনীতি ও নির্বাচন থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে চায় বিএনপি নেতাদের। আর সে পরিকল্পনা বাস্তবায়নে আইনি প্রক্রিয়ার নামে বন্দুক রাখা হয়েছে আদালতের ঘাড়ে। বিএনপি নেতা ও তাদের আইনজীবীরা বলছেন, মামলার মেরিট যাই থাকুক সরকার সাজা দিতে চায়।

বিচার কার্যক্রমে তাড়াহুড়ো ও আইনি লড়াইয়ে যুক্তিতর্ককে পাশ কাটিয়ে যাওয়ার মধ্যেই তাদের উদ্দেশ্য পরিষ্কার হয়ে গেছে। আইনি লড়াইয়ে সময়ক্ষেপণ ছাড়া তেমন কোন ফল আসছে না। আন্দোলনের ওপরই নির্ভর করছে এসব বিচারের ভবিষ্যৎ। তারা বলেন, মামলা ও বিচার কৌশলকেই এখন প্রাধান্য দিয়েছে সরকার। একদিকে গ্রেপ্তার ও আদালতে হাজিরার মাধ্যমে টেনে ধরা হয়েছে আন্দোলনের রাশ অন্যদিকে বিরোধী নেতাদের অপরাধী প্রমাণের মাধ্যমে মোকাবিলা করতে চায় আন্তর্জাতিক চাপ। এ ব্যাপারে চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলাগুলো মিথ্যা, বানোয়াট ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত। সরকার নিজস্ব এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য বিরোধী নেতাদের ঘায়েল করতে বিভিন্ন সময় এসব মামলা দায়ের করেছে। জনবিচ্ছিন্ন হয়ে এ সরকার মামলা-হামলার মাধ্যমেই ক্ষমতায় থাকতে চায়।

তিনি বলেন, আমাদের দেশে হাজার হাজার পুরনো মামলা হিমাগারে পড়ে আছে। অনেক ফাঁসির রায়ও ৮-১০ বছরে নিষ্পন্ন হয়নি। কিন্তু এসব রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলায় সরকার তাড়াহুড়ো করছে। তারা উদগ্রীব হয়ে আছেন মামলাগুলো শেষ করতে। আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই অনেকগুলো মামলার চার্জগঠন হয়ে যাবে। খন্দকার মাহবুব বলেন, এসব মামলার মেরিট যাই থাকুক মনে হচ্ছে সাজা দেবে। আইনি লড়াইয়ে কিছুটা সময়ক্ষেপণ করতে বাধ্য হচ্ছে। এতে দেশের মানুষও জানতে পারছে, কেমন মামলায় কেমন বিচার হচ্ছে। তবে আমরা আইনি লড়াইয়ের পাশাপাশি রাজপথের প্রতিবাদ করবো। বিএনপির গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক ও আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া বলেন, আন্দোলন-সংগ্রামের সময় দায়ের করা নানা মামলায় দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের বেশির ভাগই এখন আনুষ্ঠানিক বিচার প্রক্রিয়ার মুখোমুখি। মির্জা আলমগীর ও মির্জা আব্বাসের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি মামলার বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে এ সংখ্যা আরও বাড়বে। একের পর এক মামলায় চার্জগঠনের বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে বিএনপি। এ ব্যাপারে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা আলমগীর বলেন, জনবিচ্ছিন্ন সরকার বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপর মামলার পাহাড় জমিয়ে তুলেছে।

আমার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাগুলোর মধ্যে ইতিমধ্যেই ২৫টিতে চার্জগঠন হয়েছে। আনুষ্ঠানিক বিচার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। তিনি বলেন, সরকার বিরোধীদলের কেন্দ্রীয় নেতাদের মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে নির্বাচন ও রাজনীতি থেকে দূরে সরাতে চায়। এটা দীর্ঘমেয়াদি ষড়যন্ত্রের একটি অংশ। এটা এখন কোন আশঙ্কা নয়, রীতিমতো বাস্তবতা। কারণ এসব মামলা ছেলেখেলা করতে তারা ট্রায়ালে নেয়নি। মির্জা আলমগীর বলেন, এখন আমাদের সামনে দুটি পথ। আইনি ও রাজপথের লড়াই। তবে পুরো জিনিসটাই নির্ভর করছে এ সরকারের পতন আন্দোলনের ওপর।

এদিকে সরকার আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই বিরোধী জোটকে যে রাজনীতিতে কাবু করতে চাইছে তা মন্ত্রী-এমপিদের বক্তব্যে অনেকটা পরিষ্কার। কিছুদিন আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক বক্তব্যে বলেছেন, ‘আন্দোলনের নামে নৈরাজ্য করা হলে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকেও কারাগারে যেতে হবে।’ তার এমন বক্তব্য এবং বিরোধী নেতাদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলাগুলোর দ্রুতগতির বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছেন বিএনপি নেতারা। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বিএনপি চেয়ারপারসন ও ২০দলীয় জোটের শীর্ষ নেতা খালেদা জিয়া ব্রাহ্মণাড়িয়ার জনসভায় বলেছেন, ‘আমি কখনই গ্রেপ্তারে ভয় পাই না। আমি সরকারকে বলবো, আমাকে বন্দি করার আগে নিজের রাস্তা পরিষ্কার করে রাখুন।’ এছাড়াও তার সাম্প্রতিক বক্তব্যগুলোতে অন্যতম প্রধান ইস্যু হিসেবে আসছে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও ন্যায়বিচারের প্রতিষ্ঠার দাবি। বিচারকদের প্রতি তিনি বারবার আহ্বান জানাচ্ছেন- অন্যায় চাপের কাছে মাথা নত করে নয়, অভিযোগের মেরিট দেখে ও বিবেককে প্রাধান্য দিয়ে রায় দেয়ার।

এদিকে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট্র দুর্নীতি মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়েছে। মামলা আমলে নেয়া এবং চার্জগঠন নিয়ে হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে খালেদা জিয়ার দায়ের করা লিভ টু আপিলের (আপিলের অনুমতি) শুনানি চলছে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে। ওদিকে বিশেষ আদালতে সাক্ষ্যগ্রহণের পরবর্তী দিন ধার্য করা হয়েছে ২৪শে নভেম্বর। এছাড়া ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়ার অভিযোগে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে জননেত্রী পরিষদের সভাপতি এবি সিদ্দিকীর দায়ের করা মামলায় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের অভিযোগে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের দায়ের করা মামলা তদন্ত করতে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ ডিবিকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে আপত্তিকর বক্তব্য দেয়ার অভিযোগে যশোর ও শেরপুরে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়েছে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা। আওয়ামী লীগকে ‘কুলাঙ্গারের দল’ ও শেখ হাসিনাকে ‘কুলাঙ্গারের দলের নেত্রী’ বলায় তারেক রহমান ও মির্জা আলমগীরের বিরুদ্ধে দায়ের করা মানহানি মামলার আদালত চার্জগঠনের দিন ধার্য করেছেন আগামী ১৪ই ডিসেম্বর।

এছাড়া ড্যান্ডি ডাইং ঋণখেলাপি মামলায় তারেক রহমান, আরাফাত রহমান কোকো, খালেদা জিয়ার ভাই সাঈদ ইস্কান্দারের স্ত্রী ও তিন ছেলে মেয়ে এবং ব্যবসায়ী গিয়াসউদ্দিন আল মামুনের বিরুদ্ধে চার্জ গঠনের প্রক্রিয়া চলছে। এদিকে কয়েকটি স্পর্শকাতর মামলায় সম্পূরক চার্জশিটভুক্ত আসামি হিসেবে বিচারের মুখোমুখি বিএনপি বেশ কয়েকজন কেন্দ্রীয় ও জেলা পর্যায়ের নেতা। ২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়েছে আগেই। সম্পূরক চার্জশিটের মাধ্যমে সে মামলায় আসামির তালিকায় যুক্ত করা হয়েছে তারেক রহমান, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুস সালাম পিন্টু, সাবেক যুগ্ম মহাসচিব হারিছ চৌধুরী ও চারদলীয় জোট সরকারের সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রি লুৎফুজ্জামান বাবরের নাম। সর্বশেষ সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএসএম কিবরিয়া হত্যা মামলার সম্পূরক চার্জশিটে আসামির তালিকায় যুক্ত করা হয়েছে হারিছ চৌধুরী, সিলেট সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী ও হবিগঞ্জের পৌর মেয়র ও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জি কে গউছের নাম। এছাড়া মানি লন্ডারিংয়ের একটি মামলায় ইতিমধ্যে আরাফাত রহমানের বিরুদ্ধে কারাদণ্ডের রায় দিয়েছেন আদালত।

দুদকের দায়ের করা অর্থ পাচার সংক্রান্ত মামলায় ২০১৩ সালের ১৩ই মার্চ গ্রেপ্তার হন স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। পরে প্রধানমন্ত্রীকে ভয়-ভীতি প্রদান ও মানহানির অভিযোগে ২০১৩ সালের ২০শে জানুয়ারি জননেত্রী পরিষদের সভাপতি এবি সিদ্দিকীর মামলায় তার বিরুদ্ধে চার্জগঠন করেছেন আদালত। গুলশানে বাড়ি দখল সংক্রান্ত দুর্নীতি মামলায় স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের বিরুদ্ধে দুদকের মামলায় ইতিমধ্যে চার্জশিট দেয়া হয়েছে। ২০১৩ সালের ৫ই মে শাপলা চত্বরে হেফাজতের অবস্থানের দিন বায়তুল মোকাররমের সামনে কোরআন পোড়ানোর ঘটনা ঘটে।

এ ব্যাপারে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতাকে অভিযুক্ত করে বক্তব্য দেয়ার অভিযোগে তথ্য-প্রযুক্তি আইনে পল্টন থানায় দায়ের করা মামলায় স্থায়ী কমিটির সদস্য এমকে আনোয়ারের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করেছেন আদালত। অবৈধ প্লট বরাদ্দ দিয়ে সরকারের সাড়ে ১৫ কোটি টাকা আর্থিক ক্ষতি সাধনের অভিযোগে মামলার চার্জশিটে স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের নাম যুক্ত করার সুপারিশ করেছে দুদক। মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের রায় দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। বর্তমানে তিনি কাশিমপুর কারাগারের কনডেম সেলে দিনপার করছেন। অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে বিএনপির ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানীর বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুদক। ওদিকে ২০১৩ সালে আন্দোলন চলাকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সামনে গাড়ি পোড়ানো, সচিবালয়ে ককটেল বিস্ফোরণ, নয়াপল্টনে গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ, বেইলী রোডে গাড়ি ভাঙচুর-পুলিশ ও মানুষ হত্যার অভিযোগে, বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে গাড়ি ভাঙচুর ও ত্রাস সৃষ্টি, নির্বাচন কমিশন গেটে বোমা বিস্ফোরণ, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ভিআইপি লাউঞ্জে জোর করে ঢোকার চেষ্টার অভিযোগে দ্রুত বিচার আইনে মামলা দায়ের করা হয় রাজধানীর বিভিন্ন থানায়।

এসব মামলায় মির্জা আলমগীরসহ দলের স্থায়ী কমিটি, ভাইস চেয়ারম্যান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা, যুগ্ম মহাসচিব, সাংগঠনিক সম্পাদক, সম্পাদকমণ্ডলী, সহযোগী সংগঠন ও জোটের শতাধিক কেন্দ্রীয় নেতা রয়েছেন আসামির তালিকায়। সেসব মামলার কোন কোনটির ইতিমধ্যে চার্জগঠন করেছেন আদালত। কয়েকটি মামলায় চার্জ গঠনের শুনানি চলছে। এসব মামলায় মির্জা আলমগীর, খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, আসম হান্নান শাহ, এমকে আনোয়ার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল্লাহ আল নোমান, সাদেক হোসেন খোকা, ডা. জাহিদ হোসেন, আমানউল্লাহ আমান, বরকতউল্লাহ বুলু, রিজভী আহমেদ, জয়নুল আবদিন ফারুক, নাজিমউদ্দিন আলম, আবদুস সালাম, ফজলুল হক মিলন, রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, সৈয়দা আসিফা আশরাফি পাপিয়া, রেহেনা আক্তার রানু, নিলুফার চৌধুরী মনি, শাম্মী আক্তার, কামরুজ্জামান রতন, আজিজুল বারী হেলাল, আমিরুল ইসলাম খান আলিম, মহানগর নেতাদের মধ্যে হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, আবুল বাসার, আনোয়ারুজ্জামান আনোয়ার, নবী সোলায়মান, এল রহমান, ইউনুস মৃধা প্রমুখ। অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে রয়েছেন- সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সাইফুল আলম নীরব, মীর সরফত আলী সপু, মোরতাজুল করিম বাদরু, এসএম জাহাঙ্গীর, রফিকুল ইসলাম মজনু, কামরুজ্জামান দুলাল, ইয়াসিন আলী, হাবিবুর রশিদ হাবিব, ওবায়দুল হক নাসির, আনিসুর রহমান তালুকদার খোকন, আবদুল মতিন, কামাল আনোয়ার আহমেদ প্রমুখ। এসব মামলা ছাড়াও রাজধানীসহ সারা দেশে হাজারও রাজনৈতিক ও ব্যক্তি মামলায় বিএনপি ও অঙ্গসহযোগী সংগঠনের কেন্দ্রীয় ও জেলা নেতাদের বেশির ভাগই বিচারের মুখোমুখি।

২০ দলীয় জোট নেতাদের মধ্যে এলডিপির চেয়ারম্যান অলি আহমদ, বিজেপির আন্দালিব রহমান পার্থ, জাগপার শফিউল আলম প্রধান ও এনপিপির শেখ শওকত হোসেন নিলু। তবে নিলু ইতিমধ্যে ২০দলীয় জোট থেকে বেরিয়ে আলাদা একটি জোট গঠন করেছেন। এছাড়া সাভার থানায় বিএনপি কয়েকজন সিনিয়র নেতার বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার আইনের দুটি মামলায় চার্জ গঠন করেছে আদালত। ওদিকে চট্টগ্রামে ১০ ট্রাক অস্ত্র আটকের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় লুৎফুজ্জামান বাবরের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের রায় দিয়েছেন আদালত। এছাড়া আয়কর ফাঁকির মামলায় তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত। একইভাবে দেশের বিভিন্ন জেলায় নানা অভিযোগে দায়ের শতাধিক মামলায় চার্জ গঠন ও চার্জ গঠনের প্রক্রিয়া চলছে আদালতে।



মন্তব্য চালু নেই