বিদেশি চ্যানেলে দেশি বিজ্ঞাপন প্রচার করলে প্রতিরোধ

নভেম্বর মাসের পর বিদেশি কোনো চ্যানেলে দেশি পণ্যের বিজ্ঞাপন প্রচার করলে সম্মিলিতভাবে প্রতিরোধ করার ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশি টেলিভিশন চ্যানেলগুলোর স্বার্থরক্ষায় গঠিত নতুন সংগঠন ‘মিডিয়া ইউনিটি’। সেই সঙ্গে দেশের টেলিভিশন চ্যানেলগুলোয় বিদেশি ডাবিং করা সিরিয়াল প্রচার বন্ধেরও দাবি জানানো হয়েছে।

আজ শনিবার সকালে রাজধানীর ঢাকা ক্লাবে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আত্মপ্রকাশ করে দেশীয় চ্যানেলগুলোর মালিক, কর্মকর্তা ও কলাকুশলীদের সমন্বয়ে গঠিত নতুন সংগঠন ‘মিডিয়া ইউনিটি’।

চলতি মাসের মধ্যেই বিদেশি চ্যানেলে বাংলাদেশি বিজ্ঞাপন এবং দেশি চ্যানেলে ডাবিং করা বিদেশি সিরিয়াল বন্ধের দাবি জানান সংগঠনটির নেতারা।

অনুষ্ঠান থেকে জানানো হয়, সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন চ্যানেলে ডাবিং করা বিদেশি সিরিয়ালের সম্প্রচার বাড়ছে। সেই সঙ্গে বাড়ছে বিদেশি চ্যানেলে বাংলাদেশি পণ্যের বিজ্ঞাপন। এর ফলে একদিকে বিপুল পরিমাণ অর্থ দেশের বাইরে যাচ্ছে। অন্যদিকে ক্ষতির মুখে পড়ছেন দেশীয় চ্যানেল, শিল্পী ও কলাকুশলীরা।

অনুষ্ঠানে বেসরকারি টেলিভিশন এটিএন বাংলার চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘আমাদের দেশের বিজ্ঞাপন যারা বিদেশের চ্যানেলে নিয়ে যাচ্ছে, তাদের নভেম্বর পর্যন্ত টাইম দিলাম। নভেম্বরের পর থেকে যেন তারা আর কোনো রকম বিজ্ঞাপন কোনো বিদেশি চ্যানেলে না দেয়। এরপরও যদি তারা এই কাজ করার চেষ্টা করে আমরা সম্মিলিতভাবে তাদের প্রতিরোধ করব।’

একটা আইনের ফাঁক গলে বাংলাদেশের টাকা মানি লন্ডারিংয়ের মাধ্যমে বিদেশে পাচার করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন বেসরকারি একাত্তর টেলিভিশনের প্রধান সম্পাদক ও মিডিয়া ইউনিটির আহ্বায়ক মোজাম্মেল বাবু। যারা এই কাজের সঙ্গে জড়িত তাদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।

এনটিভির বিক্রয় ও বিপণন-প্রধান রঞ্জন কুমার দত্ত বলেন, ‘প্রায় ১০০ কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়ে গেছে। আমাদের চ্যানেল, আমরা বঞ্চিত হয়েছি ১০০ কোটি টাকা থেকে। দিন দিন এটা আরো চলে যাচ্ছে। ডিসেম্বরের মধ্যে যদি এটা কেস করে স্টে (স্থগিত) করা না যায়, তাহলে এটা অর্ধেক হয়ে যাবে।’

এসব দাবির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেন বেসরকারি টেলিভিশনের পরিচালক, প্রযোজক, শিল্পী ও কলাকুশলীরা।

নাট্য পরিচালক গাজী রাকায়েত বলেন, ‘আমাদের সংস্কৃতিটাকে আমরা একটা সিস্টেমের মধ্যেই আনতে পারিনি। আমরা এখন অনেক কিছুই বাইরে থেকে এই যে সিরিয়ালগুলো নিয়ে আসছি। আমরা তো ডিসিপ্লিনই তৈরি করতে পারিনি এই ইন্ড্রাস্টিতে।’

পাশের দেশের চেয়ে বাংলাদেশের নাট্য নির্মাতারা অনেক ভালো মানের নাটক তৈরি করেন বলে জানান পরিচালক চয়নিকা চৌধুরী। তাঁদের যথাযথ সুযোগ দেওয়ার দাবি জানান তিনি। শুধু বিজ্ঞাপন ও বিদেশি সিরিয়াল সম্প্রচার বন্ধ নয়, সব ধরনের সাংস্কৃতিক আগ্রাসন রোধে সবাইকে সোচ্চার হওয়ারও আহ্বান জানান মিডিয়া ইউনিটির সদস্যরা।



মন্তব্য চালু নেই