বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ১৮ হাজার ৫৪০ কোটি টাকা বরাদ্দ

২০১৫-২০১৬ অর্থবছরে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে সব মিলিয়ে ১৮ হাজার ৫৪০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। চলতি বছর এ খাতকে অগ্রাধিকার দিয়ে গত বছরের তুলনায় ৭ হাজার কোটি টাকা বেশি বরাদ্দ রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার বিকেলে দশম জাতীয় সংসদের দ্বিতীয় বাজেট উপস্থাপনকালে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বিুদ্যৎ ও জ্বালানি খাতের জন্য এ প্রস্তাব দেন।

উল্লেখ্য, গত অর্থবছরের (২০১৪-২০১৫) বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে বরাদ্দ ছিল ১১ হাজার ৫৪০ কোটি টাকা। পরে সংশোধিত বাজেটে এর পরিমাণ দাঁড়ায় ৯ হাজার ৩৩৯ কোটি টাকা।

অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বাজেট উপস্থাপনকালে বলেন, ‘বিদ্যুতের চাহিদা ও যোগানের মধ্যে সমন্বয় সাধন ছিল আমাদের সরকারের প্রধান অঙ্গীকার। আর এ অঙ্গীকার বাস্তবায়নে আমরা ব্যপক সফলতা অর্জন করেছি। বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ২০০৯ সালরে ৪ হাজার ৯৪২ মেগাওয়াট থেকে ১৩ হাজার ৬৭৫ মেগাওয়াটে আমরা উন্নীত করেছি। জ্বালানি খাতেও উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। বর্তমানে দেশের ২০টি গ্যাসক্ষেত্র হতে দৈনিক ২ হাজার ৭০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উৎপাদন করা সম্ভব হচ্ছে।’

বিদ্যুৎ সমস্যা এখন অনেকটাই দূর হয়েছে। এখন দীর্ঘমেয়াদি ও টেকসই সমাধানের লক্ষ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘২০১৫ সালের পর কয়লাকে মূল জ্বালানি হিসেবে বিবেচনায় নিয়ে বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন পরিকল্পনা চূড়ান্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে রামপালে ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, মাতারবাড়িতে ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট, মহেশখালীতে প্রতিটি ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট হিসেবে ৪ হাজার ৮০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার চারটি এবং পটুয়াখালীর পায়রায় ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতার একটি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন। একই সঙ্গে সরকারি ও বেসরকারিখাতে ১ হাজার ৪১১ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের জন্যও চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়েছে। এ ছাড়া পারমাণবিক শক্তি হতে ২০২২ সালের মধ্যে ২ হাজার মেগাওয়াট এবং ২০৩০ সালের মধ্যে ৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।’

বিদ্যুৎ আমদানি প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘২০৩০ সালের মধ্যে প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে ৬ হাজার ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।’

এ ছাড়া ২০২০ সালের মধ্যে নবায়নযোগ্য জ্বালানি হতে ২ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যে Sustainable & Renewable Energy Development Authority (SREDA) গঠন করা হয়েছে। গ্রহণ করেছি ৫০০ মেগাওয়াট সৌর বিদ্যুৎ উন্নয়ন কর্মসূচি।

বাজেট উপস্থাপনকালে সঞ্চালন লাইন পসেঙ্গ অর্থমন্ত্রী বলেন, গত ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রায় ৩ লাখ ৩১ হাজার কিলোমিটার বিতরণ লাইন নির্মাণের মাধ্যমে ১ কোটি ৬২ লাখ গ্রাহককে বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদান করা হয়েছে। আমরা ১০ হাজার কিলোমিটার নতুন সঞ্চালন লাইন এবং ১ লাখ ৫০ হাজার কিলোমিটার নতুন বিতরণ লাইন নির্মাণ করব।

জ্বলানি ও এলএনজি প্রসঙ্গে আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, ‘বাপেক্সকে অতীতের আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে কারিগরীভাবে অধিক শক্তিশালী করা হয়েছে। ভূতাত্ত্বিক জরিপ পরিচালনা এবং উৎপাদন বন্টন চুক্তি (পিএসসি) স্বাক্ষরের কাজ অব্যাহত রেখেছি। উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি করা হয়েছে। এলএনজি টার্মিনাল স্থাপনসহ এলএনজি আমদানির কার্যক্রমও চলমান আছে।



মন্তব্য চালু নেই