বিদেশ যেতে দুই কন্যাশিশুকে বিক্রি!

বিদেশ যাওয়ার জন্য দুই কন্যাশিশুকে বিক্রির অভিযোগে মনির হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে আশুগঞ্জ থানা পুলিশ। গতকাল বুধবার বিকেলে মনিরকে এলাকাবাসী পুলিশের হাতে তুলে দেয়।

মনির হোসেন উপজেলার শরীফপুর ইউনিয়নের কান্দাপাড়া এলাকার মুক্তিযোদ্ধা ইদ্রিস মিয়ার ছেলে। মনির বিদেশে যাওয়ার টাকা জোগাড় করতে দুই শিশু মারিয়া (৬) ও সামিয়াকে (৪) বিক্রি করেছেন বলে দাবি করেছেন এলাকাবাসীরা। তবে মনির বলছেন, পাশের এলাকায় তার এক বন্ধু নেশাজাতীয় ওষুধ খাইয়ে তাকে অচেতন করে দুই কন্যা সন্তানকে নিয়ে পালিয়ে গেছে। নিখোঁজ দুই শিশুকে উদ্ধারের জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ১৫ জানুয়ারি দুই মেয়ে মারিয়া ও সামিয়াকে নিয়ে ভৈরব ব্রিজে বেড়াতে যাওয়ার কথা বলে মনির হোসেন বাড়ি থেকে বের হন। পরে রাত হয়ে গেলেও তিনি আর বাড়ি ফিরে আসেননি। মনিরের স্ত্রী রত্না ও তার পরিবারের লোকজন আত্মীয়-স্বজনের বাড়ি খোঁজাখুঁজি করতে থাকেন। এভাবে ঘটনার পাঁচ দিন পেরিয়ে গেলেও মনির ও তার দুই সন্তানের কোনো খোঁজখবর না পেয়ে অস্থির হয়ে হয়ে পড়েন রত্না।

পরে নবীনগর উপজেলার বীরগাঁওয়ে মনির হোসেনকে এলাকাবাসী দেখতে পেয়ে তাকে আটক করে। এ সময় মনিরের সঙ্গে তার দুই সন্তান ছিল না। সন্তান কোথায় আছে জানতে চাওয়া হলে তিনি এলোমেলো কথা বলতে থাকেন। এরপর বার বার তাকে জিজ্ঞেস করলে তিনি এক পর্যায়ে বলেন, তার বন্ধু লালপুর বাজারের স্বর্ণ ব্যবসায়ী রতন ভৈরবে তাকে নেশাজাতীয় কিছু খাইয়ে অচেতন করে দুই সন্তানকে নিয়ে পালিয়ে গেছে। এরপর ১৩ দিন তার কাছে তার সন্তান সম্পর্কে জানার জন্য চেষ্টা করে পরিবার ও এলাকাবাসী। পরে গতকাল বুধবার বিকেলে তাকে পুলিশের হেফাজতে নিয়ে আসা হয়।

এসব বিষয়ে অভিযুক্ত মনির জানান, লালপুর নাথপাড়া গ্রামের রতন মিয়া তাকে নেশাজাতীয় কিছু খাইয়ে দুই সন্তান নিয়ে পালিয়ে গেছে। এছাড়া তিনি আর কিছু বলতে পারেন না।

এদিকে মনিরের স্ত্রী রত্না বেগম জানান, আমি আমার স্বামী ও দুই সন্তানকে ফেরত চাই। আমি কাউকে হারাতে চাই না। আমার স্বামীর সাথে কোনো কিছু হয়েছে। সে খারাপ মানুষ না।

এ ব্যাপারে আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. সেলিম উদ্দিন জানান, অভিযুক্ত মনির পুলিশ হেফাজতে রয়েছে। তাকে পাঁচদিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তার বন্ধু রতনকেও খুঁজছে পুলিশ। দুই বাচ্চাকে উদ্ধারের জন্য পুলিশ যথাসাধ্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।



মন্তব্য চালু নেই