‘বিচারের স্বার্থে মায়ার পদত্যাগ করা উচিত’

সুষ্ঠু বিচারের স্বার্থে দুর্যোগ ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার পদত্যাগ করা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান।

রাজধানীর ধানমণ্ডির মাইডাস সেন্টারে মঙ্গলবার ‘জাতীয় যুব-সততা জরিপ ২০১৫’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।

ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘ন্যায় বিচারের স্বার্থে মায়ার পদত্যাগ করা উচিত ছিল। যদিও বাংলাদেশে এ ধরনের উদাহরণ নেই। পদত্যাগ হলে বিচারে কোন প্রভাব পড়ত না। চূড়ান্ত রায়ে নির্দোষ প্রমাণিত হলে পরবর্তীতে তাকে ফুলের মালা দিয়ে বরণ করা যেত। তাছাড়া এর মাধ্যমে তিনি দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারতেন।’

টিআইবির জরিপের ফল অনুযায়ী, যুবদের প্রায় সবাই সততার অভাবকে দেশের অর্থনীতি ও উন্নয়নের জন্য একটি বড় সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করেছে। কখনও দুর্নীতি করে না, কোন পরিস্থিতিতেই ঘুষ নেয়ও না, দেয়ও না এমন মানুষকে জরিপে অংশ নেয়া প্রায় ৯৮ শতাংশই সৎ বলেছে। অধিকাংশ যুবই ধনী হওয়ার চেয়ে সৎ হওয়াকেই বেশি গুরুত্বপূর্ণ মনে করছে। অসৎ ব্যক্তির চেয়ে সৎ ব্যক্তির জীবনে সফল হওয়ার সম্ভাবনা বেশী বলে জরিপে বেশীর ভাগ অংশগ্রহণকারী একমত পোষণ করেছে। আবার গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষায় পাস করা/গুরুত্বপূর্ণ কোনো চাকরি পাওয়ার জন্য ব্যর্থ হতে পারেন জেনেও কোন প্রতারণার আশ্রয় নেবেন না বরং সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন বলে মনে করেন জরিপের অংশগ্রহণকারী ৭৩ শতাংশ নারী ও ৬৫ শতাংশ পুরুষ। কোনো আত্মীয় নিয়ম-বহির্ভূতভাবে ভাল কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি, অথবা কোনো প্রতিষ্ঠানে চাকরি দিতে চাইলে বেশীরভাগ যুবকই সরাসরি না বলবেন বলে জরিপে জানানো হয়।

টিআইবির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারপারসন এ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল বলেন, ‘বাংলাদেশে একটি গণতান্ত্রিক ও দুর্নীতিমুক্ত সমাজ দেখতে চাইলে শিক্ষা ব্যবস্থাকে আরও উন্নত ও যুগোপযোগী করা অত্যন্ত জরুরী। সমাজে যুবদের সংখ্যা অনেক বেশি, তাই তারা যাতে সততার চর্চা করতে পারে সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সকলকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে এবং দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গঠনে তরুণদের ভূমিকা পালনের যথাযথ পরিবশে নিশ্চিত করতে হবে।’

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘বাংলাদেশের রাজনৈতিক, সামাজিকসহ দেশকে এগিয়ে নেওয়ার প্রতিটি আন্দোলনে তরুণদের রয়েছে গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা। কিন্তু অধিকাংশ যুবদের মধ্যে দুর্নীতি সম্পর্কে ধারণা কম। অনেকেই অন্য কোন উপায় নেই জেনে দুর্নীতির আশ্রয় নেয়। সে বিষয়টি মাথায় রেখে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি তরুণদের মধ্যেও দুর্নীতিবিরোধী চেতনা জাগিয়ে তুলতে হবে। রাষ্ট্রীয় দুর্নীতি প্রতিরোধে দায়িত্বপ্রাপ্তদের যুবদের ভাবনাকে বিবেচনায় নিয়ে কার্যকর দুর্নীতি প্রতিরোধ কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে।’

গবেষণা প্রতিবেদনের তথ্য তুলে ধরেন টিআইবির গবেষণা ও পলিসি বিভাগের প্রোগ্রাম ম্যানেজার মনজুর-ই-খোদা এবং শাম্মী লায়লা ইসলাম।

টিআইবি উপ-নির্বাহী পরিচালক ড. সুমাইয়া খায়ের ও রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ রফিকুল হাসান এ সময় উপস্থিত ছিলেন।



মন্তব্য চালু নেই