বিদ্যুৎকেন্দ্র বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়ে দিল্লি থেকে ফিরুন

বাগেরহাটের রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েই ভারত সফর শেষ করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তেল-গ্যাস-খনিজসম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ।

শুক্রবার সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাঢ়ায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ‘শ্রুতি সাংস্কৃতিক একাডেমি’র ২৫ বছর পূর্তি ও সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আনু মুহাম্মদ এ কথা বলেন।

ভারতের সঙ্গে প্রতিরক্ষা চুক্তির বিষয়ে আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘কী ধরনের চুক্তি হতে যাচ্ছে, সেটা নিয়ে উদ্বেগ আমরা জানি। উদ্বেগ, বিভিন্ন ধরনের প্রশ্ন। এমনকি আওয়ামী লীগের দলীয় শুভাকাঙ্ক্ষী অনেকে প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করেছেন, প্রতিরক্ষা চুক্তি না করতে। অনুরোধ করেছেন নদীর বিষয়ে ফয়সালা করতে।’

‘আসলে আমাদের একেকটা দেশের প্রতিরক্ষাব্যবস্থা একেক রকম হয়। চীন থেকে পুরোনো সাবমেরিন কিনে, রাশিয়া থেকে ঋণ নিয়ে অস্ত্র কিনে, ভারত থেকে ঋণ নিয়ে অস্ত্র কিনে সেই প্রতিরক্ষাব্যবস্থা তৈরি হয় না। প্রতিরক্ষাব্যবস্থার মূল ভিত্তি হচ্ছে জনগণ। প্রতিরক্ষাব্যবস্থার মূল ভিত্তি হচ্ছে প্রকৃতি।’

সুন্দরবনকে ধ্বংসের কোনো প্রকল্প হাতে না নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব বলেন, ‘আজকে বাংলাদেশের প্রাকৃতিকভাবে আমাদের প্রতিরক্ষাব্যবস্থার প্রধান জায়গা হচ্ছে সুন্দরবন। আমাদের প্রতিরক্ষাব্যবস্থার প্রধান ভিত্তি হচ্ছে আমাদের নদী। এই নদীর ওপর দাঁড়িয়ে আছে বাংলাদেশের ভূমি। এই নদীর ওপর দাঁড়িয়ে আছে বাংলাদেশের সুন্দরবন।’

‘সেই সুন্দরবনবিনাশী প্রকল্প একদিকে করে, নদীবিনাশী বিভিন্ন ধরনের চুক্তির মধ্যে মাথা সমর্পণ করে তারপরে প্রতিরক্ষা চুক্তির কথা বলা, এর চাইতে প্রতারণা, প্রহসন আর কিছু হতে পারে না।’

প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘আজকে আমরা এখান থেকেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বলি যে, আপনার অস্ত্র কেনার প্রতিরক্ষা চুক্তির দরকার নাই। আপনি আমাদের যে প্রতিরক্ষাব্যবস্থা সুন্দরবন, সেই সুন্দরবনকে রক্ষার জন্য রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়ে দিল্লি থেকে ফিরে আসেন। তাহলে সেটাই হবে বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা রক্ষার জন্য সবচাইতে বড় চুক্তি।’

‘…ভারতকে জানান, আন্তর্জাতিক পানি কনভেশন অনুযায়ী, কোনো নদীর ওপর অন্য কোনো দেশ কোনো বাধা দিতে পারে না। নদীর পানিপ্রবাহ অবারিত থাকবে। নদীর পানিপ্রবাহ, তার ওপরে বাধা দেওয়াটা আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন। সেটা আপনি ভারতকে জানিয়ে আসেন।’

জঙ্গিবাদ প্রসঙ্গে আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘যে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সরকার কথা বলছে, সেই মতাদর্শ তো সরকার নিজেই ধারণ করছে। জঙ্গিবাদী মতাদর্শ দিয়ে তো জঙ্গিবাদ দমন করা যায় না। সেই জন্য আজকে আমাদের কাজ হচ্ছে প্রশ্ন করা, আমাদের কাজ হচ্ছে বিশ্লেষণ করা।’

সংগঠনের সভাপতি আবদুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) কেন্দ্রীয় নেতা রাজেকুজ্জামান রতন, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের আহ্বায়ক রফিউর রাব্বি প্রমুখ।



মন্তব্য চালু নেই